• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঐক্যফ্রন্ট ইস্যুতে ক্ষুব্ধ ২০ দল


বিশেষ প্রতিনিধি এপ্রিল ৯, ২০১৯, ১১:১৯ এএম
ঐক্যফ্রন্ট ইস্যুতে ক্ষুব্ধ ২০ দল

ঢাকা : জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রশ্নে বিএনপির ওপর চরম ক্ষুব্ধ ২০ দলীয় জোটের শরিকরা। তাদের ধারণা, দীর্ঘদিনের শরিকদের বাদ দিয়ে বিএনপি এখন নতুন জোট ঐক্যফ্রন্টকে নিয়ে ‘মাতামাতি’ করছে। ঐক্যফ্রন্টকে নিয়ে বিএনপির এই ‘মাতামাতি’ পছন্দ করছেন না ২০ দলের নেতারা। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্রমতে, বিএনপি একাদশ জাতীয় সংসদে অংশ নেয় দুই জোটকে সঙ্গে নিয়েই। দীর্ঘদিনের জোট ২০ দলকে হাতে রেখে গত বছরের অক্টোবরে গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনকে আহ্বায়ক করে পাঁচটি দলের সমন্বয়ে গড়ে ওঠে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। নির্বাচনেও এই নতুন জোটের নামেই বিএনপি ও ২০ দল অংশ নেয়। তবে ২০ দলকে ৪০টি আসন এবং ঐক্যফ্রন্টকে ১৯টি আসনে মনোনয়ন দেয় বিএনপি। কিন্তু পুরো জোটে বিএনপি পায় ৬টি আসন এবং গণফোরাম পায় ২টি আসন। বিএনপি ছাড়া ২০ দলের অন্য কোনো শরিক দল কোনো আসন থেকে জয় পায়নি।

সম্প্রতি ২০ দলের শরিক লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি অলি আহমদ বলেছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ঐক্যফ্রন্টের অনেক নেতা সরকারের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। কোথায় বসে কত টাকা নিয়েছেন, তাও তার জানা বলে দলীয় কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে বলেন অলি আহমদ। তার এই বক্তব্য বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি করেছে। ২০ দলীয় জোটের অনেক শরিকও ঐক্যফ্রন্টের সমালোচনা করছেন প্রকাশ্যেই।

ঐক্যফ্রন্টের কারণে ২০ দল একটু ঝিমিয়ে পড়েছে বলে উল্লেখ করে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, বিএনপি এখন ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে বেশি ব্যস্ত। ২০ দলের মধ্যে আলোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, এটা বিএনপিকেন্দ্রিক জোট। তারাই ভালো জানে, রাজনৈতিক প্রয়োজনে কখন আলোচনা করবে।

খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদেরও বলেন, বিএনপি এখন ঐক্যফ্রন্টকে নিয়ে বেশি এগোচ্ছে। এই মুহূর্তে ২০ দলের কোনো তৎপরতা নেই। খেলাফত মজলিসের এই নেতা জানান, ২০ দল নামে মাত্র আছে। তারা এখন নিজেদের দল নিয়ে কাজ করছেন।

গত বছরের ৩০ ডিসম্বরের সংসদ নির্বাচনের পর একবারই ২০ দলকে নিয়ে বৈঠক করে বিএনপি। এরপর গতকাল সোমবার রাতে আরেকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অন্যদিকে বিএনপি ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে মানববন্ধন কর্মসূচি, গণশুনানিসহ একাধিক বৈঠক করে।

গত ২২ ফেব্রুয়ারি ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে গণশুনানি হয়। এতে বিএনপি তার দুই জোটের শরিকদের প্রার্থীদের অংশ নিতে আহ্বান জানায়। ২০ দল থেকে মাত্র দুজন প্রার্থী অংশ নেন। এই জোটের প্রধান কয়েকটি দল এই গণশুনানিতে অংশ নেয়নি। সর্বশেষ খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে গণঅনশনে ২০ দলের কয়েকটি শরিক দলের নেতা অংশ নেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ২০ দলের অন্যতম দল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, ‘ঐক্যফ্রন্টও বিএনপিকে নিয়ে নির্বাচন করেছে, ২০ দলও করেছে। বিএনপির ঐক্যফ্রন্টকে নিয়ে অতিরিক্ত মাতামাতি এবং ২০ দলীয় জোটকে এড়িয়ে চলা আমাদের কাছে ভালো লাগেনি।’

তিনি বলেন, এটা দীর্ঘদিনের জোট। বর্তমান পরিস্থিতিতে ২০ দলের মধ্যে সংস্কার হওয়া প্রয়োজন। ২০ দলের মধ্যে পর্যালোচনা করে অনিবন্ধিত ও যাদের তেমন কোনো অবস্থান নেই, তাদের বাদ দিয়ে সংস্কার করা দরকার। তিনি বলেন, এখানে অনেক দল আছে, যারা নামসর্বস্ব। আবার অনেক দল আছে, যারা ঐক্যফ্রন্টের অন্য দলগুলোর চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী অবস্থানে আছে।

অবশ্য বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্প্রতি দুটি কর্মসূচিতে বলেছেন, ২০ দল ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে কোনো সমস্যা নেই।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২০ দল ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করলেও ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হওয়ার পর থেকেই ২০ দলের শরিকদের মধ্যে নতুন জোট নিয়ে ক্ষোভ ছিল। বিএনপি নতুন জোটকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে, এমন অভিযোগ তখন থেকেই।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!