• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ঐক্যফ্রন্টে যুক্ত হওয়ার কারণেই হামলা


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ৩, ২০১৮, ০৯:৩৮ পিএম
ঐক্যফ্রন্টে যুক্ত হওয়ার কারণেই হামলা

ঢাকা : গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, তিনি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যুক্ত হওয়ার কারণেই পরিকল্পিতভাবে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে হামলা এবং তার বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা হচ্ছে।

শনিবার (৩ নভেম্বর) ধানমণ্ডিতে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমি একজন স্বাধীন নাগরিক হিসাবে যুক্তফ্রন্টের সাথে যুক্ত। আমাকে শাস্তি দিতে পারছে না বলেই, এই কেন্দ্রটার উপরে, প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি করেছে তারা। এটা একটা প্ল্যান।’

টেলিভিশন অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধানকে নিয়ে এক ভুল বক্তব্যের পর জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা হয়। পরে তার বিরুদ্ধে সাভারে জমি দখল, চুরিসহ বিভিন্ন অভিযোগে বেশ কয়েকটি মামলা হয়। এরপর তিনটি মামলার বাদীপক্ষের লোকজন সাভারের আশুলিয়ায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে গত ২৭ অক্টোবর হামলা-ভাঙচুর চালিয়ে একটি ভবন ও কিছু জমি দখল করে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা।

এর মধ্যে ২৩ অক্টোবর সাভারে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের দু’টি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে মোট ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। ওইসব হামলা-মামলা নিয়ে রোববারের এই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র; যেখানে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ট্রাস্টের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক আলতাফুন্নেসা।

লিখিত বক্তব্যে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বের গঠিত ঐক্যফ্রন্টে জাফরুল্লাহ চৌধুরী যোগ দেওয়ায় ‘রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের’ সহায়তায় এসব হামলা-মামলা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।  আলতাফুন্নেসা বলেন, ‘ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগদানের কারণে তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপর আক্রমণ এবং হামলা-মামলা হচ্ছে।

‘ডা. জাফরুলাহ চৌধুরী ১০ বছর পূর্বেই অবসর গ্রহণ করে সাভার গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে ঢাকা চলে গেছেন। তিনি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে নৈমিত্তিক কোনো কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত নন। তিনি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে সাতজনের একজন ট্রাস্টি মাত্র। ট্রাস্টি বোর্ডের পদটি অবৈতনিক।’

রাজনৈতিক অবস্থানের জন্য গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সেখান থেকে সরে দাঁড়াবেন কি না- সাংবাদিকদের প্রশ্নে জাফরুল্লাহ বলেন, ‘আমি কেবল সাতজনের একজন। আর কীভাবে সরে আসব?’ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ঐক্যফ্রন্টের সংলাপে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে হামলার বিষয়টি উঠেছে কি না- এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সেভাবে হয়নি। প্রধানমন্ত্রী সবকিছুই জানেন। আমি কেবল বলেছি, আপনার বাবা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে ৩১ একর জমি দিয়েছেন। আপনি ১৪ একর জমি দিলেও তার দখল পাইনি।’

আরেক প্রশ্নে জাফরুল্লাহ বলেন, ‘চাটুকার যারা, তারা এই হামলার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে বিপদে ফেলেছে। তারা কি তার সুনাম বাড়িয়েছে?’

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে হামলার পর মামলা করতে গেলেও সেই মামলা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক সাইফুল ইসলাম শিশির। তিনি বলেন, ‘আমরা বৃহষ্পতিবার সাভার থানায় তিনটি মামলা ফাইল করেছি। তারা রেকর্ড করেনি। এই পর্যন্ত একটি মামলা হয়েছে। আরও দু’টি হবে। থানায় মামলা না নিলে আমরা আদালতে যেতে বাধ্য হব।’

র‌্যাব অন্যায়ভাবে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে জরিমানা করেছিল বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন জাফরুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘তারা কোথাও কিছু অনিয়ম পায়নি। ডিসকার্ডেড ওষুধ রাখার জায়গায় অভিযান চালিয়ে জরিমানা করেছে। যেগুলো আমরা ধ্বংস করার জন্য রেখেছিলাম।’

দুজন স্বাস্থ্যকর্মীকে ধরে নিয়ে হুমকি দিয়ে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছিল অভিযোগ করে জাফরুল্লাহ বলেন, ‘পরিচালককে ধরেনি। (গণবিশ্ববিদ্যালয়ের) ভাইস চ্যান্সেলর গিয়েছিল, ওনাকে ঢুকতে দেয়নি। দুজন সাধারণ কর্মীকে ধরে বলেছে, সাইন করো, নইলে জেলে যাবা, না হয় মারা যাবা।’

জরিমানার টাকা আদায়ের জন্য চাপ দেওয়া হয়েছিল অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘তারা ইচ্ছা হল, আমাদেরকে জরিমানা করে দিল। বলেছে, টাকা যদি এখন জমা না দাও, তাহলে ধরে নিয়ে যাব। আমরা যদি ২৪ ঘণ্টা সময় পেতাম, হাই কোর্টে যেতাম।’

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!