• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

‘ওরা আরো খারাপ’ কিছুই জানেন না যুবলীগ চেয়ারম্যান


নিজস্ব প্রতিবেদক সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৯, ০৯:১৪ এএম
‘ওরা আরো খারাপ’ কিছুই জানেন না যুবলীগ চেয়ারম্যান

ঢাকা : গেল সপ্তাহে গণভবনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের দুটি বৈঠকে যুবলীগের কয়েক নেতাকর্মীর নামে একাধিক অভিযোগ উঠলে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের সদ্য অব্যাহতি পাওয়া সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর সঙ্গে তুলনা করে যুবলীগের কিছু নেতার উদ্দেশে বলেন, ‘এরা আরও খারাপ।’ তবে এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী।

গণমাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষাতকারে ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, যুবলীগের কোনো নেতাকর্মীর বিষয়ে কোনো অভিযোগ উঠলে নেত্রী আমাকে জানাতেন। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ামাত্রই তদন্তসাপেক্ষে আমি সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব। কিন্তু এখনো পর্যন্ত নেত্রী আমাকে কিছুই জানাননি। তা হলে আমি কীসের ভিত্তিতে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।

সম্প্রতি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে যুবলীগের কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। যুবলীগ নেতাদের ক্যাসিনো ব্যবসা, অস্ত্রবাজি, চাঁদাবাজির প্রসঙ্গটি সামনে এনে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা যুবলীগের নিয়ন্ত্রক বলে পরিচিত আওয়ামী লীগের এক সভাপতিম-লীর সদস্যের উদ্দেশে বলেন, আপনারা যারা ক্যাডার লালন-পালন করেন এগুলো বন্ধ করুন। আমি কোনো অস্ত্রবাজ-চাঁদাবাজকে দলে চাই না।

এ বৈঠকের বরাত দিয়ে সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিষয়ে জানতে চাইলে যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, এটি আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক ছিল। এই বৈঠকে যৌক্তিক কারণেই আমি অনুপস্থিত ছিলাম। কাজেই কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে সে বিষয়ে আমি অবগত নই। তবে আমি বিশ্বাস করি, আওয়ামী যুবলীগের কোনো নেতার কর্মকাণ্ডে যদি প্রধানমন্ত্রী ক্ষুব্ধ হন সে ব্যাপারে তিনি নিশ্চয় আমাকে জানাবেন এবং তার নির্দেশনা অনুযায়ী পদক্ষেপ নেব। কিন্তু এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে কোনো নির্দেশনা পাইনি। শুধু দুয়েকটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কোনো মন্তব্য করা আমার জন্য সমীচীন নয়।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ বিষয়ে বলেন, যেসব নেতার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ প্রধানমন্ত্রীর কাছে গেছে, তারা কেউ-ই ছাড় পাবে না। তবে সবার বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। অনেকের বিরুদ্ধে প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। নেতাকর্মীদের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব সংস্থার পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদনও দলীয় প্রধানের কাছে রয়েছে বলেও জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, গত ১৪ সেপ্টেম্বর শনিবার আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনে দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় যুবলীগ প্রসঙ্গে আলোচনার অবতারণা করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির নানক। বৈঠকের এজেন্ডায় উল্লেখ থাকা শেখ হাসিনার জন্মদিন পালনের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি বলেন, দল সাড়ম্বরে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার জন্মদিন পালন করতে চায়।

কিন্তু শেখ হাসিনা ঘটা করে জন্মদিন পালনে অনীহা দেখালে নানক উদাহরণ হিসেবে যুবলীগের শেখ হাসিনার জন্মদিন পালন উপলক্ষে মাসব্যাপী কর্মসূচির কথা উল্লেখ করেন।

পরে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও এ কথা উল্লেখ করে বলেন, শনিবার যুবলীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল এবং আলোচনা সভা করেছে। তিনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চাঁদাবাজির টাকা বৈধ করতে মিলাদ মাহফিল করা হয়েছে। নিজের জন্য এমন মিলাদ মাহফিল তিনি চান না। এরপর যুবলীগ নিয়ে তার কাছে আসা নানা অভিযোগ তুলে ধরেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুবলীগের ঢাকা মহানগরের একজন নেতা (ঢাকা মহানগর যুবলীগের একটি অংশের সভাপতি) ক্রসফায়ার থেকে বেঁচে গেছে। আরেকজন (মহানগর দক্ষিণের একজন সাংগঠনিক সম্পাদক) এখন দিনের বেলায় প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে চলেন। সদলবলে অস্ত্র নিয়ে ঘোরেন। এসব বন্ধ করতে হবে। যখন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে তখন কেউ অস্ত্র নিয়ে বের হয়নি, অস্ত্র উঁচিয়ে প্রতিবাদ করেনি। যখন দলের দুঃসময় ছিল তখন কেউ অস্ত্র নিয়ে দলের পক্ষে অবস্থান নেয়নি। এখন টানা তিনবার সরকারে আছি। অনেকের অনেক কিছু হয়েছে। কিন্তু আমার সেই দুর্দিনের কর্মীদের অবস্থা একই আছে। যারা অস্ত্রবাজি করেন, যারা ক্যাডার পোষেন, তারা সাবধান হয়ে যান, এসব বন্ধ করুন। তা না হলে, যেভাবে জঙ্গি দমন করা হয়েছে, একইভাবে তাদেরকেও দমন করা হবে।

সোনালীনিউজ/এএস

Wordbridge School
Link copied!