• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ওয়াহিদ ম্যানশনের বেজমেন্টে বিপুল পরিমাণ কেমিক্যাল


নিজস্ব প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৯, ০৭:২৮ পিএম
ওয়াহিদ ম্যানশনের বেজমেন্টে বিপুল পরিমাণ কেমিক্যাল

ঢাকা: পুরান ঢাকার চকবাজারের অগ্নিকাণ্ডে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ভবন ওয়াহেদ ম্যানশনের বেজমেন্টে বিপুল পরিমাণ কেমিক্যালের সন্ধান পাওয়া গেছে। এলাকার অনেকেই এই গোডাউনটির বিষয়ে জানতেন না।

বেজমেন্টে আগুন ছড়িয়ে পড়লে আশপাশে আরো কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা।

শুক্রবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিন ভবনটিতে গিয়ে দেখা গেল এর চারতলার পুরোটাই পুড়ে ছাই। দ্বিতীয় তলায় ছিল বিভিন্ন কেমিক্যাল আর প্লাস্টিকের দানার গোডাউন। তবে ফায়ার সার্ভিসের তৎপরতার কারণে আগুন বেজমেন্ট পর্যন্ত ছড়ায়নি।

ফায়ার সার্ভিসের একজন কর্মকর্তা জানান, এটি পার্কিংয়ের জায়গা, তবে এখানে বিভিন্ন লিকুইড কেমিক্যালে ভর্তি ড্রাম ও বস্তা উদ্ধার করা হয়েছে। যদি এখানে কোনোভাবে আগুন ছড়িয়ে যেত তাহলে পরিণতি আরো ভয়াবহ হতো।

আব্দুর রাজ্জাক সাই নামে স্থানীয় একব্যক্তি বলেন, আমরা বাইরে থেকে দেখতাম ভবনে টেইলার্স, ফার্মেসি, হোটেল আর ডেকোরেটরের দোকান। মাঝে মাঝে কিছু কেমিক্যাল ভেতরে নিতে দেখতাম। কিন্তু বেজমেন্টের অবস্থা যে এই তা কখনো ভাবতে পারিনি।

প্রায়ই কনটেইনার ভর্তি কেমিক্যাল এনে গোডাউনে তোলা হতো বলে জানান তিনি। তবে সেই গোডাউনের মালিকের বিস্তারিত পরিচয় তুলে ধরতে পারেননি তারা।

ঘটনাস্থলে এসে বাংলাদেশ বিস্ফোরক পরিদপ্তরের প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক শামসুল আলম জানান, নিমতলী অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে ওই এলাকায় কেমিক্যাল ব্যবসার জন্য একটি লাইসেন্সও দেয়া হয়নি। ওই এলাকায় বিস্ফোরক পরিদপ্তরের লাইসেন্সধারী কোনো গুদামও নেই। যে ভবনটিতে আগুন লেগেছিল সেটিতেও রাসায়নিক দ্রব্য ও দাহ্য পদার্থ রাখার অনুমতি ছিল না।

এদিকে, বেজমেন্টে কী কী ধরনের কেমিক্যাল ছিল তা তদন্ত করে দেখছে বিস্ফোরক অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন তদন্ত সংস্থা।

বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ওয়াহেদ ম্যানশনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট অনেক চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় শুক্রবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকাল পর্যন্ত মোট ৬৭ জন নিহত হবার খবর পাওয়া গেছে। আহত ও দগ্ধ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৪১ জন। এদের মধ্যে দুইজনকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র-আইসিইউতে রাখা হয়েছে। বাকিদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।

অগ্নিকাণ্ডের কারণ উদঘাটনসহ দুর্ঘটনার সার্বিক বিষয় তদন্তের জন্য সুরক্ষাসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (অগ্নি অনুবিভাগ) প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তীকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে রিপোর্ট প্রদান করতে বলা হয়েছে। দোষীদের চিহ্নিত করতে ১১ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। এ ছাড়া অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধান, প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ এবং অগ্নিদুর্ঘটনা পুনরাবৃত্তিরোধে সুপারিশ প্রদানের জন্য শিল্প মন্ত্রণালয় ১২ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

সোনালীনিউজ/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!