• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কঙ্কালে পরিণত হচ্ছে ছেলে, ফেলে চলে গেছে বাবা-মা!


ঝিনাইদহ প্রতিনিধি মে ২১, ২০১৯, ১০:২৫ পিএম
কঙ্কালে পরিণত হচ্ছে ছেলে, ফেলে চলে গেছে বাবা-মা!

ঝিনাইদহ: অজানা রোগে আক্রান্ত চার বছর বয়সী শিশু আবিরের শরীরটা দিনদিন তাকে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় সন্তানকে ফেলে পালিয়েছে তার বাবা-মা। অথচ শিশুটিকে বাঁচাতে তার নানা-নানি মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। কিন্তু কোনো সাড়া পাচ্ছেন না।

আবির ও আপন দুই ভাই। বাবা-মায়ের কাছে আদরে আছে ছোট ভাই আপন। কিন্তু আবিরের কপালে জোটেনি বাবা-মায়ের আদর স্নেহ।

আবিরের জন্মের আট মাস বয়সে টিকা দেয়ার পর থেকে খিঁচুনি আর জ্বর শুরু হয়। এরপর ধিরে ধিরে শরীর শুকিয়ে যেতে শুরু করে। শরীরের সবগুলো হাড় বেরিয়ে আসা শুরু করে। শিরাগুলো টান ধরেছে ফলে স্বাভাবিকভাবে হাত-পা নড়াচড়া করতে পারে না আবির। দেখতে অনেকটা বৃদ্ধ মানুষের মতো।

অসুস্থ হওয়ার পর আবিরের বাব-মা ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেরার কাশিপুর গ্রামে নানা- নানির কাছে ফেলে গেছে আবিরকে। এরপর থেকে আবিরের আর খোঁজ রাখেনি তার বাবা-মা। দরিদ্র দিনমজুর নানা লিয়াকত আলী ও নানি মঞ্জুরা বেগম এখন আবিরের একমাত্র ভরসা।

নানি মঞ্জুরা বেগম জানায়, পাঁচ বছর আগে যশোর সদর উপজেলার সাতমাইল এলাকার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের আলাউদ্দীনের ছেলে দিনমজুর আল-আমিনের সঙ্গে তাদের মেয়ে রতনা খাতুনের বিয়ে হয়। এরপর এক বছরের মাথায় আবিররের জন্ম হয়। জন্মের পর সুস্থই ছিল আবির। কিন্তু জন্মের আট মাস পর স্থানীয় টিকাদান কেন্দ্রে নিয়ে টিকা দেয়ার পর থেকে প্রচণ্ড খিঁচুনি শুরু হয়। সঙ্গে অনেক জ্বর। এরপর বিভিন্ন ডাক্তারের কাছে নেয়া হয়েছে কিন্তু কোনো উন্নতি হয়নি। পরে খিঁচুনি কমলেও শরীর শুকিয়ে যেতে থাকে তার।

তিনি আরও জানান, অসুস্থ হওয়ার পর মেয়ে-জামাই আবিরকে আমাদের কাছে রেখে চলে যায়। এরপর থেকেই আমাদের কাছে রয়েছে। পরে মেয়ের ঘরে আবার একটা সন্তান আসে। অথচ বড় ছেলের কোনো খোঁজখবর রাখে না তারা।

প্রতিবেশীরা জানান, তার চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। যা দিনমজুর নানা লিয়াকত আলীর পক্ষে কোনোভাবেই জোগাড় করা সম্ভব না। তাই শিশুটিকে বাঁচাতে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসতে হবে।

নানা লিয়াকত আলী বলেন, নাতির চেহারা অস্বাভাবিক হওয়ায় কেউ তার কাছে যেতে চায় না। আমরা দুজনই তার দেখভাল করি। স্থানীয় অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি কিন্তু অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। দিনে দিনে শুকিয়ে যাচ্ছে। এখন তার খাবার ও ওষুধ কেনা এবং ডাক্তার দেখানোর টাকা জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

নানা লিয়াকত আলী সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেন। আবিরের বিষয়ে কথা বলতে যোগাযোগ করা যাবে ০১৭৩৪ ৬৪৪৪৯৯ নম্বরে।

আবিরের বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. অপূর্ব কুমার সাহা বলেন, আগে কখনও এমন রোগ দেখিনি। এটা কি ধরনের রোগ বলতে পারবো না। পরীক্ষা নীরিক্ষা করে দেখতে হবে কি কারণে এমন হয়েছে? তবে তিনি জানান, টিকা দেয়ার জন্য এমনটা হয়নি।

সোনালীনিউজ/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!