• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
নতুন গাড়ি কিনতে পরিবেশের ঝুঁকি বিবেচনায় কর ধার্যের চিন্তা

কর বাড়বে ধাপে ধাপে


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ২৫, ২০১৯, ০৩:৪৩ পিএম
কর বাড়বে ধাপে ধাপে

ঢাকা : মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ছে। বাড়ছে বিলাসী ভোগ্যপণ্য কেনার তালিকাও। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণ নিয়ে হলেও ব্যক্তিগত গাড়ি কিনছে মানুষ। রাইড শেয়ারিং কোম্পানির প্রসার ঘটেছে। সরকারি কর্মকর্তা উপসচিব হিসেবে পদোন্নতি পেলেই পাচ্ছেন গাড়ি কেনার জন্য স্বল্প সুদে ঋণ। গাড়ির বাজার ও চাহিদা দুটিই বাড়ছে।

তবে ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা বাড়ায় ভোগান্তি বাড়ছে সাধারণ মানুষের। বিশেষ করে রাজধানীতে অসহনীয় যানজটে প্রতিদিন কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে।

পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে, এখন রাজধানীতে হেঁটেও অনেক সময় গাড়ির আগে পৌঁছানো যায়। যানজটে চিড়েচ্যাপ্টা নগরজীবনে সাধারণ মানুষ চান, ব্যক্তিগত গাড়িতে উচ্চ কর। তবে উচ্চ কর আরোপ করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে, পরিবেশের ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে গাড়িতে কর আরোপ করার চিন্তা করছে সরকার।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বিলাসবহুল গাড়ি আমদানিতে ৮০০ শতাংশ কর আরোপ করা হয়। তবে জাতীয় সংসদ সদস্যরা শুল্কবিহীনভাবে বিলাসবহুল গাড়ি আমদানি করতে পারেন।

জানা গেছে, একটি শ্রেণির দাবি রয়েছে, গাড়ি আমদানিতে কর কমানোর। তবে চলতি অর্থবছরেও সরকার গাড়ি আমদানিতে কর বাড়িয়েছে। একই সঙ্গে রাজধানীতে সাধারণ মানুষের চলাচলে গণপরিবহন ব্যবস্থার আধুনিকায়ন করা হচ্ছে।

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন ও সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো একসঙ্গে ঢাকার গণপরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নে কাজ করছে।

এ জন্য দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকনকে প্রধান করে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটিও গঠন করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী সামনে রেখে মুজিববর্ষে ঢাকার পরিবহন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা আনার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।   

সূত্র বলছে, পরিবেশ, বন ও জলবায়ুবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয় পরিবেশ ঝুঁকি বিবেচনায় গাড়ি আমদানিতে কীভাবে কর আরোপ করা যায় সেটি নিয়ে কাজ শুরু করেছে।

আসছে ডিসেম্বরে এ সংক্রান্ত একটি সুপারিশ উপস্থাপন করা হতে পারে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের কাছে। ঢাকার যানজটে বিরক্ত অর্থমন্ত্রীও এতে সায় দেবেন বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। যানজটে সময় নষ্ট হয় বলে অর্থমন্ত্রী সচিবালয়ে অফিস করতে যান না। তিনি রাজধানীর শেরে-বাংলানগরে পরিকল্পনা কমিশন চত্বরেই অফিস করেন।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সুপারিশে যে কোনো ধরনের গাড়ি আমদানিতে আরো শুল্ক বাড়ানোর সুপারিশ থাকবে। ফলে আসন্ন বাজেটেও বিভিন্ন মানের ব্যক্তিগত গাড়িতে করের পরিমাণ বাড়তে পারে। তবে পুরনো গাড়ি থেকে নতুন গাড়ি আমদানিতে কর বৃদ্ধির হার তুলনামূলকভাবে কিছুটা কম হবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কিস্তিতে গাড়ি বেচাকেনার সুবিধায় এখন তুলনামূলকভাবে স্বল্প আয়ের মানুষও গাড়ির দিকে ঝুঁকছেন। অবশ্য মানুষ এখন নতুন গাড়ির দিকে যাচ্ছেন। গত এক বছরে চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্রবন্দর দিয়ে পুরানো গাড়ি আমদানি কমেছে সাড়ে ৯ হাজারটি।
অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে গাড়ি আমদানি কমেছে প্রায় ২৯ শতাংশ।

গাড়ি ব্যবসায়ীরা জানান, নির্বাচনের আগে-পরে এক ধরনের অনিশ্চয়তা থেকে গাড়ির চাহিদা কমে যায়। এ কারণে গত অর্থবছর নির্বাচনের বছর হওয়ায় গাড়ি আমদানি কমেছে। তবে চলতি অর্থবছরে গাড়ি আমদানি বাড়বে।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন জানন, উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গ আমাদের পরিবেশগত ঝুঁকির বিষয়টি এখন গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করার সময় এসেছে। আগামী দিনের জন্য সুন্দর বাংলাদেশ আমাদের নতুন প্রজন্মকে উপহার দিতে হবে। তাই আমরা অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটি সুপারিশ দিতে যাচ্ছি। যাতে পরিবেশগত ঝুঁকির স্তর বিবেচনা করে গাড়ি বেচাকেনায় শুল্প আরোপ করার প্রস্তাব থাকবে।

হিসাবমতে, ২০০৪-০৫ থেকে ২০০৭-০৮ অর্থবছর পর্যন্ত একটানা চার বছর গাড়ি আমদানিতে ভালো প্রবৃদ্ধি ছিল। এরপর ২০০৮-০৯ থেকে ২০১১-১২ পর্যন্ত চার বছর একটানা আমদানি কমেছে। এরপরের পাঁচ বছর আবার গাড়ি আমদানি বেড়েছে গড়ে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!