• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

করোনা ভাইরাস ঝুঁকিতে বাংলাদেশ, চীনে মৃতের বেড়ে ৮০


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ২৭, ২০২০, ০৯:৫৮ এএম
করোনা ভাইরাস ঝুঁকিতে বাংলাদেশ, চীনে মৃতের বেড়ে ৮০

ঢাকা : চীনে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসে এখন পর্যন্ত ৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া আরও ৩ হাজার মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। 

অপরদিকে, করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ক্ষমতা আরও প্রবল হচ্ছে এবং সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন।

গত ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটে। তারপর থেকেই চীনের বিভিন্ন শহরে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। একটি সামুদ্রিক বাজার থেকেই ওই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
 
উহান থেকে এই ভাইরাসের বিস্তার রোধ করতে গণপরিবহন, বিমান চলাচল ও রেল সেবা বাতিল করা হয়েছে। চীনের অন্যান্য শহরে ভ্রমণেও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য কমিশনের কর্মকর্তারা সোমবার জানিয়েছেন, হুবেই প্রদেশে নিহতের সংখ্যা ৫৬ থেকে ৭৬ এ দাঁড়িয়েছে। অন্যান্য শহরে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে।

চীনের গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, এই ভাইরাসে আক্রান্ত ৩ শতাধিক মানুষ মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। চীনের হুবেই প্রদেশে ৫০ হাজারের বেশি মেডিকেল স্টাফ এই ভাইরাস প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ এবং চিকিৎসায় অংশ নিয়েছেন।

কমপক্ষে দুই হাজার শয্যাবিশিষ্ট দুটি নতুন অস্থায়ী হাসপাতাল নির্মাণ করা হচ্ছে। মাস্ক এবং সুরক্ষিত পোশাক উৎপাদনে রীতিমতো হিমসিম খাচ্ছে বিভিন্ন কোম্পানি।

এদিকে চীন থেকে আসা ২ হাজার জনকে পরীক্ষা করে কারো শরীরে এখনও করোনাভাইরাস শনাক্ত করা না গেলেও ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ। এজন্য গত ২১ জানুয়ারি চীন থেকে আসা বিমানযাত্রীদের পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ সরকার।

রোববার পর্যন্ত ২ হাজার ১৯০ জনকে পরীক্ষা করা হলেও কারও শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

এদিকে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেছেন, চীন থেকে জ্বর না নিয়ে এলেও আসার ১৪ দিনের মধ্যে যদি কারও জ্বর আসে, তবে যেন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।

বিমানবন্দরে কর্মরত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. শাহারিয়ার সাজ্জাদ জানান, দক্ষিণ এশিয়ার নেপাল ও পাকিস্তানে নতুন ধরনের এই ভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার খবর গণমাধ্যমে এসেছে। আক্রান্ত সন্দেহে ভারতের কেরালা ও মহারাষ্ট্রে শতাধিক মানুষকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, ফ্রান্স, মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ায়ও আক্রান্ত ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া গেছে।

চায়না ইস্টার্ন, চায়না সাউদার্ন, ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স চীন থেকে সরাসরি ঢাকায় যাত্রী পরিবহন করে। আর ড্রাগন এয়ারলাইন্স সরাসরি যাত্রী পরিবহন করে হংকং থেকে। এই চারটি এয়ারলাইন্সের ২ হাজার ১৯০ জন যাত্রীর শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে বলে।

তিনি বলেন, “তবে আমরা এখন পর্যন্ত কারও শরীরে এ রোগের কোনো লক্ষণ পাইনি।” চীন থেকে আসা বিমানযাত্রীদের বিমানবন্দরে থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। পাশাপাশি তাদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্যের একটি কার্ড পূরণ করতে হচ্ছে।

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক এ এইচ এম তৌহিদ-উল-আহসান জানিয়েছিলেন, থার্মাল স্ক্যানারে পরীক্ষায় কোনো যাত্রীর শরীরের তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি পাওয়া গেলে তাকে প্রথমে বিমানবন্দরের পর্যবেক্ষণ কক্ষে রাখা হবে। পরে তাকে প্রয়োজনে কুর্মিটোলা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হবে। ভাইরাস সংক্রমণের বিভিন্ন লক্ষণ সম্পর্কে বিমানবন্দরে ডিজিটাল ফরমেটে তথ্য দেওয়া হয়েছে।

গত ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে করোনাভাইরাস পরিবারের নতুন এই ভাইরাসটির প্রথম দেখা মেলে। চীনা কর্মকর্তারা বলছেন, উহানের বন্যপ্রাণী ও সামুদ্রিক খাবারের বাজারে কোনো দূষিত প্রাণী থেকেই ভাইরাসটি ছড়িয়েছে। এতে চীনে এখন পর্যন্ত ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২০০০ ছাড়িয়েছে।

সোনালীনিউজ/এএস

Wordbridge School
Link copied!