• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে বিমানবন্দরে সতর্কতা


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ২২, ২০২০, ০১:০৩ পিএম
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে বিমানবন্দরে সতর্কতা

ঢাকা : করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে বাংলাদেশের বিমানবন্দরগুলোতে বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ইতোমধ্যে চীনে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটিতে গত দুদিনে নতুন করে আরো ১৩৯ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।  

গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে প্রথম সংক্রমণের পর দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ ভাইরাসটিকে করোনা ভাইরাস বলে শনাক্ত করেছিল। ভাইরাসটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় সিঙ্গাপুর, হংকং, সানফ্রান্সিসকো, লসঅ্যাঞ্জেলস এবং নিউইয়র্কে চীন থেকে আগত ফ্লাইটগুলোর যাত্রীদের স্ক্রিনিং করা হচ্ছিল।

এবার ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চীন থেকে আসা যাত্রীদের স্ক্রিনিং (পরীক্ষা) করা হচ্ছে। যদিও চট্টগ্রাম থেকে চীনে সরাসরি কোনো ফ্লাইট নেই। তবে  মধ্যপ্রাচ্য, দুবাই, ভারত হয়ে কানেকটিং ফ্লাইটে চীন থেকে অনেকে চট্টগ্রামে আসেন।

ঢাকার রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট বা আইইডিসিআর জানায়, তারা শাহজালাল বিমানবন্দরে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করছে, কারণ চীন থেকে আসা সব বিমান এ বিমানবন্দর দিয়েই ওঠানামা করে। অন্যান্য বন্দরেও চিঠি পাঠানো হয়েছে। আইইডিসিআর পরিচালক ডা. সেবরিনা বলেন, বাংলাদেশে এখনো করোনা ভাইরাসে কারো আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। তবে স্বাস্থ্যকর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

বিমানবন্দরে স্থাপিত হেলথ ডেস্কে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীদের পাঠানো হয়েছে। যেসব ফ্লাইট চীন থেকে আসছে সেসব ফ্লাইটের যাত্রীদের স্ক্যানিং করা হচ্ছে। আর যারা শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা- জ্বর, কাশি, গলাব্যথা এসব নিয়ে আসছেন তাদের পরীক্ষা করা হচ্ছে। আইইডিসিআর চারটি হটলাইনও (০১৯৩৭১১০০১১, ০১৯৩৭০০০০১১, ১৯২৭৭১১৭৮৪ এবং ০১৯২৭৭১১৭৮৫) খুলেছে। উল্লিখিত লক্ষ্মণগুলো কারো মধ্যে দেখা গেলে এসব হটলাইনে ফোন করে জানাতে বলা হয়েছে। কারো শরীরে এর কোনো লক্ষণ দেখা গেলে তারা নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে দেখবেন।  

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সেইসঙ্গে বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন, এয়ারলাইন্সগুলো এবং এভিয়েশনে কাজ করা সবাইকে সচেতনও করছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। বিমানবন্দরে যে এলইডি মনিটর রয়েছে সেখানে রোগের লক্ষণগুলো জানানো হয়েছে এবং এবং কারো যদি এ লক্ষণগুলো থাকে তাকে হেলথ ডেস্কে যোগাযোগ করতে বলা হচ্ছে।

এদিকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক উইং কমান্ডার সরওয়ার-ই-জামান বলেন, সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ চীন থেকে আসা যাত্রীদের স্ক্রিনিং করছে। যদি কানেকটিং ফ্লাইটের কোনো যাত্রীর করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ রয়েছে কি না সেটির ওপর নজর রাখছেন চিকিৎসকরা। চীন থেকে আসা যাত্রীদের বিষয়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের জানাতে ইমিগ্রেশনে বলা হয়েছে।

তিনি বলেন, গত শুক্রবার থেকে স্ক্রিনিং কার্যক্রম শুরু হয়েছে শাহ আমানতে। চট্টগ্রামের বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তার নেতৃত্বে সতর্কতা ও জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে বিমানবন্দর এলাকায়। পালাক্রমে চিকিৎসক ও মেডিকেল টিম কাজ করছে। এখনো পর্যন্ত এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ আছে এমন যাত্রী পাওয়া যায়নি।   

উল্লেখ্য, করোনা ভাইরাস শ্বাসতন্ত্রের রোগ। প্রধান লক্ষণ জ্বর। এর সঙ্গে সর্দি, কাশি, গলাব্যথা ইত্যাদি উপসর্গ থাকে। গবেষকরা বলেন, যারা চীনের উহান শহরে মাছের বাজারে গিয়েছিলেন তারা এ ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন। কিন্তু এমন কয়েকজন রোগী পাওয়া গেছে যারা কোনো মাছের বাজার বা বাজারেই যাননি। অবশ্য এ ভাইরাস সম্পর্কে এখনো খুব বেশি তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না।

ডা. সেবরিনা বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আমাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে এবং তারা আশঙ্কা করছে মানুষ থেকে মানুষে ছড়াতে পারে তবে এখনো এত বৃহৎ পরিসরে ভাবছে না সংস্থাটি। এবং ভাইরাসটা ছোঁয়াচে কিনা সে ব্যাপারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নিশ্চিত করে কিছু বলেনি। যখন শ্বাসতন্ত্রের অসুখ হয় তখন হাঁচি, কাশি থেকে আরেক জন সংক্রমিত হতে পারে এটা ভেবে নিয়েই আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। কারণ যদি একজন থেকে আরেকজনের মধ্যে ছড়ায় তাহলে অতি দ্রুত সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে।

উহানের পর চীনের নতুন নতুন শহরেও করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব হচ্ছে। আক্রান্তদের মধ্যে আছে বেইজিং এবং শেনঝেন শহরের বাসিন্দারাও। এদিকে থাইল্যান্ড এবং জাপানের পর দক্ষিণ কোরিয়া সোমবার জানায়, সেখানেও এ ভাইরাসে সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!