• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

করোনা মোকাবেলায় সরকারের সমন্বয় নেই


নিজস্ব প্রতিবেদক মে ২৫, ২০২০, ০৫:৫২ পিএম
করোনা মোকাবেলায় সরকারের সমন্বয় নেই

ঢাকা : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, করোনা মহামারী প্রতিরোধে সরকারের কর্মকাণ্ডে কোনো সমন্বয় নেই। তারা ব্যর্থ হয়েছে।

সোমবার (২৫ মে) ঈদুল ফিতরের নামাজ শেষে সকালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারতের পর তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, করোনা মোকাবেলায় সরকারের তরফ থেকে যে সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে আমাদের কাছে মনে হয়েছে তা সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না, সমন্বয় ছিল না এবং এখনও নেই। করোনাকে ন্যূনতম প্রতিরোধের একটা কাছাকাছি আনার চেষ্টা করা থেকেও তারা (সরকার) ব্যর্থ হয়েছে।

‘আমরা এই কথা বলি না যে, এটা তারা পুরোটাই পারবেন। কারণ পুরোটা পারা সম্ভব নয়, নতুন একটা জিনিস। কিন্তু যে ইচ্ছা, যে প্রচেষ্টা, সবাইকে সঙ্গে নিয়ে বিশেষ করে বিশেষজ্ঞ যারা তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে এটাকে মোকাবেলা করা তাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি।’

এদিন সকাল ১১টায় মহাসচিব দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নিয়ে শেরে বাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের মাজারে প্রাঙ্গণে যান।

তারা সেখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড়িয়ে ফাতেহা পাঠ করে প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করেন।

দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

সরকারের ব্যর্থতার কারণে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে দাবি করে ফখরুল বলেন, আমরা দেখেছি, কয়েক বার বিভিন্ন সিদ্ধান্তের কারণে সারা দেশেই মানুষ ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে আপনারা দেখলেন এবার ঈদের আগে এবং তারও আগে গার্মেন্টসহ ছুটি- সব মিলিয়ে এখন সারা দেশের মানুষই করোনাতে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন সংখ্যা বাড়ছে এবং বৃদ্ধির কারণটা হচ্ছে পরীক্ষা হচ্ছে বেশি, আক্রান্তের সংখ্যাও সেজন্য বাড়ছে।

বেসরকারি হাসপাতালে করোনা চিকিৎসা হচ্ছে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কতটা ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে দেখুন- এখন যারা দায়িত্বপূর্ণ লোক আছেন, গুরুত্বপূর্ণ লোক আছেন তারা কিন্তু অন্যান্য হাসপাতালগুলোতে যেগুলোকে চিহ্নিত করা হয়েছে করোনাভাইরাসের হাসপাতাল হিসেবে। সেখানে তারা যাচ্ছেন না। তারা যাচ্ছেন সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে। আমরা মনে করি যে, এটা প্রমাণ করে সিভিল হেলথ ব্যবস্থা অর্থাৎ বেসামরিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রায় ভেঙ্গেই পড়েছে। যার কারণে কারো আস্থা সেখানে থাকছে না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, করোনাভাইরাসে লকডাউন করা হয় নাই কিন্তু ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। সাধারণ ছুটি ঘোষণা করার মধ্য দিয়ে মানুষ আসলে সাধারণ ছুটি ভোগ করছে আমরা যা দেখতে পারছি চারদিকে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা লক্ষ্য করেছি যে, সরকার এই বিষয়টাতে যে ধরনের গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন ছিল তা দিতে তারা ব্যর্থ হয়েছে। কোথাও কোনো দায়িত্বের লেশ আমরা দেখতে পারছি না, সমন্বয় দেখতে পারছি না। একটা যে সেন্স অব রেসপনসিবিলিটি সেটা দেখতে পারছি না। আপনি পুরোটাই পারবেন-সেটা সম্ভব না এখন। কিন্তু আপনি করার চেষ্টা করছেন আন্তরিকভাবে সেটা ভিজিবল হতে হবে-সেটাই আমরা দেখছি না।

‘সমগ্র দেশের মানুষ সুস্থ থাকুক এবং তারা করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত থাকুক’- এই কামনাও করেন ফখরুল।

বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, আমরা এসেছিলাম আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সাহেবের মাজার জিয়ারত করতে। প্রতিবছর দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে নিয়েই এখানে আমরা আসি জিয়ারত করতে।

‘কিন্তু আপনারা জানেন, তিনি অসুস্থ। তার পক্ষে সম্ভব নয় এখানে আসার। যদিও মাত্র ৬ মাসের জন্য তাকে সাজা স্থগিত করে মুক্তি দেয়া হয়েছে। আমরা মনে করি যে, এটা এটা তার প্রতি সম্পূর্ণ অবিচার করা হয়েছে, ন্যায় বিচার করা হয়নি। তাকে সম্পূর্ণভাবে মুক্তি দেয়া উচিত ছিল এবং তার বিচারেও তার যে জামিন পাওয়া উচিত ছিল, সেই জামিনও বর্তমান ব্যবস্থায় তিনি পাননি।’

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এখন কেমন জানতে চাইলে ফখরুল বলেল, ইনশাআল্লাহ উনি যেমন ছিলেন তার থেকে খারাপ হননি, স্থিতিশীল আছেন।

এসময় করোনা পরিস্থিতিতে কারাবন্দি রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিও জানান বিএনপি মহাসচিব।

প্রসঙ্গত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সব সময় ঈদের দিন দলীয় কর্মসূচি শেষ করে জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করতেন।

২০১৮ সালে দুর্নীতি মামলায় সাজা নিয়ে কারাগারে যাওয়ার পর দলের মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে প্রতি ঈদে দলের প্রতিষ্ঠাতার কবর জিয়ারত করে আসছেন।

সোনালীনিউজ/এএস

Wordbridge School
Link copied!