• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

করোনার ভয়বাহ দ্বিতীয় টেউয়ের কবলে পড়েছে গোটা বিশ্ব


আন্তর্জাতিক ডেস্ক সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২০, ০২:৪৫ পিএম
করোনার ভয়বাহ দ্বিতীয় টেউয়ের কবলে পড়েছে গোটা বিশ্ব

ঢাকা : প্রথম টেউয়ের ধাক্কা সামলিয়ে উঠতে না উঠতেই করোনার সেকেন্ড ওয়েভ বা দ্বিতীয় টেউয়ের কবলে পড়েছে গোটা বিশ্ব। প্রথম দফায় করোনার সংক্রমন কমে যাওয়ার পর বিশ্বের অনেক প্রান্তেই যখন জীবনযাত্রাপ্রায় স্বাভাবিক হয়ে এসেছিলো তখন বিশেষজ্ঞদের আশস্কা সত্যি প্রমাণ করে পৃথিবীর অনেক দেশেই আবার নতুন করে করোনারসেকেন্ড ওয়েভ বা দ্বিতীয় টেউ আঘাত হানতে শুরু করেছে।

ফ্রান্সে প্রায় চারমাস পর আবার যেভাবে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে তাতে বিশেষজ্ঞরা বলেই দিয়েছেন করোনার সেকেন্ড ওয়েভ নিয়ে যে আশস্কা করা হয়েছিলো; সেটা আঘাত হানতে শুরু করেছে।

সংক্রমন কমার সাথে সাথে বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন জায়গায় ভীড় করেছিল ফ্রান্সের মানুষ। সংক্রমন বাড়ায় আবার নতুন করে বিধি নিষেধ আরোপ করতে বাধ্য হয়েছে দেশটির সরকার। ফ্রান্স সরকার এবার সাফ জানিয়ে দিয়েছে তারা আর লকডাউন কার্যকর করতে চায় না তাই সংক্রমন ঠেকাতে জনসাধারণকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। ইউরোপের মধ্যে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে স্পেন ।

দেশটিতে ইতিমধ্যে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ১২ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন মার্চের শুরুর দিকে করোনার প্রথম দফায় স্পেনে এত করোনা রোগি সনাক্তের খবর পাওয়া যায়নি। এত রোগি সংক্রমনের হার বিশেষজ্ঞদের ভাবিয়ে তুলছে। বর্তমানে স্পেনে সংক্রমনের হার ১১.৮ শতাংশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী স্পেনকে সংক্রমনের এই হারকে অন্তত পাঁচ শতাংশের নীচে নামিয়ে আনতে হবে।

দৈনিক সংক্রমণে রেকর্ড করেছে চেক রিপাবলিকও। ১ কোটি ৭০ লক্ষ জনসংখ্যার দেশটি মার্চে করোনার প্রথম টেউ ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছিল। কিন্তু গত আগস্ট থেকে দেশটিতে নতুন করে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। গত ১৪ দিন ধরে প্রতি এক লক্ষ মানুষে গড়ে ৯৪ জন কোভিডে আক্রান্ত হচ্ছেন।

অস্ট্রিয়াতে করোনার দ্বিতীয় টেউ বা সেকেন্ড ওয়েভ শুরু হয়েছে বলে আনুষ্ঠানিক ঘোষণ দিয়েছে সেদেশের সরকার। অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর সেবাস্টিয়ান কুর্জ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন সংক্রমন ঠেকাতে সাধারণ মানুষকে নতুন করে বিধি-নিষেধের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। তবে আবারো লকডাউন ঘোষণা করা হবে কিনা সে ব্যাপারে তিনি কিছু বলেননি।

সংক্রমনের উর্ধ্বগতি দেখা গেছে ব্রিটেনেও । ইতিমধ্যে দেশটিতে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৪১ হাজার ছাড়িয়েছে। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লাখ ছুঁই ছুঁই। বিভিন্ন মহল থেকে জানা যাচ্ছে নতুন করে লকডাউন ঘোষণা করতে পারে বরিস জনসনের সরকার। ইতিমধ্যে জমায়েতের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে ব্রিটেনে।

করোনা সংক্রমন বাড়ায় ইজরাইলে নতুন করে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহ জানিয়েছেন, আগামী তিন সপ্তাহ লকডাউনে থাকবে গোটা দেশ। এ সময় বাসিন্দারা নিজেদের বাড়ির পাঁচশো মিটারের বেশি বেরোতে পারবেন না।

প্রথম দফায় অস্ট্রেলিয়া করোনার সাথে যুদ্ধে অনেকটা এগিয়ে ছিলো। লকডাউনও তুলে দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু মেলবোর্নে নতুন করে আবার করোনা সংক্রমন দেখা দিয়েছে। ফলে সেখানে ফের আংশিক লকডাউন জারি করা হয়েছে। মেলবোর্নে মাস্ক পরা বাধত্যামূলক করা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া জানিয়েছে, করোনার দ্বিতীয় টেউ যাতে সারাদেশে বিস্তৃত হতে না পারে সেদিকে সর্তক আছে সরকার। আপাতত মেলবোর্নের দিকেই দৃষ্টি রেখেছে সরকার। সেখানে দুই সপ্তাহ লকডাউন জারি থাকবে।

চীনে আবার নতুন করে করোনা সংক্রমন দেখা দিয়েছে। সেখানে দ্বিতীয় দফায় এখন পর্যন্ত ৪৯ জন আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। শিনজিয়াং প্রদেশে মূলত নতুন করে করোনার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। ফলে সেখানে নতুন করে বিধি বিধান জারি করেছে প্রশাসন।

করোনা সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা নতুন করে লকডাউনের কথা ভাবছে। তবে দ্বিতীয় দফার লকডাউন এলাকাভিত্তিক হতে পারে বলে আভাস দিয়েছে প্রশাসন।

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সংক্রমন ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও করোনা নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের তেমন কোন উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। এখন পর্যন্ত আমেরিকায় মাস্ক পরা বাধত্যামূলক করা হয়নি। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানিয়েছেন, ব্যাক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে চান না বলেই মাস্ক পরা বাধত্যামূলক করেননি। যদিও দেশটির স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন করোনা নিয়ন্ত্রণে যা যা করা দরকার ছিলো তার অনেককিছুই করেননি ট্রাম্প।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!