• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
মাদক ও অস্ত্র আইনে দুই মামলা

কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা ঢালতেন ক্যাসিনো সম্রাট


বিশেষ প্রতিনিধি অক্টোবর ৮, ২০১৯, ০২:২৩ পিএম
কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা ঢালতেন ক্যাসিনো সম্রাট

ঢাকা : ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের নেতৃত্বেই ক্যাসিনো চলত ক্লাবপাড়ায়। আর তা দেখাশোনা করতেন যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা এনামুল হক আরমান। এতদিন সব জানলেও রাজনৈতিক চাপ এবং ভয়ে মুখ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছিলেন ক্লাব পরিচালকরা। এখন পরিস্থিতি পাল্টে যাওয়ায় দায় মেনে নিচ্ছেন তারা। চাইছেন ক্লাব চালানোর আরো একটা সুযোগ।

এদিকে ‘ক্যাসিনো সম্রাট’-খ্যাত যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনে দুটি মামলা করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। এর মধ্যে মাদক মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক আরমানকেও আসামি করা হয়েছে।

সোমবার (৮ অক্টোবর) বিকাল ৪টার দিকে র্যাব-১ বাদী হয়ে রমনা মডেল থানায় মামলা দুটি করে। দুই মামলার বাদী র‌্যাব-১ এর ডিএডি আবদুল খালেক। সম্রাটকে বর্তমানে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে। আর আরমানকে রাখা হয়েছে কুমিল্লা কারাগারে।

রমনা থানার ওসি কাজী মাইনুল ইসলাম বলেন, এ মামলা দুটি নথিভুক্ত হওয়ার পর আমরা আইনি প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নেব। এ সময় র‌্যাবের পক্ষ থেকে মামলার সপক্ষে আলামত পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আমরা সেগুলো খতিয়ে দেখব এবং আদালতে পেশ করব। ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট ও আরমানকে আদালতে উপস্থাপন করে পুলিশের পক্ষ থেকে রিমান্ডের আবেদন করা হবে।

এদিকে, ক্যাসিনোর মাধ্যমে বিপুল সম্পদের মালিক অন্তত ২০ জনের একটি তালিকা নিয়ে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মতিঝিলের ক্লাবপাড়ায় দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছিল ক্যাসিনো বাণিজ্য। সম্রাটের ক্ষমতাবলে ২০১৬-তে সে ধারায় যুক্ত হয় ভিক্টোরিয়ার নাম। বিনিময়ে দৈনিক ক্লাব কোষে জমা হতো ৪০ হাজার টাকা। যুবলীগ নেতা আরমান দেখাশোনা করতেন ক্লাবটির ক্যাসিনো।

ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাবের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এ কে এম নুরুজ্জামান বলেন, সম্রাট ভিক্টোরিয়া ক্লাবে কার্ড খেলতে আসতেন। ওইখান থেকে তিনি ক্লাবের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। এক্সিকিউটিভ মেম্বারও হন।

তিনি আরো বলেন, ভিক্টোরিয়া ক্লাবে কয়েক বছর ধরে এটা চলছে। এটা অস্বীকার করা যাবে না। এতদিন সব জানলেও কিছুই করার ছিল না ক্লাব কর্মকর্তাদের। রাজনৈতিক চাপ এবং ভয়ে মুখ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছিলেন তারা।

ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাবের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাসিব উদ্দিন বলেন, আমাদের কাছে জোরপূর্বকভাবে নেওয়া হয়েছে। এটা নিয়ে আমরা দ্বিধাগ্রস্ত ছিলাম। তবে পরিস্থিতি পরিবর্তনের সুযোগে এখন সবাই মুখ খুললেও ক্লাব পরিচালকদের এ দায় স্বীকারের নীতিকে মানতে পারছেন না ভিক্টোরিয়ার সাবেক খেলোয়াড় এবং কোচ আবু ইউসুফ।

কোচ আবু ইউসুফ বলেন, এখন যারা দায়িত্বে আছেন বা আসছেন। এরা আসলে স্পোর্টসম্যান না। এদের মুখ্য উদ্দেশ্য হলো— এখান থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা-পয়সা উপার্জন করা। ক্রীড়াঙ্গন বাঁচাতে এ রকম সংগঠকদের হাত থেকে ক্লাবকে দূরে রাখার পরামর্শ তার।

পুলিশি অভিযানের পর থেকেই বন্ধ রয়েছে ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাব। পরিবর্তিত সময়ে ঐতিহ্যবাহী এই ক্লাবটিকে বাঁচাতে আরেকটি সুযোগ চান পরিচালকরা। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরুর পর সম্রাটের নাম আসার পর থেকেই তাকে নিয়ে নানা গুঞ্জন শুরু হয়। অভিযান শুরুর পর হাই প্রোফাইল কয়েকজন গ্রেপ্তার হলেও খোঁজ মিলছিল না সম্রাটের। এসবের মধ্যেই তার দেশ ত্যাগেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

এরপর শনিবার রাত থেকেই তার গ্রেপ্তার হওয়ার খবর এলেও রোববার ভোর ৫টার দিকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জুশ্রীপুর গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয় আত্মগোপনে থাকা সম্রাটকে। তার সঙ্গে আরমানকেও আটক করা হয়। পরে ঢাকায় এনে তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদও করে র‌্যাব।

রোববার দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলমের নেতৃত্বে র‌্যাবের একটি দল সম্রাটকে নিয়ে কাকরাইলে ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টারে তালা ভেঙে তারই কার্যালয়ে ঢুকে অভিযান শুরু করে। সন্ধ্যা সোয়া ৬টা পর্যন্ত অভিযান চলে। সম্রাটের কাকরাইলের কার্যালয় থেকে একটি পিস্তল, বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ ও দুটি ক্যাঙ্গারুর চামড়া জব্দ করে তারা। পরে ছয় মাসের জেল দিয়ে র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট। শুধু নামেই সম্রাট ছিলেন না। তার চালচলনও ছিল সম্রাটের মতোই। খাবার খেতেন পাঁচ তারকা হোটেলে, পান করতেন বিদেশি পানি। ছিল জলসাঘরও। পথে বের হলে সামনে-পেছনে থাকত গাড়ি ও মোটরসাইকেলের বহর। আয়ের উৎস ক্যাসিনো, টেন্ডারবাজি আর চাঁদাবাজি।

ছাত্র রাজনীতি থেকে যুবলীগের রাজনীতিতে এসে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি হন সম্রাট। তার ক্ষমতার হাত ছিল বেশ লম্বা। সরকারি দলের বড় পদে থাকায় গডফাদার ভাবমূর্তির সম্রাট ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। নিজের প্রভাব-প্রতিপত্তি টিকিয়ে রাখতে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকাও ঢালতেন। সে কারণে ক্যাসিনো-কাণ্ডে অনেকে ধরা পড়ার পরও সম্রাট ধরা পড়বেন কি না, তা নিয়ে সংশয় ছিল দলসহ অনেকের ভেতরেই। যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতার ছেলে এবং ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য ফজলে নূর তাপস সম্প্রতি এ নিয়ে ক্ষোভও প্রকাশ করেন।

তিনি জানতে চান, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দেওয়ার পরও কেন সম্রাটকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। তার বক্তব্যের পর রাত পোহাতে না-পোহাতেই আটক হন সম্রাট। আর এর মধ্য দিয়ে তছনছ হয়ে যায় কোটি কোটি টাকার ক্যাসিনো-সাম্রাজ্য।

সংসদ সদস্যর বক্তব্য যদি সত্য হয়, তাহলে প্রশ্ন ওঠে, সম্রাটকে গ্রেপ্তারে প্রধানমন্ত্রী যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, তা কেন বাস্তবায়িত হলো না? ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের দায়িত্বে থাকা সংস্থা র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদকে এ প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, সংসদ সদস্যর এই কথিত অভিযোগের জবাব দেওয়া শোভন হবে না।

তাহলে এতদিন কেন তাকে গ্রেপ্তার করা থেকে বিরত থাকল র‍্যাব? এ প্রশ্নের জবাবে বেনজীর আহমেদ বলেন, এটা অমূলক প্রশ্ন। এতে করে অনেক কষ্ট করে নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে যারা এই অভিযান চালিয়েছেন, তাদের খাটো করে দেখা হবে। তিনি আরো বলেন, এই প্রশ্নটা এমন যে মনে হচ্ছে গ্রেপ্তারকৃত ভদ্রলোক জিরো পয়েন্টে বসে পথিকদের দিকে তাকিয়ে হাসছেন এবং হাত মেলাচ্ছেন আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাসায় বসে আরাম করছে।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ঢাকায় ক্লাবগুলোতে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু করে র‍্যাব। অভিযানের পর সবাই নিশ্চিত হয় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের নেতারাই মূলত এই ক্যাসিনো ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন। প্রথম দিন চারটি ক্লাবে অভিযানের সময় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ হোসেন ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও রাজনৈতিক অঙ্গনের লোকেরা মনে করছিলেন, ঢাকায় ক্যাসিনো ব্যবসার প্রধান নিয়ন্ত্রকই হলেন সম্রাট। শুধু তা-ই নয়, ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগের কারণে যুবলীগ নেতা সম্রাটের নাম আসতে থাকে।

অভিযানে যুবলীগ, কৃষক লীগের কয়েকজন নেতা র‍্যাব ও পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। সম্রাট সে সময় দৃশ্যমান ছিলেন। তিনি ফোনও ধরেছেন। কয়েক দিন কাকরাইলের ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টারে ব্যক্তিগত কার্যালয়ে অবস্থানও করেছেন। ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টারে অবস্থানকালে শতাধিক যুবক তাকে পাহারা দিয়েছেন। সেখানেই সবার খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। একদিন হঠাৎ করেই অজ্ঞাত স্থানে চলে যান সম্রাট। এরপর থেকে তার অবস্থান নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়।

সেই সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উচ্চপর্যায়ের সূত্র জানিয়েছিল, সম্রাট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারিতে আছেন। তারা দোটানায় ছিল ধরবে কি ধরবে না। কিন্তু অভিযানের ১৭ দিন পরে তাকে কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়। এর আগে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয় যে সম্রাটকে ঢাকা থেকে আটক করা হয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, সম্রাট আগে থেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ছিলেন।

লাগেজ পার্টি থেকে যুবলীগ, ক্যাসিনো ও সিনেমায় আরমান যুবলীগ নেতা সম্রাটের অন্যতম সহযোগী এনামুল হক আরমান। পড়ালেখায় বেশি দূর এগোতে পারেননি তিনি। শৈশবেই ফেনীর ছাগলনাইয়া থেকে চলে আসেন ঢাকায়। গত শতকের নব্বইয়ের দশকে বিদেশ থেকে ‘লাগেজ পার্টির’ আনা ইলেকট্রনিক পণ্য বায়তুল মোকাররম এলাকার দোকানে দোকানে বিক্রি করতেন। পরে নিজেই লাগেজ পার্টির কারবারে যুক্ত হন। ২০১৩ সালে যুবলীগের পদ পেয়ে অল্প সময়ে গড়ে তুলেছেন বিত্তবৈভব। জুয়া-ক্যাসিনোর টাকায় নেমেছেন সিনেমা প্রযোজনায়ও।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর মতিঝিলের ক্লাবপাড়ার ক্যাসিনোতে অভিযান শুরু হলেই আলোচনায় চলে আসেন আরমান। অভিযান টের পেয়ে পালিয়ে যান ঢাকার বাইরে। গতকাল রোববার ভোরে সম্রাটের সঙ্গে আরমানকেও গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

যুবলীগের একাধিক সূত্র জানায়, আরমানের উত্থানের পেছনে ভূমিকা রেখেছেন যুবলীগ মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট। একই জেলায় বাড়ি বলেই সম্রাটের সঙ্গে ব্যক্তিগত যোগাযোগ ছিল আরমানের। সেই সুবাদেই ২০১৩ সালে যুবলীগের মহানগর দক্ষিণের সহ-সভাপতির পদ পান। সম্রাটের ছত্রচ্ছায়ায় ক্লাবপাড়ার ক্যাসিনো ও জুয়া-বাণিজ্যের অন্যতম নিয়ন্ত্রকে পরিণত হন আরমান।

দুজনের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, বিএনপি সরকারের (২০০১-০৬) সময়ে মতিঝিলের ক্লাবপাড়ায় জুয়ার ব্যবসায় ঢুকে যান আরমান। এছাড়া লাগেজ পার্টির কারবার করায় সিঙ্গাপুরে ক্যাসিনোতে যাওয়ার অভিজ্ঞতা ছিল আরমানের। তিনিই সম্রাটকে ক্যাসিনো ব্যবসায় আগ্রহী করেন বলে প্রচার আছে। সম্রাটের হয়ে পুরো ক্যাসিনো ব্যবসা দেখভালের দায়িত্ব পালন করতেন আরমান।

জানা গেছে, সম্রাট ও তার বিশেষ মেহমানদের জন্য প্রায়ই নাচ-গানের ‘বিশেষ পার্টির’ ব্যবস্থা করতেন আরমান। এ কারণে রুপালি পর্দার তারকাদের প্রতি আগ্রহ ছিল তাদের। সম্রাটের পক্ষ হয়েই সিনেমা প্রযোজনায় নামেন আরমান। তার প্রযোজনা সংস্থার নাম ‘দেশ বাংলা মাল্টিমিডিয়া’। গত ১২ আগস্ট ঈদুল আজহা উপলক্ষে এই প্রযোজনা সংস্থা থেকে মুক্তি পায় মনের মতো মানুষ পাইলাম না।

সাড়ে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে এই ছবি নির্মিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রযোজনা সংস্থার একজন কর্মকর্তা। বর্তমানে কক্সবাজারে এই প্রযোজনা সংস্থার দ্বিতীয় ছবি আগুন-এর শুটিং চলছে। এই ছবি নির্মাণে কয়েক কোটি টাকা ব্যয় হবে বলে মনে করছেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

গত ১৮ জুন ঢাকা ক্লাবে মনের মতো মানুষ পাইলাম না ছবির মহরত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী মো. মুরাদ হাসান, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নূরুন্নবী চৌধুরী শাওন, তথ্যসচিব আবদুল মালেক। এরপর ৩০ জুলাই আগুন ছবির মহরত হয় হোটেল সোনারগাঁওয়ে। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী মো. মুরাদ হাসান।

বাংলা সিনেমার এক পরিচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সম্রাট আগেও বিভিন্ন সময় সিনেমায় বিনিয়োগ করেছেন। তবে কখনোই আনুষ্ঠানিকভাবে তা প্রকাশ করা হয়নি। আরমান মূলত সম্রাটের হয়েই সিনেমার প্রযোজনায় নামেন।

আরমানের বাড়ি ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার পাঠাননগর ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামে। তার বাবা মুন্সি রফিকুল ইসলাম ছিলেন পাঠাননগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য। তার মা একজন গৃহিণী। তারা ছয় ভাই। আরমান দ্বিতীয়। এক ভাই গ্রামের বাড়িতেই থাকেন। অন্য পাঁচ ভাই ঢাকায় বসবাস করেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মুসা মিয়া জানান, আরমান খুব কমই বাড়িতে আসেন। একটি একতলা দালানঘর ছাড়া পৈত্রিক বাড়িতে কিছু নেই তাদের। দুই বছর আগে স্থানীয় কাচারিবাজার অগ্রণী উচ্চবিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হন আরমান।

এ ধরনের ব্যক্তিরা কীভাবে যুবলীগে পদ পান— জানতে চাইলে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশীদ বলেন, আমরা তো সতর্ক ছিলাম না। এর মধ্যে কেউ কেউ দলে ঢুকে পড়েছে। পদ দেওয়ার ক্ষেত্রেও কিছু ভুল হতে পারে। ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে এখন এগোতে চা​ই।

এদিকে এনামুল হক আরমান প্রসঙ্গে তার বান্ধবী চিত্রনায়িকা শিরিন শিলাকে নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ করা হয়েছে, চিত্রনায়িকা শিরিন শিলার ওপর নজরদারির মাধ্যমে আরমানের খোঁজ পেয়েছে র্যাব।

বিষয়টি নিয়ে নায়িকা শিরিন শিলা বলেন, র‍্যাব যদি আমার ওপর নজরদারির মাধ্যমে আরমান সাহেবের খোঁজ পেয়ে থাকে, তবে র্যাব কেন আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করল না বা আমাকে গ্রেপ্তার করল না। তাছাড়া আমি দুদিন আগে দুবাই থেকে একটি অনুষ্ঠান করে দেশে ফিরেছি। আমাকে নজরে রেখে কীভাবে আরেকজনকে গ্রেপ্তার করবে। আরমান সাহেব কি দুবাই থেকে গ্রেপ্তার হয়েছে? এসব কথা বানোয়াট। আমার মনে হয়, ব্যক্তি জেলাসি থেকে বা চলচ্চিত্রে খাটো করার জন্য চিত্রনায়িকাদের নিয়ে এসব নিউজ হচ্ছে।

আরমানের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই দাবি করে শিলা বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরেই সুনামের সঙ্গে কাজ করছি। যে কারণে অনেক মানুষের সঙ্গে পরিচয় হয়। তবে আরমান সাহেবের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!