• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কামরাঙ্গীরচরের উন্নয়নে ৮৯০ কোটি টাকার প্রকল্প


বিশেষ প্রতিনিধি জানুয়ারি ২৬, ২০১৯, ০১:৪৭ পিএম
কামরাঙ্গীরচরের উন্নয়নে ৮৯০ কোটি টাকার প্রকল্প

ঢাকা : রাজধানী ঢাকার পার্শ্ববর্তী এলাকা কামরাঙ্গীরচরকে গড়ে তোলা হবে পরিকল্পিত নগরী হিসেবে। পুরনো ঢাকার লালবাগ, সূত্রাপুর, নয়াবাজার, গুলিস্তানের পাশাপাশি তুলনামূলক অবহেলিত খিলগাঁও, মুগদা ও বাসাবো এলাকায় লাগবে আধুনিকতার ছোঁয়া। এসব এলাকার সড়ক ও ফুটপাত উন্নয়নে নতুন একটি প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। ঢাকা নগর উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৮৯০ কোটি টাকা। এতে ১০ কোটি ৫০ লাখ ডলার সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ৮৪৪ কোটি টাকা। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রস্তাবিত প্রকল্পটিতে অর্থায়নে বিদেশি দাতা অনুসন্ধান করতে ইআরডিতে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠির ভিত্তিতে বেশকিছু সংস্থা থেকে সহায়তা চাইলে বিশ্বব্যাংক প্রাথমিক সম্মতি দিয়েছে। ১০ কোটি ৬০ লাখ ডলার ব্যয়ের প্রকল্পে মাত্র ৫৫ লাখ ডলার ব্যয় করতে হবে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে। প্রকল্প ব্যয়ের প্রায় ৯৫ শতাংশের জোগান দিতে একটি ধারণাপত্র তৈরি করেছে বিশ্বব্যাংক।

ধারণাপত্রে বলা হয়েছে, ঢাকা মহানগরী বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কেন্দ্র। কর্মসংস্থানের সবচেয়ে বড় কেন্দ্র এ শহরে জনসংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল শহরের একটি ঢাকা। বিশ্বের ১৪০ শহরের মধ্যে বাসযোগ্য হিসেবে ঢাকার অবস্থান ১৩৮তম। দক্ষিণ এশিয়ার অবাসযোগ্য এ নগরীর উন্নয়নে অনেক কাজ করতে হবে। বিশ্বব্যাংক এ কাজে দীর্ঘমেয়াদি সহযোগী হতে চায়।

এতে আরো বলা হয়, ঢাকা মহানগরীকে মানুষের বাসের উপযোগী করে গড়ে তুলতে সরকারের উদ্যোগের সঙ্গে অন্তর্ভুক্তির অংশ হিসেবে প্রকল্পটিতে অর্থায়ন করবে বিশ্বব্যাংক। এর আওতায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় নাগরিক জীবন মানের দৃশ্যমান উন্নয়নে কাজ করা হবে। উন্নত করা হবে সড়ক, ফুটপাত, পার্ক, খোলা জায়গা ও কমিউনিটি সেন্টারের।

ধারণাপত্রে আরো বলা হয়েছে, বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করে বিশ্বব্যাংক ও সরকার দ্রুত ফলাফলের জন্য বেশ কিছু ক্ষেত্র চিহ্নিত করেছে। কাজের মধ্যে রয়েছে, পথচারীদের নিরাপত্তা এবং গতিশীলতা বৃদ্ধি, সবুজায়ন, খোলা এলাকার উন্নতি। দরিদ্র মানুষের বসবাস এলাকা ও জলাবদ্ধ এলাকায় প্রকল্পটি অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করা হবে।

বিশ্বব্যাংক সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় ঢাকা মহানগরীর কামরাঙ্গীরচর, লালবাগ, সূত্রাপুর থেকে নয়াবাজার হয়ে গুলিস্তান এবং খিলগাঁও থেকে মুগদা হয়ে বাসাবো পর্যন্ত এলাকায় সড়ক ও ফুটপাত উন্নয়নে কাজ করা হবে। প্রকল্পের আওতায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি এলাকার পাশাপাশি পুরো ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার পরিবহন ব্যবস্থাপনার উন্নয়নেও কাজ করা হবে। এর আওতায় কয়েকটি মোড় ও ক্রসিংয়ের ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন করা হবে। তা ছাড়া রাস্তা ব্যবহারকারী বিভিন্ন পক্ষ তথা চালক, গাড়ি মালিক, পথচারী ও অন্যান্য পক্ষের মানসিকতার পরিবর্তনের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।

প্রকল্পে অর্থায়নের পাশাপাশি কারিগরি সহায়তাও দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সম্পদ ব্যবস্থাপনা, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ উন্নয়নে কাজ করা হবে প্রকল্পটির আওতায় উন্মুক্ত জায়গার ব্যবস্থাপনা, পরিকল্পনা ও সম্ভাব্যতা যাচাইয়েও ব্যয় করা হবে অর্থ। তা ছাড়া কামরাঙ্গীরচরের মতো অপরিকল্পিত এলাকাকে সুবিন্যস্ত করতে পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে প্রকল্পটির অর্থায়নে।

বিশ্বব্যাংক সূত্র জানায়, ঢাকার অনেক বস্তির পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা পল্লীর চাইতেও খারাপ। ঢাকার মাত্র দুই-তৃতীয়াংশ এলাকায় পাইপলাইনের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হয়ে থাকে। পরিশোধনের আওতায় আসে ড্রেনে প্রবাহিত ময়লার মাত্র ১ শতাংশ। নগরীর ৬০ শতাংশ কঠিন বর্জ্য সংগ্রহ করা হলেও সঠিক পদ্ধতিতে ধ্বংস করা হয় এর সামান্য অংশ। পর্যাপ্ত অবকাঠামো না থাকার কারণে ঢাকায় যানজট ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে।

জনসংখ্যার ঘনত্ব বিবেচনায় ঢাকা মহানগরীর অবস্থান বিশ্বে চতুর্থ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) পরিমিত মানের চাইতে ঢাকায় জনসংখ্যার ঘনত্ব আটগুণ বেশি। এখানে মুক্তাঞ্চল প্রায় শূন্য অবস্থানে নেমে আসছে। রাজধানী ঢাকার বাসযোগ্যতা কমে আসায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ এবং দরিদ্র, নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!