• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কে হচ্ছেন ধর্মমন্ত্রী, আলোচনায় এক হাফেজসহ চারজন


নিজস্ব প্রতিবেদক আগস্ট ৯, ২০২০, ০৯:৪২ এএম
কে হচ্ছেন ধর্মমন্ত্রী, আলোচনায় এক হাফেজসহ চারজন

ঢাকা: ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহর মৃত্যুর পর এখনও কেউ এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাননি। কে এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাবেন, তা নিয়ে নানা আলোচনা চলছে আওয়ামী লীগ এবং ১৪ দলের পাশাপাশি অন্যান্য মহলেও।

সরকারের নীতিনির্ধারক সূত্র জানাচ্ছে, সব পক্ষের আলেমদের সঙ্গে সরকারের সুসম্পর্ক ধরে রাখতে একজন সুদক্ষ, অভিজ্ঞ, বিতর্কমুক্ত, গ্রহণযোগ্য ও মেধাবী ব্যক্তিকেই ধর্মমন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী পদে নিয়ে আসতে চাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।

ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ১৩ জুন রাতে মারা যাওয়ার পর প্রায় দুই মাস ধরে এ মন্ত্রণালয়টি মন্ত্রীশূন্য অবস্থায় রয়েছে। আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করলে ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি গঠিত মন্ত্রিসভায় টেকনোক্র্যাট কোটায় ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন আওয়ামী লীগের সাবেক ধর্মবিষয়ক সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ।

গত তিন মেয়াদ ধরে প্রধানমন্ত্রীর মনোনীত প্রতিনিধি হিসেবে শেখ হাসিনার আসন গোপালগঞ্জ-৩-এর দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন বর্ষীয়ান এ রাজনীতিবিদ। একাধিকবার তিনি আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। আওয়ামী লীগের সঙ্গে হেফাজতে ইসলামের সম্পর্কোন্নয়ন ও কওমি মাদ্রাসার স্বীকৃতি আদায়ে তিনি বড় ভূমিকা রাখেন।

এদিকে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি করোনা সংকট ও বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় বেশ ব্যস্ত সময় কাটাতে হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীকে। তাই শিগগিরই ধর্ম মন্ত্রণালয়ে নতুন কাউকে নিয়োগ দিতে পারেন তিনি। পাশাপাশি আরও কয়েকটি মন্ত্রণালয়েও রদবদল হতে পারে, এমন গুঞ্জন রয়েছে।

অনেকে আগ্রহী হলেও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের শূন্যপদে আসার ক্ষেত্রে চারজন সংসদ সদস্যের নাম বেশি আলোচিত হচ্ছে। তাদের তিনজন আওয়ামী লীগ এবং একজন ১৪ দলের শরিক তরীকত ফেডারেশন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য।

আওয়ামী লীগের তিন সংসদ সদস্যের মধ্যে রয়েছেন- পটুয়াখালী-১ আসনের এমপি ও সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শাহজাহান মিয়া, ঝালকাঠি-১ আসনের বজলুল হক হারুন এবং ময়মনসিংহ-৭ আসনের হাফেজ রুহুল আমিন মাদানী। তাদের মধ্যে অ্যাডভোকেট শাহজাহান মিয়া এ পর্যন্ত তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

২০০৯ সালে গঠিত প্রথম মেয়াদের আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারে ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক সভাপতিও তিনি।

বজলুল হক হারুন এ পর্যন্ত তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ২০১৪ সালের সংসদে ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। বর্তমানে ঝালকাঠি জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছাড়াও বাংলাদেশ-সৌদি আরব সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি।

হাফেজ রুহুল আমিন মাদানী এ পর্যন্ত দু'বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। প্রথম নির্বাচিত হন ১৯৯৬ সালে। বর্তমানে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতির দায়িত্বেও রয়েছেন তিনি।

অবশ্য ১৪ দলের শরিক দলের কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হলে সে ক্ষেত্রে তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর সম্ভাবনা বেশি। চলতি সংসদে ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এ পর্যন্ত চারবার সংসদ সদস্য হয়েছেন তিনি। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ তথা ১৪ দলের মনোনয়নে চট্টগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য হন।

এর আগে ১৯৯১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নির্বাচিত হন তৎকালীন চট্টগ্রাম-৪ আসন থেকে। দলবদল করে বিএনপির মনোনয়নে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে একই আসন থেকে এমপি হয়েছিলেন তিনি। তবে ২০০১ সালের নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জোট গঠন নিয়ে মতবিরোধের জের ধরে বিএনপি থেকে বেরিয়ে ২০০৫ সালে তরীকত ফেডারেশন নামে আলাদা দল গঠন করেন নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী। পরে আওয়ামী লীগের জোটে যুক্ত হয়ে বিএনপি-জামায়াত জোটবিরোধী আন্দোলনে বেশ ভূমিকাও রাখেন তিনি।

একাদশ জাতীয় নির্বাচনের মধ্য দিয়ে টানা তৃতীয়বার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এলেও বর্তমান মেয়াদের আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রিসভায় স্থান পাননি ১৪ দলীয় জোট শরিক দলের কোনো নেতাই, যা নিয়ে প্রথম থেকেই ক্ষোভ রয়েছে জোটের মধ্যে। ইতোমধ্যে সরকারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রকাশ্যেই সমালোচনায় জড়িয়েছেন জোট শরিক দলের শীর্ষ নেতারা। তাই ১৪ দলীয় জোটের শরিক হিসেবে সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীকে প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভায় যুক্ত করবেন কিনা, তা নিয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তাও রয়েছে।

২০১৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয়ের পর গত বছরের ৭ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করে। ওই দিন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২৪ জন মন্ত্রী, ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী ও তিনজন উপমন্ত্রী নিয়ে ৪৭ সদস্যের মন্ত্রিসভার যাত্রা শুরু হয়। দুই দফায় অল্পবিস্তর রদবদল ও কারও কারও মৃত্যু হওয়ার পর বর্তমানে মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৮ জনে।

সোনালীনিউজ/এইচএন

Wordbridge School
Link copied!