• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কে হচ্ছেন নগর পিতা


বিশেষ প্রতিবেদক ডিসেম্বর ২০, ২০১৭, ১১:২১ পিএম
কে হচ্ছেন নগর পিতা

ঢাকা: বৃহস্পতিবার(২১ ডিসেম্বর) রংপুর সিটিতে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে বলেই প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ নিয়ে নগরীর ২য় মেয়াদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।এবারই সরাসরি দলীয় প্রতীকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নির্বাচনে মেয়র পদে সাতজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও মূল আলোচনায় রয়েছেন হেভিওয়েট প্রধান তিন দলের তিনজন।

তারা হলেন- নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত সদ্য সাবেক মেয়র সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু, ধানের শীষ নিয়ে বিএনপির কাওসার জামান বাবলা ও লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। এদিকে, নির্বাচনী উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে রংপুর ছাড়িয়ে দেশজুড়ে। সারা দেশের রাজনীতি সচেতন মানুষ এখন তাকিয়ে আছেন এই নির্বাচনের দিকে। সবার মনে কোটি টাকার প্রশ্ন- কে হবেন রংপুর নগরীর নগর পিতা?

অন্যদিকে, সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন নিয়েছে ভোটের প্রস্তুতি। সকাল থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হবে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নেয়া হয়েছে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা। পুলিশকে সহায়তা করতে মাঠে নেমেছে বিজিবি ও র‌্যাব।

বুধবার সকাল থেকেই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নগরীর প্রধান প্রধান সড়কে বিজিবি টহল শুরু হয়েছে। রিটার্নিং অফিসার সূত্রে জানা গেছে-সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নগরীর আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় ভোটের আগের দিন এবং ভোটের পরের দিন পর্যন্ত বিজিবির ২১ প্লাটুন সদস্যকে মাঠে থাকবে। এই ২১টি প্লাটুনকে ভাগ করে নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডে ১টি করে ইউনিট মোতায়েন রাখা হয়েছে।

ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন ভোটগ্রহণে সব ধরনের প্রস্তুতি সেরে রেখেছে। রসিকের মাঠে থাকছে স্ট্রাইকিং ফোর্স। নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ২ হাজার ২৩১ জন পুলিশ এবং ৫১৫ জন আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবে। রংপুর নির্বাচন কমিশনের আঞ্চলিক অফিস সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

ওই সূত্র আরও জানায়, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর এসব সদস্য ভোটগ্রহণের দিন এবং ভোটগ্রহণের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ের জন্য ভোটকেন্দ্র ছাড়াও বাইরে অবস্থান করবেন। তারা মোবাইল টিম, স্ট্রাইকিং ফোর্স, স্ট্যান্ডবাই ফোর্স, পাহারা, চেকপোস্ট, সেক্টর ডিউটিসহ বিভিন্ন শিরোনামে এসব দায়িত্ব পালন করবে। ইতোমধ্যেই সব প্রস্তুতি চূড়ান্ত করে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনার কাজ চলছে। নির্বাচনে মোট ১৯৩টি কেন্দ্রের মধ্যে ১২৮ টিকেই ঝুঁকিপূর্ণ ধরা হয়েছে।

রিটার্নিং ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র সরকার জানান, নির্বাচনের দিন ১২৮টি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে একজন করে এসআইয়ের নেতৃত্বে একজন এএসআই, পাঁচজন কনস্টেবল এবং তিনজন আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্যসহ ১০ জন করে মোট এক হাজার ৮০ জন, ৬৫টি সাধারণ কেন্দ্রে একজন এসআইয়ের নেতৃত্বে একজন নায়েক, পাঁচজন কনেস্টবল এবং একজন করে ব্যাটালিয়ন আনসারসহ আটজন করে মোট ৫২০ জন আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে।

৩৩টি ওয়ার্ডে ৩৩টি মোবাইল টিম মাঠে থাকবে। একজন ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তার নেতৃত্বে ৩ জন এএসআই, ৪ জন কনেস্টবল এবং ২ জন ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্যসহ মোট ৩৩০ জন আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবেন। তিনি জানান, পুরো সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ১৬টি স্টাইকিং ফোর্স মোতায়েন থাকবে। নির্বাচন-পূর্ববর্তী সময়ে পুরো সিটি এলাকায় দুই শিফটে ১৬টি স্ট্যান্ডবাই টিম কাজ করবে।

সুভাষ চন্দ্র সরকার জানান, নির্বাচনে প্রতিটি কেন্দ্রে একজন করে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ৩৩টি ভ্রাম্যমাণ আদালত, নগরীতে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এর নেতৃত্বে ১১টি বিচারিক আদালত এবং র‌্যাব, বিজিবির আলাদা টিম কাজ করবে।

আর পুলিশ লাইন্স মাঠে নির্বাচন কমিশনের ভোট গ্রহনের সরঞ্জামাদি বিতরণের আগে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্রিফিং করা হয়। ব্রিফ করেন রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক, অতিরিক্ত রেঞ্জ ডিআইজি মো: বশীর আহমেদ ও অতিরিক্ত ডিআইজি চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীর, জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান ও পুলিশ সুপার মো: মিজানুর রহমান।

এসময় ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, একটি সুষ্ঠু অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আমাদের পুলিশ আনসার, বিজিবি ও র‌্যাব সদস্যরা অত্যন্ত সুচারুভাবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করবে। আমাদেরকে মনে রাখতে হবে আমরা এখানে যুদ্ধ করতে আসিনি। সুন্দর পরিচ্ছন্ন নির্বাচন উপহার দেয়ার জন্য নিরাপত্তা বিধান করতে এসেছি।

তিনি আরো বলেন, সবাইকে আরো কথা মনে রাখতে হবে, আমরা কে-কী করছি সবকিছুই মনিটরিংয়ের আওতায় থাকবে। চারদিকে থাকবে মিডিয়া কর্মীদের ক্যামেরা। কোনো ধরনের অনিয়মকে বরদাস্ত করা হবে না। একাজে যদি কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে তাকে চাকুরিচ্যুত করে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

রংপুরের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, এই নির্বাচনটি যাতে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হয় সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন মডেল নির্বাচন হিসেবে দেশবাসীকে উপহার দিতে চাই।

উল্লেখ্য, রসিক নির্বাচনে ১৯৩টি কেন্দ্রে ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৯৯৪ জন ভোটার ভোট দেবেন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ৯৭ হাজার ৬৩৮ জন। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ও ২০৩ বর্গ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে গঠিত রংপুর সিটি কর্পোরেশনে ওয়ার্ড রয়েছে ৩৩টি। মোট ভোটার তিন লাখ ৯৩ হাজার ৯৯৪ জন। যার মধ্যে পুরুষ হচ্ছে এক লাখ ৯৬ হাজার ৩৫৬ ও মহিলা ভোটার ১ লাখ ৯৭ হাজার ৬৩৮ জন।

সবশেষে, নির্বাচনকে ঘিরে রংপুরে বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ। ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোট দিয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থী নির্বাচিত করার অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই/আতা

Wordbridge School
Link copied!