• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কেন্দ্রভিত্তিক নির্বাচনী প্রস্তুতি চূড়ান্ত ঐক্যফ্রন্টের


বিশেষ প্রতিনিধি ডিসেম্বর ২৯, ২০১৮, ১২:৩৪ পিএম
কেন্দ্রভিত্তিক নির্বাচনী প্রস্তুতি চূড়ান্ত ঐক্যফ্রন্টের

ঢাকা : আগামীকাল একাদশ সংসদের ভোটকে সামনে রেখে ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিচ্ছে। শুক্রবার সকাল ৮টায় প্রচারণা শেষ হওয়ার পর দেশের প্রায় সকল আসনের ধানের শীষের প্রার্থী শুক্রবার (২৮ ডিসেম্বর) কেন্দ্রভিত্তিক ভোটের প্রস্তুতি শুরু করেছে। কয়েক ধাপে পোলিং এজেন্ট প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

আর দল, জোট ও ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি সাহসের সঙ্গে নেতাকর্মীদের নিয়ে কেন্দ্র পাহারা দিয়ে ভোটের ফলাফল নিজেদের অনুকূলে আনার নির্দেশনা দিয়েছে। গতকাল শুক্রবার ভোটারদের প্রতি দফায় দফায় এসএমএস ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আবেদনমূলক ভিডিও প্রচার করেছে প্রার্থীরা।    

ঐক্যফ্রন্ট সূত্রে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় ও আসনভিত্তিক প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করেছে তারা। কোন আসনে কোন প্রার্থীর কী করণীয় তা কেন্দ্র থেকে প্রতি মুহূর্তে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। এতদিন প্রতিকূল অবস্থা থাকলেও তা ভোটের আগেই কেটে যাবে বলে প্রার্থীদের সাহস দেওয়া হয়েছে। ভোটের দিনে সার্বক্ষণিক কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

প্রার্থী ও প্রধান নির্বাচনী এজেন্টকে কোনো ধরনের অনিয়ম, অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচন কমিশন, সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মৌখিক অভিযোগের পাশাপাশি লিখিত অভিযোগ করতে বলা হয়েছে। সময় ক্ষেপণ রোধে অভিযোগের একটি ফরমেটও ঠিক রাখতে বলা হয়েছে। পোলিং এজেন্টদের শেষ মুহূর্তের নির্দেশনা দেওয়ার পাশাপাশি কেন্দ্রের ভেতরে যেন একটা মুহূর্তের জন্য কোনো সমস্যা না হয় তা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। যেকোনো সমস্যা মিডিয়া এবং কেন্দ্রে তাৎক্ষণিক জানানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

সূত্র মতে, মূল নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির পাশাপাশি কেন্দ্রীয়ভাবে একাধিক স্থান থেকে নির্বাচন মনিটরিং করা হবে। বিএনপি চেয়াপারসনের গুলশান কার্যালয়, মতিঝিলের ঐক্যফ্রন্টেরে কার্যালয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা নির্বাচন মনিটরিং করবেন। দেশের সব আসনের তথ্য উপাত্ত নিয়ে নির্বাচনের দিন প্রতি ঘণ্টায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে সংবাদ সম্মেলন করে পরিস্থিতি জানানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিদেশি সাংবাদিকদের প্রতি মুহূর্তের তথ্য জানাতে একটি আলাদা মিডিয়া সেন্টারও খোলা হয়েছে।

শেষ দিনে প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দেশনা প্রসঙ্গে বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, সবাইকে ভোটের মাঠে শক্তভাবে অবস্থান নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যতই জুলুম, নির্যাতন হোক না কেন মাঠ ছেড়ে না যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। মোটকথা ভোট ডাকাতি, ভোট সন্ত্রাস, ব্যালট বাক্স ছিনতাই যাতে কেউ করতে না পারে, সে জন্য আমরা প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের ভোটকেন্দ্র পাহারা অর্থাৎ সজাগ থাকার নির্দেশনা দিচ্ছি।

এদিকে প্রচারণা শেষ হওয়ার পর শুক্রবার (২৮ ডিসেম্বর) দিনব্যাপী কেন্দ্রভিত্তিক প্রস্তুতি নিয়েছে প্রার্থীরা। পোলিং এজেন্ট নিয়োগ, প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলায় করণীয়, ভোট কারচুপি ঠোকানোসহ সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে নেতাকর্মীদের। কোনো কারণে পোলিং এজেন্ট পরিবর্তনের প্রয়োজন হলে বিকল্পের তালিকায় থাকাদেরও প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

রাজধানীর বিভিন্ন আসনে ঘুরে দেখা গেছে, প্রচারণার সময় শেষ হওয়ায় অধিকাংশ আসনের প্রার্থীরা নিজ বাসভবনে বসে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন। টেলিফোনে নিয়মিত যোগাযোগ করেছেন নেতাকর্মীদের সঙ্গে। শুক্রবার যে যার এলাকার মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিদের সঙ্গে।

ঢাকা-৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী মির্জা আব্বাস সকাল থেকেই শাহজাহানপুরে নিজের বাসায় সময় কাটান। নিজস্ব আঙ্গিকে তিনি নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। ভোটকেন্দ্রে এজেন্ট দেওয়ার কাজও করেন। বাসায় আসা কর্মীদের বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেন। মির্জা আব্বাস অভিযোগ করেন, নির্বাচন কমিশনের বেঁধে দেওয়া সময়েও বাসা থেকে তিনি খুব একটা বের হতে পারেননি। প্রতিদিনই তার বাসার সামনে থেকে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে।

ঢাকা ৯ আসনের প্রার্থী আফরোজা আব্বাসও সকাল থেকে সময় কাটিয়েছেন শাহজাহানপুরের নিজ বাসভবনে। তিনি জানান, বাসায়ও নেতাকর্মীদের আসতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। বাসায় বসেই তিনি কেন্দ্রে এজেন্ট নিয়োগের কাজ করছেন।

ঢাকা-৪ আসনের বিএনপি প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদ শ্যামপুরের নিজ বাসভবনে নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন। নির্বাচনের শেষ মুহূর্তের নানা নির্দেশনা দেন। বিকালে তার বাসভবন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘিরে রাখে।

এ সময় সাবেক এই সংসদ সদস্য অভিযোগ করেন বলেন, প্রচারণা শেষ হয়েছে, এরপরও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাকে এবং তার কর্মীদের, বিশেষ করে ধানের শীষ প্রতীকের পোলিং এজেন্টদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হয়রানি করছে এবং গ্রেফতারের হুমকি দিচ্ছে। এরপরও শত প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে জনগণ ভোট দিতে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

ঢাকা-১০ আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী বিএনপি নেতা আবদুল মান্নান গতকাল মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করেছেন।

ঢাকা-১১ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী শামিম আরা বেগম গতকালও অভিযোগ করেছেন তিনি পুলিশি নজরদারিতে আছেন। যেখানেই যাচ্ছেন পুলিশ তার পিছু ছাড়ছে না। শুক্রবারও তার বাসা থেকে তার নিকটাত্মীয়সহ অন্তত ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি করেন শামীমা।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!