• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ক্যাসিনো নিয়ে মুখ খুললেন সেই যুবলীগ নেতা খালেদ


নিজস্ব প্রতিবেদক সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৯, ০১:০১ পিএম
ক্যাসিনো নিয়ে মুখ খুললেন সেই যুবলীগ নেতা খালেদ

ঢাকা: বুধবার রাজধানীতে পরিচালিত র‌্যাবের সাঁড়াশি অভিযান এমন বার্তাই দিচ্ছে। বিলম্বে হলেও অনেকটা ধূমকেতুর মতো রাজধানীর ক্যাসিনো সাম্রাজ্যে আঘাত হেনেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ‘ক্যাসিনো সম্রাট’ খ্যাত যুবলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন সম্রাটসহ তার সাঙ্গপাঙ্গরা এখন খাদের কিনারে। কেউ ধরা পড়েছে, কেউ আটকের অপেক্ষায়।

এদিকে, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার রাজধানীর ফকিরাপুলের ইয়ংম্যান্স ক্যাসিনোতে কোটি কোটি টাকার ক্যাসিনো সেটাপ, নারী-পুরুষ এনে সেগুলো চালানোসহ নানা অবৈধ কাজ চলত। রাজধানীতে এত বড় আয়োজনের বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ জানত না? জানলেও তারা চুপ ছিল কেন- এমন প্রশ্ন উঠেছে সবখানে।

গুলশানের বাসা থেকে আটকের পর র‍্যাব-৩ কার্যালয়ে নিয়ে খালেদ মাহমুদকে এসব বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে র‍্যাব।

ক্যাসিনো থেকে আয়ের টাকা কার কার কাছে যেত, সে নিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এই মহানগর যুবলীগ নেতাকে। এর আগে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে অবৈধ অস্ত্র, মাদক ও ক্যাসিনো চালানোর অভিযোগে রাজধানীর গুলশানের বাসা থেকে খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে অস্ত্রসহ আটক করে র‍্যাব। আটকের পর তাকে র‍্যাব-৩-এর কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

এ বিষয়ে দায়িত্বশীল সূত্র থেকে জানা যায়, রাতভর জিজ্ঞাসাবাদে মতিঝিলের ক্যাসিনো পরিচালনার বিষয়টি মতিঝিল থানা পুলিশ, মতিঝিল জোন, পুলিশ সদর দপ্তর ও ডিএমপি সদর দপ্তরের কর্মকর্তারা জানতেন বলে দাবি করেন খালেদ। তবে পুলিশের সঙ্গে ক্যাসিনো চালানোর জন্য কোনো আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে কিছু বলেননি তিনি।

সূত্র আরও জানায়, যুবলীগ নেতা খালেদের ক্যাসিনোর বিষয়ে পুলিশ ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্য সংস্থা এবং রাজনীতিক প্রভাবশালী ব্যক্তিরা জানতেন। তাদের ‘ম্যানেজ করে’ ক্যাসিনো চালাতেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন তিনি।

এ বিষয়ে র‍্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক সারোয়ার বিন কাশেম গণমাধ্যমকে বলেন, তাকে আমরা অল্প সময়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি। তবে তদন্ত করার স্বার্থে সেগুলো এখনই পাবলিশ করা যাবে না। বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম পাওয়া গেছে। রাজধানীতে অবৈধভাবে কোনো ক্যাসিনো থাকতে দেবে না র‍্যাব।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, তাকে আজ বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর)র দুপুরে গুলশান থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে। হস্তান্তরের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদে রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠাবে গুলশান থানা পুলিশ।

উল্লেখ্য, র‌্যাবের অভিযানে গ্রেফতারকালে খালেদের বাসা থেকে ৪শ পিস ইয়াবা, লকার থেকে ১০০০, ৫০০ ও ৫০ টাকার বেশ কয়েকটি বান্ডিল উদ্ধার করা হয়। সেগুলো গণনার পর দশ লাখ ৩৪ হাজার টাকা পাওয়া যায়। এছাড়া ডলারেরও বান্ডিল পাওয়া যায়। টাকায় তা ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা হবে বলে র‌্যাব জানায়। এছাড়া তার কাছ থেকে মোট তিনটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। যার একটি লাইসেন্সবিহীন, অপর দুটি লাইসেন্সের শর্তভঙ্গ করে রাখা হয়েছিল।

এরপরেই ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদকে রাতে আটক ও রাজধানীতে একের পর এক ক্যাসিনোর সন্ধানের খবর দেখে অনেকেই হতবাক হয়েছেন। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দীর্ঘদিন জেনেও কেন এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেননি? আর যদি না জেনে থাকেন তাহলে এটা তাদের চরম ব্যর্থতা।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!