• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

খালেদা জিয়ার জামিন ইস্যুতে যেসব প্রস্তুতি নিয়েছেন আইনজীবীরা


বিশেষ প্রতিনিধি জুন ২৪, ২০১৯, ০৩:৪৮ পিএম
খালেদা জিয়ার জামিন ইস্যুতে যেসব প্রস্তুতি নিয়েছেন আইনজীবীরা

ঢাকা : কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে জামিনে মুক্ত করতে সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করেছেন তার আইনজীবীরা। এর অংশ হিসেবে তারা প্রথমেই হাইকোর্ট বিভাগে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় এবং পরে আপিল বিভাগে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন করবেন। কোন কোন গ্রাউন্ডে তার জামিন চাওয়া হবে, সে ব্যাপারেও ‘হোমওয়ার্ক’ করছেন আইনজীবীরা।

তবে তারা জানিয়েছেন, মামলা দুটি জামিনযোগ্য কিনা, সে বিষয়ে আদালতের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থাকবেন।

খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয়ে নিজেদের প্রস্তুতির বিষয়ে তার আইনজীবী প্যানেলের অন্যতম সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘আজ রবিবারই (২৩ জুন) জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় হাইকোর্টে জামিন আবেদন দিয়েছি। আদালত শুনানির জন্য আমাদের আবেদন গ্রহণ করেছেন। এ সপ্তাহ বা আগামী সপ্তাহের প্রথম দিকে আবেদনটির ওপর শুনানি হবে। এরপর আপিল বিভাগে থাকা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় আমরা জামিন আবেদন করবো।’

খালেদা জিয়ার আরেক আইনজীবী ব্যারিস্টার একেএম এহসানুর রহমান বলেন, ‘আমরা সার্বিকভাবে এবং সবদিক বিবেচনা করেই সব আইনি প্রক্রিয়া শেষ করেছি। এখন জামিন আবেদনের শুনানি করতে আমরা প্রস্তুত।’

এর আগে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক ড. আখতারুজ্জামান। পরে ২০১৮ সালের ১৮ নভেম্বর বিচারিক আদালতের ওই রায়ের বিরুদ্ধে খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন খালেদা জিয়া। হাইকোর্ট এ মামলার শুনানির জন্য পেপারবুক প্রস্তুতের নির্দেশ দেন। গত ২০ জুন পেপারবুক প্রস্তুত হয়ে হাইকোর্টে আসে। তবে এ পর্যায়ে মামলাটির আপিল শুনানির আগে খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তার আইনজীবীরা।

খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শর্তগুলো সম্পর্কে ব্যারিস্টার একেএম এহসানুর রহমান বলেন, ‘এসব মামলার সঙ্গে তার কোনও সংশ্লিষ্টতা নেই। মামলার অন্য আসামিরা জামিনে আছেন। নিম্ন আদালতেও তিনি এসব মামলায় জামিনে ছিলেন। এ কারণেই তার অসুস্থতা, বয়স, সামাজিক মর্যাদা ও রাজনৈতিক পরিচয়ের বিষয়গুলো তুলে ধরে জামিন চাওয়া হবে।’

তবে জিয়া চ্যারিটেবল মামলার রায় ঘোষণার আগে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিচারিক আদালত রায় দেন। এই মামলায় খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাবাস ও জরিমানা করা হয়। ওইদিন রায়ের পরপরই তাকে পুরাতন ঢাকার সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল শুনানি চলাকালে কয়েক দফা তার জামিন বৃদ্ধি করা হয়।

কিন্তু নির্ধারিত শুনানির দিনগুলোতে তার আইনজীবীরা আদালতে হাজির না হওয়ায় এবং দুদকের আবেদনে খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধি রুল জারি থাকায় খালেদা জিয়াকে ১০ বছরের সাজার রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। এরপর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন জানান তার আইনজীবীরা। আবেদনটি আপিল বিভাগে শুনানির জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে।

জামিনে খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘সরকার যদি প্রচণ্ডভাবে বাধা না দেয়, তবে জামিনে তার মুক্তি হবে।’

খালেদা জিয়ার মামলা দুটি জামিনযোগ্য কিনা জানতে চাইলে এই আইনজীবী বলেন, ‘সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা কি জামিন পাবেন না? অন্যান্য মামলার মতো এখানে ভিন্ন কিছু নেই। এমন মামলায় জামিনের বিষয়ে হাজার হাজার নজির রয়েছে।’

তবে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘এসব মামলায় জামিন হবে না কিনা, সে সিদ্ধান্ত দেবেন হাইকোর্ট। তবে আমরা কাউকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেবো না। জামিনের ক্ষেত্রে আইনে কী ব্যাখ্যা রয়েছে, তা হাইকোর্ট বুঝবে। যেহেতু এটা বিচারাধীন বিষয়, তাই এর মেরিট নিয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না।’

ব্যারিস্টার একেএম এহসানুর রহমান বলেন, ‘কোন মামলা জামিনযোগ্য আর কোন মামলা জামিন অযোগ্য-সেসব বিষয় ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের তফসিলে উল্লেখ রয়েছে। তফসিলটি নিম্ন আদালতে জামিন চাওয়ার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়ে থাকে। হাইকোর্টের ক্ষেত্রে জামিন দেওয়া বা না-দেওয়া নির্ভর করবে আদালতের ওপর, এটা তাদের (হাইকোর্টের) এখতিয়ারাধীন ও ইচ্ছাধীন ক্ষমতা।’

মামলা দুটিতে জামিন পাওয়ার বিষয়টি হাইকোর্টের ওপর নির্ভর করছে বলে দাবি করেন তিনি।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!