• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

গণহত্যা মামলা মিয়ানমারের রাজনৈতিক পরাজয়


আন্তর্জাতিক ডেস্ক ডিসেম্বর ১০, ২০১৯, ০৩:৫৯ পিএম
গণহত্যা মামলা মিয়ানমারের রাজনৈতিক পরাজয়

ঢাকা : আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মিয়ানমারের রাজনৈতিক ও সশস্ত্র নেতৃত্বের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ এনেছে গাম্বিয়া। মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক আদালতে এ সংক্রান্ত শুনানিতে সশরীরে উপস্থিত থেকে তার দেশের অবস্থান তুলে ধরবেন।

আন্তর্জাতিক আদালতে মামলার শুনানি বিষয়ে মিয়ানমারবিষয়ক বিশেষজ্ঞ মিশায়েল লুবিনা বলেছেন, এ গণহত্যা মামলা মিয়ানমারের জন্য রাজনৈতিক পরাজয়।

মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ এবং বিদেশনীতির ওপর এই মামলার প্রভাব কী হতে পারে সে বিষয়ে ডয়চে ভেলে তিনি এক সাক্ষাৎকারও দিয়েছেন-

ডয়চে ভেলে : গণহত্যা ইস্যুতে মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিক আদালতে হাজির হতে হচ্ছে। এর প্রভাব কী হতে পারে?

মিশায়েল লুবিনা : মিয়ানমারের আন্তর্জাতিক খ্যাতির ওপর এটি আরেকটি আঘাত। আমি ঠিক জানি না দেশটির সাধারণ মানুষ এটা বুঝতে পারছে কিনা যে, রোহিঙ্গা সংকট তাদের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি যথেষ্ট ক্ষুণ্ণ করেছে। আমি ধারণা করি, অধিকাংশ মানুষ এ সম্পর্কে সচেতন নয়, কিংবা, বিষয়টিকে এড়িয়ে যাচ্ছেন।

বিশেষ করে দেশটির সেনাবাহিনীর মধ্যে এ ধারনা রয়েছে যে, এ ইস্যুতে তারা পার পেয়ে যাবে। নিরাপত্তা বাহিনীগুলো মনে করছে, আগের অনেক অপরাধের মতো এবারও তাদের জবাবদিহিতার মুখে পড়তে হবে না। কিন্তু, যেহেতু বিষয়টি আন্তর্জাতিক আদালতে পৌঁছেছে, তাই সেটিকে আর হালকা করে দেখার সুযোগ নেই।

এটাও ঠিক, এই মামলার ভবিষ্যৎ কী হবে সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না, কেননা, গণহত্যা প্রমাণ করা বেশ কঠিন ব্যাপার। তবে এ কথা এখনোই বলা যায় যে, মামলার ফলাফল যা-ই হোক পুরো প্রক্রিয়াটির কারণে রাজনৈতিকভাবে মিয়ানমারের পরাজয় ঘটেছে।

ডয়চে ভেলে : মিয়ানমারের পক্ষে সাফাই গাইতে সু চি নিজেই আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার কারণ কী বলে আপনার মনে হয়?

মিশায়েল লুবিনা : আমি তার এ সিদ্ধান্তের কথা শুনে প্রথমে বিস্মিত হয়েছি। কিন্তু তারপর বুঝতে পেরেছি যে, এটি তাদের স্বার্থে একটি চমৎকার রাজনৈতিক পদক্ষেপ। সু চি আগামী বছরে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের আগে তার প্রতি জনসমর্থন বাড়াতে চাচ্ছেন।

আর সেটা পেতে এই হেগ যাত্রা বেশ কাজে আসবে। এই জাতীয়তাবাদী অনুভূতিকে পুঁজি করে সু চি আগামী নির্বাচন জয়ের চেষ্টা করবেন। সু চির এই সফরের পেছনে আরেকটি গোপন কারণও থাকতে পারে।

কিন্তু এখন যেহেতু তিনি আন্তর্জাতিক স্তরে সামরিক বাহিনীর পক্ষে দাঁড়াচ্ছেন, সেহেতু দুই পক্ষের মধ্যকার সম্পর্কের উন্নতি ঘটতে পারে। আমাদের খেয়াল রাখতে হবে, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী দেশটির সরকারকে যে কোনো সময় উৎখাত করতে পারে। সু চিও এটা জানেন।

ডয়চে ভেলে : আন্তর্জাতিক আদালতে রোহিঙ্গা গণহত্যার মামলা লড়ার রাজনৈতিক পরিণতি সম্পর্কে মিয়ানমার কতটা সচেতন বলে আপনি মনে করেন?

মিশায়েল লুবিনা : সু চি হচ্ছেন সে দেশের অল্প কয়েকজন মানুষ, যারা এই সম্পর্কের ওপর মামলাটির প্রভাব সম্পর্কে বোঝেন। সেনা কর্মকর্তারা বিষয়টি বোঝেন না। তারা মনে করেন, চীন এবং অন্যান্য এশীয় দেশ তাদের রক্ষা করবে।

এই ধারণা অবশ্য গত কয়েক দশকের আলোকে চিন্তা করলে ভুল নয়। কেননা, অতীতে অনেক অপরাধ করেও তারা পার পেয়ে গেছেন। কিন্তু আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত কিংবা আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের ক্ষেত্রে বিষয়টি ভিন্ন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!