• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে

গেটম্যান নেই ৭ শতাধিক লেভেল ক্রসিংয়ে


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ১৮, ২০১৯, ০৬:৩৪ পিএম
গেটম্যান নেই ৭ শতাধিক লেভেল ক্রসিংয়ে

ঢাকা : বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলে অরক্ষিত অবস্থায় চালু রয়েছে সাত শতাধিক বৈধ লেভেল ক্রসিং। খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগ নিয়ে গঠিত এ অঞ্চল। সেই সঙ্গে আছে আরো প্রায় সাড়ে ৩০০ অবৈধ ক্রসিং। এসব অরক্ষিত ক্রসিংয়ে প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় নানা দুর্ঘটনা।

জানা যায়, রেলের পশ্চিমাঞ্চলে অনুমোদন থাকা ৭১৫টি লেভেল ক্রসিংয়ের সামনে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দায়িত্ব সেরেছে কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে বৈধতা না থাকা ৩৩৯টি ক্রসিংয়ের সামনে সেই সতর্কবার্তাও নেই।

এমন একটি ক্রসিংয়ে চলতি বছরের ১৫ জুলাই সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ট্রেনের ধাক্কায় বর-কনেসহ মাইক্রোবাসের ১১ যাত্রী নিহত হন। অরক্ষিত ক্রসিংয়ে বিয়ের গাড়িটিকে রাজশাহী থেকে ছেড়ে যাওয়া ‘পদ্মা এক্সপ্রেস’ ধাক্কা দিলে মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিজেদের দায় অস্বীকার করেছিল রেল কর্তৃপক্ষ।

রেলের একাধিক কর্মকর্তা জানান, রেললাইনের পাশে নতুন নতুন রাস্তা নির্মাণের কারণে অবৈধ ক্রসিংয়ের সংখ্যা বাড়ছে। রেললাইনের ওপর দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করতে হলে রেলওয়ের অনুমোদন নেওয়ার বিধান থাকলেও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো সেই অনুমোদনের তোয়াক্কা করে না। এ নিয়ে বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে আলোচনা করেও তারা ফল পাচ্ছেন না বলে দাবি রেল কর্তৃপক্ষের। রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমান জানান, তাদের অনুমোদিত লেভেল ক্রসিং রয়েছে এক হাজার ৩৪টি। এর মধ্যে ৩১৯টিতে গেটম্যান আছে। বাকিগুলোতে আপাতত গেটম্যান নেই। এসব ক্রসিং পারাপার হতে হয় নিজ দায়িত্বে।

রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের লেভেল ক্রসিং ও গেটগুলোর পুনর্বাসন ও মান উন্নয়নে ২০১৫ সালের জুলাইয়ে একটি প্রকল্প শুরু হয়েছে এবং তা শেষ হবে ২০২০ সালের জুনে। প্রকল্পের পরিচালক নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান জানান, অন্তত অনুমোদিত লেভেল ক্রসিংগুলো সুরক্ষায় কাজ করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে অবৈধ এবং গেটম্যান নেই এমন লেভেল ক্রসিংগুলোকেও সুরক্ষার আওতায় আনা হচ্ছে। ২০১৫ থেকে বাস্তবায়িত প্রকল্পের আওতায় এসেছে ৩২৬টি ক্রসিং। অনুমোদন পেয়েছে ৫৩টি অবৈধ ক্রসিং। এছাড়া ২০৪টি ক্রসিংয়ে গেটম্যান নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) আবদুল আউয়াল ভূঁইয়া বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কিছু ক্রসিংয়ে গেটম্যান নেই। অস্থায়ী লোকবল নিয়োগ দিয়ে কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে সবার সচেতন হওয়া জরুরি। সংশ্লিষ্ট প্রকল্পটির কাজ শেষ হলে সমস্যার অনেকটাই সমাধান হবে বলে আশা করি।

রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান বলেন, রেলে লুটপাটের জন্য বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। কিন্তু জানমাল রক্ষায় লেভেল ক্রসিং সুরক্ষায় প্রকল্প হয় না। এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়।

বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ মোশাররফ হোসেন বলেন, লেভেল ক্রসিংয়ে ঝুঁকিপূর্ণ যাতায়াতে অপূরণীয় ক্ষতি হলে সে দায় নেবে কে? এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। অবিলম্বে অরক্ষিত গেট ও গেটম্যানবিহীন রেলক্রসিং সমস্যা সমাধানের দাবি জানান তিনি।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!