• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

গোপালগঞ্জের কোনো আসনেই মাঠে নেই বিএনপির প্রার্থীরা


নিজস্ব প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ ডিসেম্বর ১৯, ২০১৮, ০৬:১২ পিএম
গোপালগঞ্জের কোনো আসনেই মাঠে নেই বিএনপির প্রার্থীরা

গোপালগঞ্জ : জেলার তিনটি সংসদীয় আসনে মাঠে নেই বিএনপির প্রার্থীরা। নির্বাচনী এলাকার কোথাও কোনো পোস্টার টাঙ্গানো হয়নি। প্রার্থীদের পক্ষে নেই কোনো মাইকিং ও প্রচার প্রচারণা। ওঠান বৈঠক, সভা-সমাবেশ ও গণসংযোগে দেখা যাচ্ছে না প্রার্থীদের।

জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের জম্মস্থান গোপালগঞ্জ একটি ঐতিহাসিক জেলা। গোপালগঞ্জ জেলায় পাঁচটি উপজেলা নিয়ে তিনটি সংসদীয় আসন গঠিত। জেলার তিনটি আসনই ভিআইপি আসন। বিগত সব নির্বাচনে এ তিনটি আসন থেকে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থীরা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে আসছেন। এবারও ওই তিনটি আসনে লড়ছেন আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থীরা।

গোপালগঞ্জ-১ আসন-মুকসুদপুর উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এবং কাশিয়ানী উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এ আসনের বর্তমান সাংসদ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান। এর আগে তিনি এ আসন থেকে পর পর চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

এ আসনে ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ২১ হাজার। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হয়েছেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বিতর্কিত ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে এ আসনের বিএনপি’র সাংসদ সরফুজ্জামান জাহাঙ্গীর।

বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম এ আসন থেকে প্রার্থী হওয়ার জন্য দলের কাছে মনোনয়ন চান। কিন্তু দল তাকে মনোনয়ন না দিয়ে সরফুজ্জামানকে প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয়। এতে সেলিমুজ্জামানের ক্ষুব্ধ কর্মী সমর্থকরা সরফুজ্জামান জাহাঙ্গীর ও ছেলের ওপর হামলা চালায়। প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত সরফুজ্জামান ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। অপরদিকে জেলা বিএনপি সরফুজ্জামানকে মনোনয়ন দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও কুশপুত্তলিকায় অগ্নিসংযোগ এবং তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। ফলে নেতা-কর্মীদের মাঝে নির্বাচনকে ঘিরে কোনো আগ্রহ নেই বলে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়।

গোপালগঞ্জ-২ আসন গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ২১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এবং কাশিয়ানী উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এ আসনের ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ১১ হাজার। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী শেখ ফজলুল করিম সেলিম এ আসন থেকে পর পর ৭ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। জেলা বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম সিরাজ বিএনপি থেকে মনোনয়ন পান।

এলাকার মানুষ ও স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ না রাখা এবং আপদ-বিপদে তাদের পাশে না থাকায় সিরাজুল ইসলামকেও অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন। ফলে দলের অভ্যন্তরে অনেকটা কোণঠাসা হয়ে পড়েন। তিনি বর্তমানে গোপালগঞ্জে তার বাড়িতে অবস্থান করলেও মাঠে নেই তিনি। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভোট চেয়ে মাঝে মধ্যে তিনি প্রার্থীতা জানান দিচ্ছেন। এ ছাড়া দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যেও নেই কোনো আগ্রহ। এর আগে ৮ম ও ৯ম সংসদ নির্বাচনে তিনি দলের মনোনয়ন পান কিন্তু ওই সব নির্বাচনে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়।

গোপালগঞ্জ-৩ আসন-টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এবং কোটালীপাড়া উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। এ আসনের ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৪৭ হাজার ৮৬০ জন। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজ আসন এটি। তিনি এ আসনটি থেকে পরপর ৬ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বেচ্ছাসেবক দল ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি এস এম জিলানী এ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন পান। বর্তমানে তিনি কারাগারে আটক আছেন। এর আগেও তিনি এ আসনে নির্বাচনে অংশ নেন কিন্তু তখন তার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছিল।

গোপালগঞ্জের তিনটি আসন ভিআইপি আসন হলেও দেশের অন্যান্য জায়গার মতো কোনো সহিংসতার ঘটনা নেই। এলাকায় রয়েছে সুন্দর নির্বাচনী পরিবেশ।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!