• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

গ্যাসের দাম বাড়ানোর আগে জনস্বার্থকে বিবেচনা করুন


নিজস্ব প্রতিবেদক ডিসেম্বর ২৪, ২০১৬, ১১:৫৬ এএম
গ্যাসের দাম বাড়ানোর আগে জনস্বার্থকে বিবেচনা করুন

সরকার দেশে আবারও গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকারি প্রস্তাবে আবাসিক খাতে দুই চুলার গ্যাসের জন্য বর্তমান দাম ৬৫০ থেকে বাড়িয়ে ১০০০ টাকা করা হচ্ছে। আর এক চুলার দাম ৬০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০০ টাকা করা হবে। সিএনজির দাম প্রতি ঘনমিটারে ৩৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪৫ টাকা, গৃহস্থালিতে মিটারভিত্তিক গ্যাসের দাম ৭ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ টাকা এবং শিল্প-কারখানায় ব্যবহৃত ক্যাপটিভ বিদ্যুতের জন্য প্রতি ঘনমিটারে গ্যাসের দাম ৮ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ টাকা করা হতে পারে। এ ছাড়া বিদ্যুৎ উৎপাদন, সার কারখানা, শিল্প-বাণিজ্যিক খাত, চা-বাগান প্রভৃতি সব ক্ষেত্রেই গ্যাসের দাম গড়ে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ বাড়বে। সরকারের এই সিদ্ধান্ত কতখানি জনবান্ধব তা বিবেচনার দাবি রাখে। এমনিতেই বাড়ির মালিকরা বছর বছর বাড়ি ভাড়া বাড়ান। তার সঙ্গে যদি পাল্লা দিয়ে গ্যাসের দাম বাড়ে, তাহলে এর চেয়ে দুঃখজনক ঘটনা আর কী হতে পারে। 

গ্যাস সরবরাহজনিত পরিস্থিতি এমনিতেই অত্যন্ত নাজুক। রাজধানীর বেশিরভাগ এলাকাতেই গ্যাস থাকে না। ঢাকায় দীর্ঘদিন থেকেই গ্যাস সংকট চলছে। রাজধানীর অধিকাংশ এলাকায় ঠিকমতো চুলা জ্বলে না। জ্বললেও গ্যাসের সরবরাহ একেবারেই কম। অর্থাৎ চুলা জ্বলছে টিমটিম করে। আবার এমন অনেক এলাকা আছে চুলা একেবারেই জ্বলছে না। এই অসহনীয় পরিস্থিতি প্রকট আকার ধারণ করছে, বিশেষ করে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত। যার কারণে অনেক পরিবারকেই গভীর রাতে রান্না করতে হচ্ছে। গ্যাস সংকটের কারণে মানুষকে বাধ্য হয়ে খড়ির চুলায় রান্না করতে হচ্ছে। রাজধানীতে বসবাস করেও তারা বাধ্য হয়ে রান্নার প্রাচীন পদ্ধতি অবলম্বন করছে। এ অবস্থায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রধান কর্তব্য হওয়া উচিত- গ্যাসের দাম না বাড়িয়ে সরবরাহ ঠিক রাখা এবং জনসাধারণকে দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দেয়া। নাগরিকদের জন্য বিদ্যুৎ  যেমন জরুরি, একইভাবে জরুরি গ্যাসও। কোনোটাকেই অবহেলার চোখে দেখার কোনো সুযোগ নেই। সুতরাং সরকারের উচিত গ্যাস সংকট নিরসনে জরুরি ব্যবস্থা নেয়া। কারণ রাজধানীতে গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত প্রধান জ্বালানি হচ্ছে গ্যাস। বর্তমান প্রেক্ষাপটে গ্যাস শুধু শিল্প-কারখানাতেই নয় বরং বাসাবাড়িতেও নিত্য ব্যবহার্য হিসেবে অতি জরুরি হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে রাজধানী ঢাকায় গ্যাস ছাড়া জীবনযাপন চিন্তাও করা যায় না। ফলে যদি গ্যাসের সরবরাহ বারবার বিঘ্নিত হয়, তবে তাতে জনজীবনে কী পরিমাণ দুর্ভোগ নেমে আসে, তা সহজেই অনুমেয়। 

আমরা মনে করি, সার্বিক পরিস্থিতিতে গ্যাসের দাম বাড়ানো হবে এক ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্ত। এক্ষেত্রে সরকারের প্রথম পদক্ষেপ হওয়া উচিত গ্যাসের দাম বাড়ানো নয়, বরং সরবরাহ ঠিক রাখা। নিত্যব্যবহার্য দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে এমনিতে জনসাধারণের মধ্যে চাপা অসন্তোষ বিরাজ করছে। অন্যদিকে আবার যদি গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়, তাহলে জনসাধারণের জন্য এটি হবে একটি মরণঘাতী সিদ্ধান্ত। সরকার সবকিছুর আগে জনস্বার্থকেই গুরুত্ব দেবেন, এমনটাই আমাদের প্রত্যাশা।

সোনালীনিউজ/ঢাকা
 

Wordbridge School
Link copied!