• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

গ্রাম আছে মানুষ নাই


ঝিনাইদহ প্রতিনিধি ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২০, ০৯:৫৬ এএম
গ্রাম আছে মানুষ নাই

ঝিনাইদহ: গ্রাম আছে মানুষ নাই ! হঠাৎ কথাটি শুনে অবাক হওয়ারই কথা। আসলেই এমন একটি মানুষ শূন্য গ্রাম রয়েছে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলাতে। গ্রামটি উপজেলা শহর থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে। গ্রামটির নাম মঙ্গলপুর। কোটচাঁদপুর উপজেলা মানচিত্রে থাকা এমনি এক গ্রামের খোঁজে যায়। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, কোন জনবসতি নেই। মঙ্গলপুর গ্রাম জুড়ে ধান, মুশুরি ইক্ষুসহ বিভিন্ন ফসলাদি আর ফলজ বাগান রয়েছে বেশ কয়েকটি বশতভিটার ধ্বংসাবশেষ, রয়েছে পুকুর। 

যে কারণে বোঝা যায় একসময় এ গ্রামে মানুষের বসবাস ছিল, এখন নাই। কেন নাই এই প্রশ্ন জানতে যায় পাশের গ্রাম উপজেলার বলাবাড়িয় গ্রামের ৯৫ বছর বয়স্ক খালেক খানের কাছে। বর্তমানে তিনিই ওই গ্রামের বয়স্ক ব্যাক্তি। খালেক খান বললেন, আমি নিজে মঙ্গলপুর গ্রামের মানুষ শূন্য হওয়ার বিষয়ে খুব একটা জানিনা। তবে বাপ দাদাদের কাছে শুনেছি একসময় এই মঙ্গলপুর গ্রামে মানুষ ছিল। 

তাদের অনেকের গোলা ভরা ধান ছিল, গোয়ালে গরু। গ্রামটি প্রায় মানুষ শুন্য হয়ে পড়ে আজ থেকে দেড়’শ বছর আগে। সর্বশেষ হাজরা ঠাকুর, নিপিন ঠাকুর এরা ৪/৫ ঘর মানুষ ছিল তিনি দেখেছেন। আজ থেকে ৮০/৮৫ বছর আগে তারাও ঘরবাড়ী ভেঙ্গে চলে যায়। তিনি বলেন, পরবর্তীতে এরা হয়তো মাঠের মধ্যে নিরাপত্তা বোধ করেনি সে কারণে চলে গেছে। ঘরবাড়ী ভেঙ্গে আগে যারা গেছে তারা কি কারণে চলে গেছে এ সম্পর্কে তেমন কিছু তথ্য দিতে পারেননি। 

বলাবাড়িয়া গ্রামের মুক্তার আলি (৬৮) বলেন, শুনেছি মঙ্গলপুর গ্রামের মঙ্গল পাঠান নামের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি ছিলেন তার নামেই গ্রামটি’র নাম মঙ্গলপুর। মঙ্গল পাঠানের তিন একর জমির উপর ছিল বিশাল বাড়ী। বাড়ীর চতুর ধারে উচুঁ করে ৩০ থেকে ৪০ ইঞ্চি চওড়া মাটির প্রাচীর (গড়) ছিল। 

পাশের পুকুরের উঁচু পাড়ে দাঁড়িয়ে নাকি বাড়ীর ভীতরের কাউকে দেখা যেত না। ওই পরিবার ছিল ভীষণ ভাবে পর্দাশীল। বউ মেয়েরা কখনো বাইরের পুরুষের সাথে দেখা দিত না। ওই মঙ্গল পাঠান এখানেই মারা যান। তার কবরও রয়েছে এখানে। তিনি বলেন, শুনেছি ১২ জাতির বাস ছিল এ গ্রামটিতে। অত্যাচারিত হয়ে ওই গ্রামের মানুষ গ্রাম ছেড়েছে এমন কথাও কখনোই শুনিনি।

সোনালীনিউজ/এসআই

Wordbridge School
Link copied!