• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

গ্রাহকের ৬০ কোটি টাকা নিয়ে উধাও এনজিও সিয়াম!


চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি নভেম্বর ১১, ২০১৮, ০৩:৩৯ পিএম
গ্রাহকের ৬০ কোটি টাকা নিয়ে উধাও এনজিও সিয়াম!

চাঁপাইনবাবগঞ্জ : চাঁপাইনবাবগঞ্জে সিয়াম শিক্ষা ও স্বাস্থ্য উন্নয়ন ফাউন্ডেশন নামে একটি এনজিও গ্রাহকের প্রায় ৫৫-৬০ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে। এনজিওটির প্রধান অফিস ও শাখা অফিসে বর্তমানে তালা ঝুলছে।

মালিক ও কর্মচারীরা বাড়িঘর ছেড়ে আত্মগোপনে চলে গেছেন। শহরের বড় ইন্দারা মোড়ে এনজিওটির প্রধান অফিস ছিল এবং সদর উপজেলার মহারাজপুর ও নাচোল উপজেলার নেজামপুরসহ বেশ কিছু এলাকায় ছিল শাখা অফিস।

শনিবার (১০ নভেম্বর) সরেজমিনে বারঘরিয়ার লক্ষীপুরে অবস্থিত সিয়ামের অফিসে গেলে দেখা যায় শতাধিক গ্রাহক অপেক্ষায় রয়েছে তাদের জমাকৃত টাকা উত্তোলনের জন্য।

এ বিষয়ে সিয়ামের বৃদ্ধ এক গ্রাহক সফেদা বেগম জানান, সিয়ামের এককর্মী কিছুদিন আগে তার বাড়িতে গিয়ে ১ লাখ টাকা জমার বিপরীতে প্রতিমাসে ২ হাজার টাকা দেবার লোভ দেখালে বেশি টাকা পাবার আশায় সে তার ছেলের মাধ্যমে ৩ লাখ টাকা জমা দেয় সিয়ামে। আর শনিবার সে টাকার লভ্যাংশ নিতে এসে অফিসে তালা দেখতে পায়।

এমনিভাবে বারঘরিয়ার হাজার হাজার মানুষ আজ পথে বসার উপক্রম হয়েছে।

এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জিয়াউর রহমান জানান, গত শুক্রবার রাতে সিয়ামের এক ম্যানেজার সিয়ামের পরিচালক মাসুদ রানার বিষয়ে থানায় নিখোঁজের অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষেই জানা যাবে আসল ঘটনা।

এদিকে এ ঘটনার তদন্তকারী কর্মকার্তা চাঁপাইনবাবগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির ইন্সপেক্টর আব্দুল হান্নান জানান, নিখোঁজের অভিযোগ পাবার পরে সিয়ামের বারঘোরিয়াসহ প্রতিটি ইউনিট কার্যালয় এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে সিয়ামের অফিসে তালা ঝুলতে দেখা যায়। আর আশপাশের বাসিন্দাদের কাছেও খোঁজ নিলে সিয়ামের লোকজন অফিস বন্ধ করে পরিবার নিয়ে সকলে পালিয়ে গেছে বলে জানায়।

এ বিষয়ে বারোঘরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবুল খায়ের জানান, সিয়ামের পরিচালক মাসুদ রানা গ্রাহকের প্রায় ৪৯ কোটি টাকা নিয়ে বর্তমানে ভারতে পালিয়ে গেছে এমটাই শোনা যাচ্ছে। আর এলাকার অসহায় গরিব মানুষ আজ নিঃস্ব হয়ে গেছে। তিনি আরো জানান, মাসুদ রানার মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলে কেউ রিসিভ করে না। আর অন্য নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।

তবে শনিবার বিকেলে বারোঘরিয়ার আমির মেকার, নাজমুল, দুরুল ঘোষ, বিভুতি রায়, শোভনসহ আরো অনেকে অফিস ঘিরে রেখেছিল। তারা জানায়, যার কাছে যেভাবে পেরেছে টাকা নিয়েছিল। অল্প টাকায় বেশি মুনাফা পাবার আশায় তারা সিয়ামে টাকাও জমা দিয়েছিল। টাকা ফেরত দেবার মূহুর্তেই এখন সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী সিয়ামের পলাতক। এ বর্তমানে বারঘরিয়াসহ চাঁপাইনবাবগঞ্জে টক অব দ্য নিউজ। সরকারের কাছেও ভুক্তভোগিদের দাবি এমন প্রতারণার হাত থেকে যেন তাদের রক্ষা করা হয়। তা না হলে শত শত পরিবার ভিক্ষার ঝুলি হাতে নিয়ে পথে বসতে হবে।

এ ব্যাপারে সিয়াম শিক্ষা ও স্বাস্থ্য উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মো. মাসুদ রানার সঙ্গে মুঠোফোনে (০১৭৪৪-১১০০২০) যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তার পরিবারের কাউকেও পাওয়া যায়নি। এ ঘটনার যেন সুষ্ঠু তদন্ত হয় এটাই প্রত্যাশা ভুক্তভোগীদের।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!