• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

গ্রেপ্তার আতংকে দিশেহারা বিএনপি নেতাকর্মীরা


মো. আবু জাফর সিদ্দিকী, নাটোর ডিসেম্বর ২৭, ২০১৮, ০৪:৫৬ পিএম
গ্রেপ্তার আতংকে দিশেহারা বিএনপি নেতাকর্মীরা

নাটোর : নাটোর-৩ সিংড়া আসনে বিএনপির নেতাকর্মীরা হামলা-মামলা ও গ্রেপ্তার আতংকে দিশেহারা। বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্যই পাওয়া গেছে। তারা জানান, সারাদেশে যেভাবে বিএনপির নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার ও তাদের নির্বাচনী প্রচারণায় হামলা করা হচ্ছে তাতে তারা চরম আতংকে রয়েছেন। থমকে গেছে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা। মামলার ভয়ে নেতাকর্মীরা মুখ খোলার সাহস হারিয়ে ফেলেছেন। গা ঢাকা দিয়েছেন সিংড়া বিএনপি ও জামায়াতের নেতারা।

গত ১৯ ডিসেম্বর বিএনপির ১৩০ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৩৫০ জনকে আসামি করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের ছবি ছেড়া ও আ. লীগের নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর করার অপরাধ এনে বিস্ফোরক আইনে সিংড়া থানায় একটি মামলা করেছেন হাতিয়ান্দহ ইউনিয়ন আ. লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ। যদিও বিএনপি নেতারা বলছে এটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা।

ইতিমধ্যে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- হাতিয়ানদহ ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, তাজপুর ইউনিয়ন যুবদলের প্রচার সম্পাদক মহসিন আলী, পৌর বিএনপির সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, ছাত্রদল নেতা মতিন, রাজু ও শিমুল।

সিংড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, কেউ নাশকতার চেষ্টা করলে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে মামলা ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না বা কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলা ব্যাপী বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলায় প্রার্থী দাউদার মাহমুদ, উপজেলা বিএনপির প্রকাশনা সম্পাদক আনিসুর রহমান সহ শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ২৫/৩০ জনকে আশংকাজনক অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ২০ দলীয় জোট নেতা, জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর অধ্যাপক বেলালুজ্জামানকে পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে লোহার রড দিয়ে দুই পা ভেঙ্গে দিয়ে রাস্তায় ফেলে গেছে সাদা পোশাকধারীরা। ৬টি প্রচার মাইক ভাঙচুর করেছে এবং ২টি প্রচার মাইক কেড়ে নিয়েছে। ধানের শীষের ৫টি নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর করেছে। গত ১৪ ডিসেম্বর ১নং সুকাশ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল কুদ্দুসকে নাটোর থেকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ। এ পর্যন্ত অন্তত ৯০টি লিখিত অভিযোগ নির্বাচন কমিশন, রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার বারাবর দেয়া হয়েছে।

বিএনপি মনোনীত প্রার্থী দাউদার মাহমুদ বলেন, আওয়ামী লীগ জনপ্রিয় শূন্য হয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ধানের শীষের নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর করছে তারা। প্রচার মাইক ভাঙচুর করছে, বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা, এমনকি পুলিশ ও র‌্যাব দিয়েও এলাকা ছাড়ার হুমকি দেয়া হচ্ছে। ইসি পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ দিয়েও দৃশ্যমান কোনো ভূমিকা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

বিএনপির অভিযোগ প্রসঙ্গে আ. লীগ প্রার্থী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, নির্বাচনী প্রচারে কেউ কাউকে বাধা দিচ্ছে না। সিংড়া উপজেলা জুড়ে উৎসবমূখর নির্বাচনী পরিবেশ বিরাজ করছে। এখানে সব ভোটার কর্মীতে পরিণত হয়েছে। দলমত নির্বিশেষ সবাই উন্নয়ন ও সুশাসনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। আমার প্রতিদ্বন্দ্বী বন্ধুরা যারা আছেন তাদের ভোট চাওয়ার কোনো যুক্তি নেই। যে কারণে কোনো গ্রামে গিয়ে তারা জনগণের সমর্থন পাচ্ছেন না। তাদের এ দুর্বলতা ঢাকার জন্য বিভিন্ন ধরনের অপবাদ দিচ্ছেন। আমার বিশ্বাস, এখানে সবাই নৌকায় ভোট দেবেন। বিপুল ভোটে নৌকা বিজয়ী হবে।

বিএনপির অভিযোগ প্রসঙ্গে সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, নির্বাচনী মাঠে সার্বক্ষণিক এসি (ল্যান্ড) ও পুলিশ আছেন, অভিযোগগুলো তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!