• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঘুষ ছাড়া মেলে না সেবা!


কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানুয়ারি ২১, ২০১৯, ০৫:২০ পিএম
ঘুষ ছাড়া মেলে না সেবা!

কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়া প্রধান ডাকঘর দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। গ্রাহক হয়রানির অপর নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে এই ডাকঘর। ঘুষ ছাড়া কোনো সেবা মিলছে না এখানে। বিশেষ করে পারিবারিক সঞ্চয়পত্র নিয়ে এ ডাকঘরে ঘুষের রাম রাজত্ব কায়েম করেছে এই পোস্ট অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এতে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

পারিবারিক সঞ্চয়পত্র ডাক বিভাগের একটি জনপ্রিয় সঞ্চয় স্কীম। বিশেষ করে স্বল্প আয়ের মানুষ এবং অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীরা পারিবারিক সঞ্চয়পত্র ক্রয় করেন। কারণ, এই সঞ্চয়পত্রে লাভের পরিমাণ অন্য যেকোনো সঞ্চয় স্কীমের থেকে বেশি।

১ লাখ টাকার পারবিারিক সঞ্চচয়পত্রে মাসে ৯১২ টাকা লভ্যাংশ দেয় ডাক বিভাগ। এ কারণে মানুষ এই স্কীমে অর্থ লগ্নী করতে অনেক বেশি আগ্রহী। দিন দিন এই স্কীম জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সাধারণ মানুষের কাছে।

এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ঘুষ বাণ্যিজ্যে নেমেছে কুষ্টিয়া প্রধান ডাকঘরের কতিপয় অসাধু কর্মচারী-কর্মকর্তা। ঘুষ ছাড়া কোনো গ্রাহক এই সঞ্চয়পত্র কিনতে পারছেন না বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। তাদের অভিযোগ, এই ডাকঘরে সঞ্চয়পত্র কিনতে গেলে গ্রাহকদের বলা হয় ২ মাস পরে আসতে হবে।

তবে এক থেকে দুই হাজার টাকা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায় পারিবারিক সঞ্চয়পত্র। এই ডাকঘরে সঞ্চয়পত্র কিনতে এসে হয়রানির শিকার হন কুমারখালী উপজেলার জয়নাবাদ গ্রামের মো. খোমেনি আহাম্মেদ। তিনি বলেন, ডাকঘরে এসে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেননি।

তবে তার সঙ্গে লাইনে থাকা অনেকেই ঘুষ দিয়ে সঞ্চযপত্র কিনে নিয়ে যান। রেজাউল করিম নামে এক গ্রাহক অভিযোগ করে বলেন, শুধু সঞ্চয়পত্র নয়, এই ডাকঘরে কোনো সেবায় ঘুষ ছাড়া পাওয়া যায় না। অভিযোগ, কুষ্টিয়া প্রধান ডাকঘরের ডেপুটি পোস্ট মাস্টার খলিলুর রহমান নিয়মিত অফিসে আসেন না।

আবার অফিসে আসলেও নিজের চেয়ারে বেশিক্ষণ থাকেন না। তার কারণেই মূলতঃ এই ডাকঘরের কর্মচারী-কর্মকর্তারা ঘুষ বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়েছে।

কোরবান আলী নামে এক গ্রাহক অভিযোগ করে বলেন, ডেপুটি পোস্ট মাস্টার খলিলুর রহমান নিজেই এই ঘুষ বাণিজ্যে জড়িত। তিনি নিজেই সেবা নিতে আসা মানুষদের কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে থাকেন। এ ছাড়া গফ্ফার আলী ও নাইট গার্ড আব্দুল আলিমকে দিয়ে এই ঘুষ বাণিজ্যে জড়িত বলে ভুক্তভোগীরা জানান।

সরেজমিনে কুষ্টিয়া প্রধান ডাকঘরে গিয়ে ডেপুটি পোস্ট মাস্টার খলিলুর রহমানকে তার চেয়ারে দেখা যায়নি। এ সময় ভুক্তভোগীরা তার ঘুষ বাণিজ্যের প্রতিবাদ করলে তিনি অফিস থেকে সটকে পড়েন। পরে বিকাল ৫টা পর্যন্ত তিনি আর অফিসে ফিরে আসেননি। এই সময় তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ ছিল।

কুষ্টিয়া প্রধান ডাকঘরের পোস্ট মাস্টার এ টি এম ফজলে রাব্বি বার বার ফোন করলেও তার সঙ্গে যোগযোগ করতে পারেনি।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!