• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

চট্টগ্রামে ধানের শীষের প্রচারে জনতার ঢল


নিজস্ব প্রতিবেদক ডিসেম্বর ১৬, ২০১৮, ০১:২৮ এএম
চট্টগ্রামে ধানের শীষের প্রচারে জনতার ঢল

ঢাকা : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গণসংযোগে চাঙ্গা চট্টগ্রাম বিএনপি। হামলা-মামলার ভয়ে নুইয়ে পড়া নেতাকর্মীরাও প্রতিদিন অংশ নিচ্ছেন প্রার্থীর গণসংযোগে। করছেন উঠান বৈঠক। এতে বাড়ছে নেতাকর্মীদের মনোবল।

এর মূলে রয়েছে সাধারণ ভোটারদের সাড়া ও সহানুভূতি। নেতাকর্মীরা বলছেন, নির্বাচনী গণসংযোগে স্থানীয় ভোটারদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া ও সহানুভূতি পাচ্ছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। যা দলের কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করছে।

নেতাকর্মীরা জানান, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেও দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিচরণ ছিল সর্বত্র। কিন্তু বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর হামলা আর একের পর এক গায়েবি মামলা দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের ঘরছাড়া করেছে পুলিশ ও সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা।

২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের পর হামলা-মামলা আরো বেড়ে যায়। এতে জেল-জুলুমের শিকার হয়ে প্রায় নুইয়ে পড়ে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। বিশেষ করে পুলিশের গ্রেপ্তার আতঙ্কে মাঠে আসতে পারেনি দলটির নেতাকর্মীরা।

এমন সময়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের গণসংযোগে নেতাকর্মীরা প্রাণ ফিরে পাচ্ছে। হামলা-মামলা আর পুলিশের গ্রেপ্তার আতঙ্ক উপেক্ষা করে নেতাকর্মীরা প্রতিদিন অংশ নিচ্ছে প্রার্থীর গণসংযোগে। এরমধ্যে মধ্যে চট্টগ্রাম-১১ বন্দর-পতেঙ্গা আসনের ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী নগরীর দক্ষিণ পতেঙ্গায় বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগ করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন মহানগর বিএনপি, থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতকর্মীরা।

একইভাবে উত্তর আগ্রাবাদে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, পাঁচলাইশে নগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবু সুফিয়ান গণসংযোগ করেন। তাদের সঙ্গে মহানগর, থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীদের দেখা গেছে। কারাগারে থাকা নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেনের পক্ষে কোতোয়ালি ও বাকলিয়ার বিভিন্ন জায়গায় নেতাকর্মীরা গণসংযোগ করেন।

এছাড়া উপজেলা পর্যায়ে চট্টগ্রাম-৭ রাঙ্গুনিয়া আসনে মহাজোট প্রার্থী নুরুল আলম, চট্টগ্রাম-১২ পটিয়া আসনে বিএনপির প্রার্থী এনামুল হক এনাম, চট্টগ্রাম-১ মিরসরাই আসনে বিএনপির প্রার্থী নুরুল আমিনসহ সব ক’টি আসনের প্রার্থীর পক্ষে গণসংযোগে সক্রিয় হতে দেখা গেছে বিএনপি নেতাকর্মীদের।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির নির্বাচনী মনিটরিং সেলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এবং চাকসুর সাবেক ভিপি নাজিম উদ্দিন বলেন, আমাদের নেতাকর্মীরা আশাবাদী। দীর্ঘদিন ধরে আমরা গ্রাউন্ড ওয়ার্ক করেছি। যেখানে যাচ্ছি সেখানেই সাড়া পাচ্ছি। হাজার হাজার মানুষ স্বাগত জানাচ্ছে। সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সাড়া পাওয়ায় আমাদের কর্মীরাও অনেকটা উজ্জীবিত। তাদের মধ্যে চাঙ্গাভাব এসেছে। যেকোনো পরিস্থিতিতে আমরা ভোটের মাঠে থাকবো। যতই গ্রেপ্তার, হামলা-মামলা করুক, ভোটের মাঠ ছাড়ছি না।

দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শহীদুল আলম বলেন, যেখানে গণসংযোগ করতে যাচ্ছি সেখানে গণজোয়ার সৃষ্টি হচ্ছে। সাধারণ মানুষ গণমিছিল করছে ধানের শীষে পক্ষে। ভোটারদের সাড়ায় দলের নেতাকর্মী উজ্জীবিত। নেতাকর্মীদের মধ্যে এখন ভয়ভীতি কাজ করছে না। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরাও স্ব-স্ব এলাকায় ধানের শীষের প্রচারণায় নেমেছে। আসলে দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হতে হতে ভয়ভীতি চলে গেছে। যেহেতু এটা গণতন্ত্র রক্ষার নির্বাচন, তাই সবাই ঝাঁপিয়ে পড়েছেন।

মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচএম রাশেদ খান বলেন, রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগ পরাজিত। তাই তারা এখন প্রশাসনকে ব্যবহার করছে। ফলে আমাদের এখন ফেস করতে হচ্ছে প্রশাসনকে। প্রশাসন সমানতালে মামলা-মোকদ্দমা ও নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে। প্রতিরাতেই নেতাকর্মীদের বাসায় যাচ্ছে পুলিশ। এরপরও যেখানে গণসংযোগ হচ্ছে সেখানেই ভিড় করছেন নেতাকর্মীরা। প্রার্থী যেখানে যাচ্ছেন সেখানেই বিনা নোটিশে স্থানীয় কর্মীরা জমায়েত হচ্ছেন। অথচ আমাদের গণসংযোগে গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন থাকে। তবু কর্মীরা আতঙ্কিত নন।

হতাশা ব্যক্ত করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম সমপাদক জাহাঙ্গীর আলম দুলাল। তিনি বলেন, যেখানে চাঙ্গাভাব সেখানেই প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে পুলিশ। নেতাকর্মীরা একটু স্বতঃস্ফূর্ত হলেই তাদের নামে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। বাসায় গিয়ে অভিযান চালাচ্ছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন গায়েবি মামলায় যারা উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিন নিয়েছেন তাদের বাসায়ও অভিযান চালাচ্ছে। গণসংযোগ করার সময় স্থানীয় ভোটারদের মধ্যে যারা বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে হাত মিলাচ্ছেন তাদেরও হুমকি দিচ্ছে। মনে হচ্ছে, আমরা ভোট করছি পুলিশের বিরুদ্ধে। এমন আচরণ স্বৈরশাসনের সময়ও ছিল না।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!