• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চমকের মন্ত্রিসভায় রদবদলের জোর গুঞ্জন


নিজস্ব প্রতিবেদক জুলাই ৭, ২০২০, ০১:১২ পিএম
চমকের মন্ত্রিসভায় রদবদলের জোর গুঞ্জন

ঢাকা : মন্ত্রিসভায় রদবদলের জোর গুঞ্জন শুরু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়সহ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ে পরিবর্তন আসছে। মন্ত্রিসভায় যুক্ত হতে পারে কয়েকটি নতুন মুখও। তবে কবে, কখন ও কাকে কোন দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে সে বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য নেই আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে। তারা বলছেন, সবই নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের ওপর।

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে টানা তৃতীয়বার সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। ৭ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২৪ মন্ত্রী, ১৯ প্রতিমন্ত্রী ও ৩ উপমন্ত্রী নিয়ে ৪৭ সদস্যের মন্ত্রিসভার যাত্রা শুরু হয়।

এরপর থেকেই মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের কাজের মূল্যায়ন শুরু হয়। প্রায় দেড় বছরে সমালোচনা হয়েছে বেশ কয়েকজনকে নিয়ে। গত বছর দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপের মধ্যে সপরিবারে মালয়েশিয়ায় যাওয়ায় প্রশ্নবিদ্ধ হন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। করোনা মহামারিতেও তার বিরুদ্ধে অক্ষমতার অভিযোগ উঠেছে। মন্ত্রিসভায় এর প্রতিফলন দেখা যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহর মৃত্যুর পর ফাঁকা হয় ধর্ম মন্ত্রণালয়। মন্ত্রিসভা পুনর্বিন্যাসে এ মন্ত্রণালয়ের শূন্যতা ঘোচানোও বিবেচনায় থাকছে। এর পাশাপাশি পূর্ণমন্ত্রী নেই আরও ১১টিতে। এসব জায়গায় বসতে পারেন নতুন কেউ।

শেষবার মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ হয় ২০১৯ সালের ১৩ জুলাই। সেদিন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা। প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমদ পদোন্নতি পেয়ে পূর্ণমন্ত্রী হন।

মন্ত্রিসভার রদবদলসহ আসছে বেশকিছু পরিবর্তন : বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সরকার বহুমাত্রিক সঙ্কট মোকাবেলা করছে। একদিকে করোনা, করোনা সঙ্কটের পরেই আসলো আম্ফান, দক্ষিণাঞ্চলের এই ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলা করার পর এখন এসেছে বন্যা।

করোনা সঙ্কটের মধ্যেই রমজান এবং ঈদের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়েছে। এখন সামনে আবার আসছে কোরবানি, এই কোরবানি হবে কি হবে না তা নিয়ে এক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, অর্থনৈতিক সঙ্কট তো আছেই। একাধিক সঙ্কটের মুখোমুখি সরকার।

এর মধ্যে আবার প্রশ্ন উঠেছে, সরকারের মধ্যেই অনেকের দায়িত্বহীনতা, ব্যর্থতা এবং অযোগ্যতা- এই বাস্তবতায় সরকার বাজেট পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিল।

সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছিল যে, বাজেটের পর অনেকগুলো কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এবং কিছু পরিবর্তন আসবে। সেই বাজেট শেষ হয়ে গেছে এবং আগামীকাল থেকে নতুন সপ্তাহ শুরু হচ্ছে।

একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র থেকে জানা গেছে যে, এই সপ্তাহটি হবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই সপ্তাহে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এবং নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্তের সম্ভাবনা রয়েছে।

সরকারের বিভিন্ন সূত্রের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যে ধরনের বিষয়গুলোর ব্যাপারে সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে তাঁর মধ্যে রয়েছে-

মন্ত্রিসভার রদবদল : মন্ত্রিসভার রদবদল নিয়ে বেশ কিছুদিন যাবতই কথা হচ্ছিল। তবে এই সপ্তাহে সেই পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে। বিশেষ করে ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর মৃত্যুর পর তাঁর শূন্যস্থান পূরণ এবং আরো কয়েকটি পরিবর্তন নিয়ে সরকারের বিভিন্ন মহলে আলোচনা হচ্ছে।

সরকারের একটি সূত্র বলছে যে, মন্ত্রিসভার রদবদল একান্তই প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত বিষয়। তবে মন্ত্রিসভার রদবদলের যে একটি আভাস তা পাওয়া যাচ্ছে। তবে এর যে পুরো অবয়ব সেই অবয়ব এখনো স্পষ্ট হয়ে ওঠেনি।

একাধিক সূত্র বলছে যে, সরকার যেহেতু বাজেট এবং একাধিক বিষয় নিয়ে ব্যস্ত ছিল সেজন্য এই বিষয়টিতে নজর দিতে পারেননি। তবে খুব শীঘ্রই রদরবদল আসতে যাচ্ছে, এমনকি তা এই সপ্তাহেই ঘটতে পারে।

প্রশাসনে রদবদল : প্রশাসনে বেশকিছু রদবদলের কথা শোনা যাচ্ছিল। এই বিষয়টিও আটকে ছিল বাজেটের জন্য এবং এখন এই ব্যাপারেও পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে।
বিশেষ করে করোনা মোকাবেলার ক্ষেত্রে যে সমস্ত উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন সেই সমস্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সরিয়ে দিয়ে প্রশাসনে প্রাণপ্রবাহ সৃষ্টি করার চিন্তা কিছুদিন যাবতই ছিল। অর্থবছরের শেষ বিবেচনায় সেটা আটকে ছিল। তবে এখন সেটা শুরু হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

দূর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান : দূর্নীতির বিরুদ্ধে এই সপ্তাহটি হবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইতিমধ্যে দূর্নীতি দমন কমিশন দূর্নীতিবাজ মিঠুসহ যারা স্বাস্থ্যখাতে দূর্নীতি করেছে তাঁদেরকে তলব করেছে।

গত অর্থবছরের শেষে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে যারা স্বাস্থ্যখাতে অনৈতিক কেনাকাটা করেছে তাঁদের বিল আটকে দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়গুলোর জন্য চলতি সপ্তাহটি অত্যন্ত উত্তপ্ত থাকবে এবং সরকার দূর্নীতির বিরুদ্ধে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

করোনা মোকাবেলার কৌশল : সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে পূর্ব রাজাবাজার, ওয়ারিসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যে আংশিক লকডাউন, সেই আংশিক লকডাউন আসলে সফল হচ্ছে কিনা বা বাস্তব পরিস্থিতি কি তা নিয়ে সরকার পর্যালোচনা করছে।

বর্তমানে সীমিত আকারে অফিস-আদালত খোলার বিষয়টি আগামী ৩ আগস্ট পর্যন্ত বহাল রেখেছে। এই ব্যাপারে আগামীতে সরকার কি করবে সেই ব্যাপারে চলতি সপ্তাহে সরকার সিদ্ধান্ত নিবে।

সরকারের একটি দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, করোনা পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে ছুটি বা লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিবে।

করোনার পিক আওয়ার : বাংলাদেশে করোনার পিক আওয়ার কবে হবে বা কিভাবে হবে তা নিয়ে চলতি সপ্তাহে একটি ধারণা পাওয়া যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

বিশেষ করে আগামী ৮ জুলাই বাংলাদেশ করোনা সংক্রমণের ৪ মাস অতিবাহিত করবে। এই বাস্তবতায় করোনা কতদিন থাকবে এবং সামনে করোনার প্রকোপ কেমন হবে তা নিয়ে একটি বিজ্ঞানভিত্তিক ধারণা পাওয়া যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

আর এইসব দিকগুলোর জন্য আগামী সপ্তাহটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। সূত্র : ইনডিপেডেন্ট টিভি

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!