চিকিৎসকদের সুরক্ষার ব্যবস্থা না করলে কারও শেষ রক্ষা হবে না

ঢাকা: চীন থেকে ছড়ানো প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেয়ার সময় চিকিৎসকদের সুরক্ষার ব্যবস্থা না করলে কারও শেষ রক্ষা হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. নুজহাত চৌধুরী।

রোববার (২২ মার্চ) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে তিনি এ মন্তব্য করেন। স্ট্যাটাসে শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. আলীম চৌধুরীর মেয়ে নুজহাত চৌধুরী বলেন, মৃত্যুর বিরুদ্ধে মানুষের শেষ যুদ্ধের একমাত্র সৈনিক ডাক্তার। সেই যুদ্ধে পরাস্ত ব্যক্তির শেষ নিঃশ্বাসের তীব্র কষ্টের সময় কেউ পাশে থাকবে না। থাকবে শুধু ওই ডাক্তার। যাকে কারণে-অকারণে আপনারা কসাই ডাকেন, অভিশাপ দেন। মাঝে মাঝে গায়ে হাতও তোলেন।

তিনি আরো লেখেন, ‘অথচ শুধু এবার নয়, চিকিৎসাধীন সব মৃত্যুর ক্ষেত্রেই এ কথাটি সত্য যে, শেষ যে মুখটি আকুল হয়ে আপনাকে বাঁচানোর চেষ্টা করবে তা কোনো একজন ডাক্তারই।’

তিনি বলেন, ডেল্টা হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে নিজেই লড়ছেন বাঁচার জন্য। তার জন্য আপনাদের সহানুভূতি যথার্থ। এর পর কোনো ডাক্তারের গায়ে হাত তোলার আগে মনে রাখবেন এই ডাক্তারের কথা।

নুজহাত চৌধুরী বলেন, নিজের হাত ও মুখকে সামলে নেবেন শেষ নিঃশ্বাসের সময় যেই ডাক্তারের সঙ্গে দেখা হবে তার সম্মানে এটুকুই শুধু অনুরোধ। বলে কি লাভ? ডেঙ্গুর সময়ও বেশ কিছু ডাক্তার মারা গেছেন- কে মনে রেখেছেন? ঢাল নেই, তলোয়ার নেই পাঠিয়ে দিয়েছেন যুদ্ধে।

তিনি আরও বলেন, ডাক্তাররা সেবার ব্রত নিয়েছেন তা নিশ্চয়। তাই বলে, আপনার জন্য আত্মহত্যা করার প্রতিজ্ঞা তো করে নাই, তাই না? কী মনে করেন? সব সৈনিক যদি একে একে পড়ে যায়, যুদ্ধ করবেন কাকে নিয়ে? আপনার শেষ যুদ্ধের যোদ্ধার সুরক্ষার জন্য সবাই দায়িত্বশীল হন।

নুজহাত চৌধুরী বলেন, নির্দিষ্ট সুরক্ষাকারী পোশাক ছাড়া ডাক্তারদের করোনা আক্রান্ত রোগী দেখতে বাধ্য করা কর্তৃপক্ষের উচিত নয়। ডেল্টা হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ অন্যায় করেছেন।

সর্দি, কাশি, জ্বর, গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্টতে ভুগছেন এমন রোগী করোনার জন্য করে দেয়া নির্দিষ্ট হাসপাতালগুলো ছাড়া আর কোথাও নিয়ে না যাওয়ার পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক।

তিনি আরো লেখেন, আবারও বলছি, জীবন-মরণের এই যুদ্ধের মূল যোদ্ধা ডাক্তারদের সুরক্ষা দিন, না হলে কারও শেষ রক্ষা হবে না।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ