• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
৪০ বছরে অলৌকিক উন্নতি

চীনের এখন একটাই লড়াই যুক্তরাষ্ট্রকে টপকানো


আন্তর্জাতিক ডেস্ক ডিসেম্বর ১৮, ২০১৮, ০৯:১৩ পিএম
চীনের এখন একটাই লড়াই যুক্তরাষ্ট্রকে টপকানো

ঢাকা : চার দশক আগে বিশ্ববাজারে অর্থনীতির চাকা চালু করেছিল চীন। আর এখন অর্থনীতির শীর্ষ চূড়ায় কে থাকবে তা নিয়ে চলছে যুদ্ধ। বর্তমানে চীন বিশ্বের বৃহত্তম অটোমোবাইল প্রস্তুতকারী দেশ। যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে দ্বিগুণ মোটরগাড়ি উৎপাদন করে দেশটি।

সিএনএন লিখেছে, ১৯৭০-এর দশকের দিকে চীনের রাস্তায় গাড়ি ও ট্রাক দেখতে পাওয়াটা ছিল বিরল ঘটনা। রাস্তাঘাট ছিল নোংরা ও ভাঙাচোরা। দরিদ্রপীড়িত একটি দেশ থেকে পরাশক্তি হওয়ার লড়াই শুরুর ৪০ বছর পূর্ণ হচ্ছে ১৮ ডিসেম্বর (সোমবার)।

এই চার দশকে অর্থনীতিতে অলৌকিক উন্নতি করেছে চীন।

চীনের রাজনীতিক ও ভবিষ্যৎ নেতা দেং জিয়াওপিং ‘১৯৭৮ সালের ডিসেম্বরে অর্থনৈতিক উন্নয়নের রোডম্যাপ তৈরি করেছিলেন। সেসময় চীনের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ছিল মাত্র ১৫ হাজার কোটি ডলার। চল্লিশ বছর পর জিডিপি এখন ১২ লাখ কোটি ডলার।’

চীনের সামনে রয়েছে শুধু যুক্তরাষ্ট্র। চল্লিশ বছর পর চীনের এখন একটাই লড়াই- যুক্তরাষ্ট্রকে টপকানো।

জিয়াওপিংয়ের শাসনামলে চীনের অর্থনীতি ছিল ভঙ্গুর। চরম দরিদ্রতার মধ্যে দিনাতিপাত করতেন চীনারা। লাখ লাখ শ্রমিক ক্ষুধার তাড়নায় অপুষ্টিতে ভুগেছিল। দেউলিয়ার কিনারে ছিল চীনের অর্থনীতি। কিন্তু সময় বদলেছে। বিশ্বের অর্থনীতির লাগাম এখন চীনের হাতে। বর্তমানে বিশ্বের মোট সম্পদের ১০ শতাংশ চীনের দখলে।

‘১৯৮০-এর দশকের আগে দেশটিতে কোনো বিলিয়নিয়রই ছিল না। সেখানে বর্তমানে ৬০০ বিলিয়নিয়রের দেশ চীন, যেটি বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।’ দেশটিতে মিলিয়নিয়ারের সংখ্যা ২০ লাখ।

‘গত ২০ বছরে প্রাপ্তবয়স্ক চীনা নাগরিকের মাথাপিছু আয় চার গুণ হারে সম্পদ বেড়েছে।’ দেশটিতে মাত্র এক শতাংশেরও কম নাগরিক চরম দরিদ্রসীমার নিচে বসবাস করেন।

ঐতিহাসিকভাবে চীনের এ অলৌকিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের দাবিদার জিয়াওপিং। ১৯৮৭ সালের ২ নভেম্বর তার মৃত্যুর পর ক্ষমতায় আসেন মাও সেতুং। জিয়াওপিংয়ের উন্নয়নের ধারাকে একটু ঝালিয়ে সামনের দিকে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন সেতুং।

এক দলীয় রাজনীতির দেশ চীনের যেই নেতা হয়েছেন সেই তার পূর্বসূরির কর্মকাণ্ডকে বাস্তবায়ন করেছেন। নতুনভাবে সংস্কার করেছেন। জিয়াওপিংয়ের একটা ঐতিহাসিক উক্তি ছিল, ‘বিড়াল কালো হোক বা সাদা হোক, সে কতটা ইঁদুর ধরতে পারে এটাই মুখ্য।’

তার এ উক্তির আলোকে চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখেছেন উত্তরসূরিরা।

চীন এখন আর আগের মতো দরিদ্র দেশ নয়। চার দশকে দেশটির অর্থনীতির রূপ, ভিত্তি-সবই পরিবর্তিত হয়েছে। আধুনিক এ যুগে এসে জিয়াওপিংয়ের চেয়ে চীনাদের কাছে বিখ্যাত দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম তাকে ‘চীনা সংস্কারের প্রধান স্থপতি’ হিসেবে প্রশংসায় ভাসায়।

যিনি দেশকে উন্নতির শিখরে ওঠাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন সেই জিয়াওপিং এখন অবহেলার পাত্র।

হংকংয়ের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কলার ফ্রাঙ্ক ছিং বলেন, চীনের যে কয়টি জাদুঘর আছে, সবগুলো থেকে জিয়াওপিংয়ের প্রতিকৃতি সরিয়ে জিনপিংয়ের বাবার (শি ঝংজান) প্রতিকৃতি বসানো হয়েছে। জিয়াওপিংয়ের প্রতিকৃতি স্থান পেয়েছে চীনের ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বদের থেকে দূরে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!