• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চীনের ওয়ান বেল্টে যুক্ত হচ্ছে আফগানিস্তান, প্রক্রিয়া শুরু


নিউজ ডেস্ক ডিসেম্বর ২৬, ২০১৭, ০৭:০৬ পিএম
চীনের ওয়ান বেল্টে যুক্ত হচ্ছে আফগানিস্তান, প্রক্রিয়া শুরু

ঢাকা: পাকিস্তানের ভেতর দিয়ে চীন যে অর্থনৈতিক করিডোর তৈরি করছে, তাতে এখন আফগানিস্তানকেও অন্তর্ভুক্ত করতে চচ্ছে চীন।

পাঁচ হাজার সাতশো কোটি ডলারের এই উচ্চাকাঙ্খী পরিকল্পনা চীনের ‘ওয়ান বেল্ট, ওয়ান রোড’ মহাপরিকল্পনার অংশ। এর মাধ্যমে চীন এশিয়া, ইউরোপ হয়ে পুরো বিশ্বের সঙ্গে বিভিন্ন ধরণের বাণিজ্য পথ তৈরি করতে চায় দেশটি।

আফগানিস্তানকে এই মহাপরিকল্পনায় যুক্ত করার ব্যাপারে চীন যে প্রচন্ড আগ্রহী, মঙ্গলবার(২৬ ডিসেম্বর) চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই তা খোলাখুলিই জানিয়েছেন এক ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে। তিনি বলেন, এরকম একটি ‘অর্থনৈতিক করিডোর’ থেকে পুরো অঞ্চল উপকৃত হতে পারে।

আফগানিস্তানের জনগণের জীবনমান উন্নয়নের জরুরি তাগিদ আছে। তারা এরকম উদ্যোগে যুক্ত হবে বলে আমরা আশাবাদী। চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর আফগানিস্তান পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা যায় কীনা, যাতে সবাই উপকৃত হবে, সেটা দেখতে আমরা আগ্রহী। তবে এর জন্য তিন দেশের মধ্যে পর্যায়ক্রমে সমঝোতা হওয়া দরকার।

বেইজিং এ অনুষ্ঠিত এই ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রীরাও উপস্থিত ছিলেন।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ওয়াং ই (মাঝখানে), আফগানিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী সালাহউদ্দীন রব্বানী (বাঁয়ে) এবং পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী খাজা মোহাম্মদ আসিফ (ডানে)

আফগানিস্তানের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক মোটেই ভালো নয়। চীন বেশ কিছুদিন ধরে দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে মধ্যস্থতার চেষ্টা করছে। তবে আফগানিস্তান নিয়ে চীনের এই পরিকল্পনার ব্যাপারে সন্দিহান ভারত। তাদের ধারণা, এর ফলে পুরো অঞ্চলটিই কার্যত চীনের প্রভাব বলয়ে চলে যাবে।

চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (সিপেক) চীনের সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী প্রকল্পগুলোর একটি। এর মধ্যে মহাসড়ক, রেলপথ, ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্ক, জ্বালানি, বন্দর, অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা সহ বহু প্রকল্প রয়েছে। এটি পাকিস্তানের অবকাঠামোর নাটকীয় উন্নয়ন ঘটাবে বলে আশা করা হয়।

এই অর্থনৈতিক করিডোরের একটি অংশ ইতোমধ্যে চালু হয়েছে। চীন থেকে ইতোমধ্যে পাকিস্তানের ভেতর দিয়ে মালামাল পরিবহন করা হয়েছে গোয়াডর বন্দর পর্যন্ত। সেখান থেকে চীনের পণ্য গেছে আফ্রিকায় এবং পশ্চিম এশিয়ায়।

চীনের এই মহাপরিকল্পনাকে অনেকে যুক্তরাষ্ট্রের মার্শাল প্ল্যানের সঙ্গে তুলনা করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের বিধ্বস্ত দেশগুলোর পুর্নগঠনে যুক্তরাষ্ট্র এই পরিকল্পনা নিয়েছিল।

চীন-ভারত দ্বন্দ্ব

আফগানিস্তানে প্রভাব বিস্তার নিয়ে ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে দ্বন্দ্ব বহুদিনের। তালেবানের পতনের পর থেকে আফগানিস্তানে ব্যাপক প্রভাব বিস্তারে সক্রিয় হয়ে উঠে ভারত। অন্যদিকে আফগানিস্তানের সরকার প্রায়শই অভিযোগ করে যে তালেবান বিদ্রোহীদের পেছনে প্রধান মদতদাতা হচ্ছে পাকিস্তান।

চীন যদি আফগানিস্তানে প্রভাব বিস্তারে সক্রিয় হয়ে উঠে, তাকে ভারত মোটেই ভালোভাবে নেবে না বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। আফগানিস্তানকে এই অর্থনৈতিক করিডোরে যুক্ত করা নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে চীন। পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানে যে উগ্রবাদী ইসলামী গোষ্ঠীগুলোর তৎপরতা রয়েছে, তারা চীনের পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াং প্রদেশের জন্যও জঙ্গীবাদী হুমকি তৈরি করতে পারে বলে আশংকা করে চীন।

এ কারণে চীন চায় পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের মধ্যে সুসম্পর্ক, যাতে করে এই জঙ্গীবাদের সমস্যা সহজে মোকাবেলা করা যায়। কিন্তু চীনের এই প্রকল্পে পাকিস্তান শাসিত কাশ্মীরও অন্তর্ভুক্ত যেটিকে ভারত তার নিজের অংশ বলে মনে করে।

যদিও চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ওয়াং ই আশ্বাস দিয়েছেন, যে কোন ধরণের সীমানা বিরোধের সঙ্গে তাদের এই প্রকল্পের কোন সম্পর্ক নেই।

সোনালীনিউজ/আতা

Wordbridge School

আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর

Link copied!