• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চড়–ইভাতি খেলা


ইলিয়াস আরাফাত, রাজশাহী জানুয়ারি ২৩, ২০১৭, ১২:২৪ পিএম
চড়–ইভাতি খেলা

রাজশাহী: ছোটবেলার চড়–ইভাতি খেলা কতোই না মজার। কাদা মাটির তৈরি ছোট ছোট হাড়িতে মিছেমিছি রান্না করা। তার মধ্যে একটিতে ধুলা মাটির তৈরি ভাত। একটিতে লতাপাতা দিয়ে সবজি। বাড়ির পাশে কোন এক নিরিবিলি স্থানে গ্রামের শিশুরা প্রায় সময় এ খেলায় মেতে উঠে। দিনভর খাওয়া-দাওয়া ভুলে চড়–ইভাতি খেলায় শিশুদের আনন্দের শেষ নেই। ধুলাবালি মেখে সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পরে চলে মায়ের বকুনি। এমন দৃশ্য গ্রামে চোখে পড়লেও শহর থেকে চড়–ইভাতি খেলা হারিয়ে গেছে বললেই চলে।  

বন্ধুদের সঙ্গে দল বেঁধে পুকুর, খাল-বিলে সাঁতার কাটা, মাছ ধরা এবং সেই মাছ দিয়ে বনভোজন, গোল্লাছুট, কানামাছি, হা-ডু-ডু, বৌছি, দাঁড়িয়াবান্ধা, কুত-কুত, সাতচারা, ডাংগুলি, এক্কা-দোক্কা, বদনসহ আরো কতো খেলা তার কোনো হিসেব নেই। কিন্তু এসব খেলার অনেকই এখন আধুনিকতার যুগে হারিয়ে যেতে বসেছে। এসব খেলাধুলার মধ্যে চড়–ইভাতি খেলাও হারিয়ে যেতে বসেছে। 

রাজশাহীর তানোর উপজেলার মু-মালা বাজারের পাশের পাড়ায় শনিবার দেখা মিললো একদল শিশুর চড়–ইভাতি খেলা। ধুলা-মাটির মধ্যে বসে কাদা-মাটির তৈরি হাড়ি, ছোট সিলভরের কলসসহ খেলাধুলার নানা উপকরণ নিয়ে মেতে ছিলে শিশুরা। তাদের মধ্যে জান্নাত (৪), জিন্নাত (৪), অভি (৫), রোজা (৫), আনাস (৪) ও মালিহা (৫)। মিছেমিছি তারা চড়–ইভাতি খেলছিলো। দলবেধে ধুলা-মাটির ভাত, লতাপাতার সবজি ও ফড়িং ধরে এনে মাংস রান্না করেছিলো। 

২০১৩ সালে বাংলাদেশের ৪০টি গ্রামীণ খেলাধুলা নিয়ে গবেষণা করেছিলেন ইংল্যান্ডের একটি এনজিও প্রতিষ্ঠান। তাদের গবেষণা উঠে এসেছে বাংলাদেশের গ্রামীণ খেলাধুলা বিশেষ করে হাডুডু, দাঁড়িয়াবান্ধা, কুতকুত এক্কা-দোক্কা খেলাধুলা সমুহ শিশুদের মনন বিকাশ এবং শরীরকে ফিট রাখতে অনেকটা সাহায্য করে। কিন্তু সেসব খেলা হারিয়ে যেতে বসেছে।

এ বিষয়ে মু-মালা ফজর আলী মোল্লা ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক ও কলামলিষ্ট ড. আমিনুল ইসলাম জানান, বর্তমান সময়ে শহর কিংবা গ্রাম অঞ্চলের যুবক ও স্কুল পড়ুয়া তরুণ-তরুণীরা ইন্টারনেট নির্ভর হয়ে পড়েছেন। তারা ইন্টারনেট ব্যাবহারের মাধ্যমে সুফলের চেয়ে কুফলের দিকে নিজেদের নিয়ে যাচ্ছেন।

তার মতে, দেশীয় সংস্কৃতি ও গ্রামবাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। শিশুদের খেলাধৃলার প্রতি আগ্রহী করে তুলতে হবে। না হলে এক সময় কালের গর্ভে হারিয়ে যাবে গ্রামবাংলার এসব খেলাধুলা।

সোনালীনিউজ ডটকম/ঢাকা/এআই

Wordbridge School
Link copied!