• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

ছিটকে যাচ্ছেন আ.লীগের অনেক নেতা-এমপি


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ২০, ২০১৮, ০৮:৪৭ পিএম
ছিটকে যাচ্ছেন আ.লীগের অনেক নেতা-এমপি

ঢাকা : বিতর্কিত ও অজনপ্রিয় নেতাদের অনেককেই এবার মনোনয় না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এ কারণেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলটির বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা ও সাংসদকে দলের প্রার্থী হিসেবে দেখা যাবে না বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজন সাংসদ ও নেতাকে মনোনয়নের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এই সূত্রগুলো এমন ১৩ জন নেতার নাম জানিয়েছেন যারা এবার মনোনয়ন দৌড়ে থাকলেও চূড়ান্তভাবে দলের টিকেট পাবেন না। তবে এর বাইরেও আরও বেশ কয়েকজনের নাম থাকার কথা জানা গেলেও তাদের নাম প্রকাশ করতে চায়নি সূত্রগুলো। সেই সঙ্গে মনোনয়ন পেতে চলেছেন এমন ৩০ জনের নামেরও একটি তালিকা সহযোগী শীর্ষ একটি গণমাধ্যমের হাতে এসেছে।

তালিকা থেকে বাদ পড়া ১৩ জনই দশম জাতীয় সংসদের এমপি। এর মধ্যে আবার দুজন দলটির সাংগঠনিক সম্পাদকের পদে রয়েছেন। সূত্রগুলো বলছে, সরকারি ও বেসকারি ছয়টি সংস্থার জরিপে তাদের ব্যাপারে নেতিবাচক প্রতিবেদন আসায় এবার তারা আর মনোনয়ন পাবেন না। তবে মন্ত্রিসভায় থাকা ৪২ জন আইন প্রণেতার সবাই এবার মনোনয়ন পাবেন বলেও একই সূত্রে জানা গেছে। দলের শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বাধ্যবাধকতা থাকায় সূত্রগুলো তাদের পরিচয় প্রকাশ করতে চায়নি।

আরও জানা গেছে, দলের দুজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের নির্বাচনী এলাকা থেকে কে মনোনয়ন পাবে সেই বিষয়টিও চূড়ান্ত করেনি আওয়ামী লীগের পার্লামেন্টারি বোর্ড। এই দুটি আসন হলো জাহাঙ্গীর কবির নানকের ঢাকা-১৩ ও আব্দুর রহমানের ফরিদপুর-১। গত শনিবার পর্যন্ত সারা দেশের ৩০০ আসনের মধ্যে ২৩২টি আসনের জন্য আওয়ামী লীগ তার প্রার্থীর একটি খসড়া তালিকা চূড়ান্ত করেছে।

দলটির সাংগঠনিক সম্পাদকদের মধ্যে শরীয়তপুর-১ আসন থেকে বিএম মোজাম্মেল হক ও মাদারিপুর-৩ আসনের এএফএম বাহাউদ্দিন নাসিম এই তালিকায় নেই। তাদের পরিবর্তে আসন দুটি থেকে যথাক্রমে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইকবাল হোসেন অপু ও দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ মনোনয়ন পেতে চলেছেন।

আর যে ১১ জন এমপি এবারের মনোনয়নের তালিকায় নেই তারা হলেন- মাগুরা-১ আসনের এটিএম আব্দুল ওয়াহাব, রাজশাহী-৫ আসনের আব্দুল ওয়াদুদ দারা, যশোর-২ আসনের মনিরুল ইসলাম, ময়মনসিংহ-১১ আসনের মোহাম্মদ আমানুল্লাহ, টাঙ্গাইল-২ আসনের খন্দকার আসাউজ্জামান, টাঙ্গাইল-৩ আসনের আমানুর রহমান খান রানা, কিশোরগঞ্জ-২ আসনের সোহরাব উদ্দিন, মুন্সিগঞ্জ-১ আসনের সুকুমার রঞ্জন ঘোষ, নেত্রকোনা-৩ আসনের ইফতিকার উদ্দিন তালুকদার পিন্টু, শরীয়তপুর-২ আসনের কর্নেল (অব.) শাখাওয়াত আলী ও কক্সবাজার-৪ আসনের আব্দুর রহমান বদি।

প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-২ সাইফুজ্জামান শিখর মাগুরা-১ আসন থেকে ও সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদ কিশোরগঞ্জ-২ আসন থেকে, আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল নেত্রকোনা-৩ আসন থেকে ও সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম শরীয়তপুর-২ আসন থেকে মনোনয়ন পেতে চলেছেন বলে সূত্রগুলো জানিয়েছে। তবে জোটের শরিদের জন্য আওয়ামী লীগ যেসব আসন ছেড়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে সেখানে কোনো প্রার্থী ঠিক না করলেও ঢাকা-১ আসনের জন্য দলের সভাপতি শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে বেছে নিয়েছে। জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সালমা ইসলাম বর্তমানে এই আসনের এমপি।

জানা গেছে, ঢাকার ২০টি আসনের মধ্যে দলটির বর্তমান ১৩ জন এমপি মনোনয়ন পেবেন। এসব আসনের মধ্যে জোটের শরিকদের ৩টি আসনের ব্যাপারে এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে ঢাকা-৪ ও ৬ আসনে জাতীয় পার্টি ও ঢাকা-৮ আসনে ওয়ার্কার্স পার্টির এমপি রয়েছেন। আর ঢাকা-১৭,১৮ ও ২০ আসনে কারা মনোনয়ন পেতে চলেছেন সেটি জানা সম্ভব হয়নি। এর মধ্যে ঢাকা-১৭ আসনের এমপি বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের প্রধান আবুল কালাম আজাদ। এই দলটি ক্ষমতাসীন দলের জোটের মধ্যে নেই। এই আসন থেকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ প্রার্থী হতে চান। ঢাকা-১৮ ও ২০ আসনের বর্তমান এমপি যথাক্রমে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহারা খাতুন ও এমএ মালেক।

সূত্র মতে, মুন্সিগঞ্জ-২ ও মুন্সিগঞ্জ-৩ আসন থেকে এবার যথাক্রমে মনোনয়ন পাবেন সাগুফতা ইয়াসমিন ও মৃণাল কান্তি দাশ। এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম মুন্সিগঞ্জ-২ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার জন্য মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন।

এছাড়াও আর যারা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে চলেছেন তারা হলেন- সানোয়ার হোসেন (টাঙ্গাইল-৫), হাসান ইমাম খান (টাঙ্গাইল-৪), পঞ্চানন বিশ্বাস (খুলনা-১), আব্দুস সালাম মুরশেদি (খুলনা-৪), নারায়ণ চন্দ্র চন্দ (খুলনা-৫), সিরাজুল ইসলাম মোল্লা (নরসিংদী-৩), রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু (নরসিংদী-৫), বীরেন শিকদার (মাগুরা-২), দীপু মনি (চাঁদপুর-৩), এইচএম ইবরাহীম (নোয়াখালী-১), মোহাম্মদ একরাম করিম চৌধুরী (নোয়াখালী-৪), নুরুল ইসলাম সুজন (পঞ্চগড়-২), রমেশ চন্দ্র সেন (ঠাকুরগাঁও-১), দবিরুল ইসলাম (ঠাকুরগাঁও-২), মনোরঞ্জন শীল গোপাল (দিনাজপুর-১), খালিদ মাহমুদ চৌধুরী (দিনাজপুর-২), ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু (বরগুনা-১) ও শওকত হাসানুর রহমান রিমন (বরগুনা-২)। এরা সবাই বর্তমান সংসদের সদস্য।
বাংলাদেশ ব্যানের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন হবিগঞ্জ-৪ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার ইচ্ছা পোষণ করলেও এই আসন থেকে এমপি মাহবুব আলী ফের দলীয় মনোনয়ন পেতে চলেছেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!