• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০
বইমেলা প্রতিদিন

ছুটির দিনে বইপ্রেমীদের স্রোত


নিজস্ব প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ৯, ২০১৯, ১১:২৬ পিএম
ছুটির দিনে বইপ্রেমীদের স্রোত

ঢাকা : দিন যত গড়াচ্ছে ততই জমে উঠেছে একুশের বইমেলা। শুক্রবার (৮ ফেব্রুয়ারি) অমর একুশে গ্রন্থমেলার অষ্টম দিনে ছিল বইপ্রেমীদের স্রোত।  ছুটির দিন হওয়ায় মেলা প্রাঙ্গণ হয়ে ওঠে বই পড়ুয়াদের মিলনমেলা।

এ দিন মেলার প্রবেশদ্বার উন্মোচনের পর পরই দল বেঁধে আসতে শুরু করেন নানা বয়সী মানুষ। কেউ কেউ এসেছেন বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে, কেউবা পরিবার পরিজন, প্রিয় মানুষকে নিয়ে। শিশু, কিশোর কিশোরীও এসেছে।

বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবার মেলার শুরুর দিকেই বইয়ের কাটতি ভালো। এতে সন্তুষ্ট প্রকাশনী সংস্থার মালিকরা। বই প্রকাশেও রেকর্ড গড়ছে প্রথম সপ্তাহে। দর্শনার্থীদের ভিড়ও বেশ। সব মিলিয়ে লেখক, প্রকাশক, পাঠক, দর্শনার্থীদের পদ চারণায় জমে উঠেছে বইমেলা। প্রতিদিনই শত শত বইয়ের মোড়ক উন্মোচন হচ্ছে মেলায়। প্রবন্ধ, জীবনী, গল্প, উপন্যাস, কবিতায় মন কাড়ছে পাঠকদের। দিন যাচ্ছে, বইয়ের কাটতিও বাড়ছে বেশ। বিশেষ করে জনপ্রিয় লেখকদের বইয়ের চাহিদা শুরু থেকেই। রাজধানীর

ছুটির দিনে বইপ্রেমীদের স্রোত : গুলশান এলাকা থেকে দুই ছোট মেয়েকে নিয়ে বইমেলায় এসেছেন বেসরকারি একটি ব্যাংকের কর্মকর্তা নাসিমা খাতুন। তিনি বলেন, এবার সপ্তাহের অন্য দিনগুলোয় কাজের জন্য বইমেলায় আসা হয়নি। প্রতিদিনই ইচ্ছা করে বইমেলায় আসতে। আজ সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় পরিবারের সদস্যরা সবাই মিলে বইমেলায় আসা। নিজেও বই কিনলাম, বাচ্চাদেরও কিনে দিলাম। তবে আজ (গতকাল) বইমেলায় বইপ্রেমী ক্রেতা দর্শনার্থীদের খুব ভিড়।

অমর একুশে গ্রন্থমেলা কর্তৃপক্ষ সপ্তাহের শুক্র ও শনিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত শুধু শিশুদের জন্য মেলার সময় বরাদ্দ করেছে। শিশুপ্রহরে বাবা-মায়ের হাত ধরে বিভিন্ন দোকান ঘুরে ঘুরে বই দেখে শিশুরা। এক একটি স্টলে টুকে রঙ-বেরঙের বই নেড়েচেড়ে কিনে নেয় পছন্দের বইটি। হাজারো বইয়ের সঙ্গে নিজের সন্তানকে পরিচয় করিয়ে দিতে সঙ্গে ছিলেন মা-বাবারাও। শুধু বই নয়, শিশুদের কাছে মেলার মূল আকর্ষণ ছিল শিশু চত্বরে সিসিমপুরের পরিবেশনা। তবে সে পরিবেশনার আগে মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় শিশুদের চিত্রাঙ্কন।

শিশুপ্রহরে মেলায় এসেছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার। সিসিমপুরের মঞ্চে তিনি কথা বলেন, খেলা করেন শিশুদের সঙ্গে।

এ সময় আর্ল রবার্ট মিলার বলেন, ২০১৩ সাল থেকে ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের (ইউএসএআইডি) সহযোগিতায় সিসিমপুর চলছে। এটি অত্যন্ত জনপিয় একটি অনুষ্ঠান যা নিউইয়র্কের কিছু কার্টুন চরিত্রের আদলে সৃষ্টি। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৩০ লাখ শিশুর কাছে এটি পৌঁছাচ্ছে। এটি শুধু টিভি অনুষ্ঠান নয়, এটি একটি প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থাও।

এর মাধ্যমে শিশুরা ভাষা, নৈতিকতা এবং মনন সম্পর্কে জানতে পারে। আমরা আমাদের সময়ে থাকা কার্টুন চরিত্রের সঙ্গে বড় হয়েছি, আর এখন আমাদের শিশুরা বড় হচ্ছে হালুম-ইকরি-টুকটুকির সঙ্গে। আর্ল রবার্ট মিলারের কথা শেষে মঞ্চে আসে শিশুদের প্রিয় চরিত্র হালুম, ইকরি, শিকু ও টুকটুকি। এরপর শিশুরা তাদের সঙ্গে আনন্দযজ্ঞে মেতে ওঠে।

শুক্রবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় অন্যদের মতো শিশু, কিশোর, তরুণ-তরুণীরাও ভিড় জমিয়েছে বইমেলায়। মেলা প্রাঙ্গণের বিভিন্ন স্টল ঘুরে ঘুরে বই দেখছেন, কিনছেন, নিচ্ছেন নতুন বইয়ের ঘ্রাণ। তবে তরুণ, শিশু, কিশোরদের বইমেলায় সবচেয়ে বেশি আগ্রহ বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর বা সায়েন্স ফিকশন বইয়ের প্রতি। অন্য সব স্টলেই বইপ্রেমীদের ভিড় থাকলেও যেসব স্থলে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর বা সায়েন্স ফিকশন বই পাওয়া যাচ্ছে সেখানে শিশু-কিশোর, তরুণ আর অভিভাবকদের ভিড় বেশি দেখা গেছে।

একটি প্রকাশনীর স্টলে বিক্রয় কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবারের বইমেলায় প্রথম থেকে বইপ্রেমী, ক্রেতা, দর্শনার্থীদের ভিড় থাকলেও গতকাল দিনভর ছিল ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ব্যাপক ভিড়। বেচা বিক্রিও বেশ, সব মিলিয়ে জমে উঠছে প্রাণের বইমেলা। গত বৃহস্পতিবার বাংলা একাডেমি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মেলা শুরুর প্রথম ৬ দিনে শুধু বাংলা একাডেমির ২৫ লাখ ৩১ হাজার টাকার বই বিক্রি হয়েছে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!