• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

জঙ্গিরা প্রশিক্ষিত হচ্ছে কিভাবে?


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ৮, ২০১৬, ০৮:০৭ পিএম
জঙ্গিরা প্রশিক্ষিত হচ্ছে কিভাবে?

সাম্প্রতিক হত্যাকান্ডগুলোতে তীব্রভাবে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার আশঙ্কা করা হচ্ছে। গত ৫ জুন চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রীকে প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকান্ডে দুর্বৃত্তরা সময় নিয়েছে মাত্র কয়েক সেকেন্ড।

এক মিনিটের মধ্যেই মিশন শেষ করে ঘটনাস্থল ছেড়েছে তারা। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকা- এবং পুরো ঘটনাটি প্রশিক্ষিত ব্যক্তিদের দ্বারা সংঘটিত। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এরা প্রশিক্ষণ পাচ্ছে কোথায়? কারা তাদের এভাবে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে? প্রশ্নের উত্তরগুলো খুঁজে বের করা গেলে, জঙ্গিদের মূলোৎপাটন করা সম্ভব। তা না হলে এ দেশ থেকে জঙ্গি তো দূর হবেই না, উল্টো আস্তানায় পরিণত হবে দেশ।

গত বছর ২২ অক্টোবর রাজধানীর গাবতলীতে পুলিশ চেকপোস্টে ছুরিকাঘাত করে এএসআই ইব্রাহীম মোল্লাকে হত্যা করে একই গোষ্ঠী। ওই ঘটনায় পুলিশ হাতেনাতে মাসুদ নামে একজনকে গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদে মাসুদ পুলিশকে জানায়, বড় ধরনের নাশকতা ঘটাতে তারা গোপন প্রশিক্ষণ নেয়। হাতবোমা ছোড়ার প্রশিক্ষণ দেয়া হয় গাজীপুরের শালবনে। শালবনে যারা হাতবোমা ছোড়ার প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছিল তাদের কোনো একটি গ্রুপ হোসেনী দালানে বোমা ছোড়ে।

এ ছাড়া গতবছর চট্টগ্রামের বাঁশখালীর লটমনির পাহাড় থেকে জঙ্গি সংগঠন শহীদ হামজা ব্রিগেডের বিপুলসংখ্যক অস্ত্র ও বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে ছিল এম-১৬ ও একে-২২ অস্ত্র। তাই উগ্রপন্থিদের তৎপরতা রুখতে দেশের বিভিন্ন বনাঞ্চল কঠোর নজরদারিতে আনা প্রয়োজন।

বনাঞ্চলে কেবল বনরক্ষক ও তাদের নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষী নন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আরও নজরদারি বাড়াতে হবে। কারা বনাঞ্চলে প্রবেশ করছে সে ব্যাপারে পুলিশকেও তথ্য রাখতে হবে। প্রয়োজনে বনাঞ্চলের নিরাপত্তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সম্পৃক্ত করে বনকে নির্বিঘœ রাখতে হবে।

রাজধানীতে বাড়ি মালিক, ভাড়াটিয়া, গৃহকর্মী, চালকসহ অন্যদের তথ্য সংগ্রহের মতো ঢাকার আশপাশের এলাকার ভাসমান নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ জরুরি। বিশেষ করে শিল্প এলাকা অনেক ঘনবসতিপূর্ণ। সেখানে ভাসমান নাগরিকদের সঠিক তথ্য সংগ্রহ করা প্রয়োজন। প্রয়োজনে সবার গ্রামের ঠিকানায় যোগাযোগ করে ওই তথ্য যাচাই করতে হবে। মাদ্রাসার ছাত্ররা ছাড়াও এখন বেসরকারি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও জঙ্গিবাদের দিকে ঝুঁকছে। শিক্ষা ব্যবস্থাকে একই ছাতার নিচে আনা জরুরি। উগ্রপন্থাকে মোকাবেলায় সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।

দেশে জঙ্গিবাদের উত্থান যে কোনো মূল্যে রুখতে হবে। এক্ষেত্রে পুলিশের সক্ষমতা বাড়ানো জরুরি। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স এবং সামাজিক প্রতিরোধও গড়ে তুলতে হবে।

পুলিশ দাবি করছে, সাম্প্রতিক হত্যাকান্ডগুলোতে জেএমবি সদস্যরা জড়িত। কিন্তু যে কোনো হামলার পরই ইসলামিক স্টেট (আইএস) কথিত দায় স্বীকারের বিষয়টি নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এসবের পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে কি-না সে বিষয়ে আরও সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা

Wordbridge School
Link copied!