• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০
সিটি নির্বাচন

জরিপে এগিয়ে আ.লীগ প্রার্থীরা


বিশেষ প্রতিনিধি জানুয়ারি ১৯, ২০২০, ০৪:২৫ পিএম
জরিপে এগিয়ে আ.লীগ প্রার্থীরা

ঢাকা : ঢাকার জোড়া সিটি করপোরেশনের আসন্ন নির্বাচনে প্রচারের মাঠে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র পদে প্রার্থীরা জনপ্রিয়তায় এখন পর্যন্ত এগিয়ে আছেন।

আনুষ্ঠানিক নির্বাচনি প্রচার শুরুর প্রথম সপ্তাহে তাদের ঘিরে ভোটারের মধ্যে জন্ম নেয় ব্যাপক আগ্রহ, উৎসাহ ও উদ্দীপনা।

দুই প্রার্থীর পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি, সরকারের টানা ১১ বছরের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, প্রচারণায় উৎসবমুখর পরিবেশ বজায় থাকা, ঢাকাকে আধুনিক নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে বিশ্বাসযোগ্য প্রতিশ্রুতি ও মেয়র প্রার্থীদের পক্ষে ক্ষমতাসীন দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীর ঐক্যবদ্ধ প্রচারের কারণে তারা এগিয়ে আছেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিচালিত গোয়েন্দা জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে বলে সূত্র জানায়।

সরকারি দলের নীতিনির্ধারক সূত্রমতে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরুর প্রথম সপ্তাহে দলের মনোনীত মেয়র প্রার্থীরা ভোটের মাঠে কেমন সাড়া ফেলেছেন, জনপ্রিয়তায় তারা এগিয়ে না পিছিয়ে আছেন, সেসব জানতে আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কয়েকজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা মাঠ জরিপ করেন।
প্রচারের বিষয়ে দলের চলমান কর্মপরিকল্পনা ও কৌশলে ভোটারদের মাঝে কেমন প্রভাব পড়েছে বা কৌশলে কোনো পরিবর্তন করতে হবে কি না- এসব লক্ষ্যে জরিপটি পরিচালিত হয়। মেয়রপ্রার্থী মনোনীত করার বেলায়ও এবার প্রধানমন্ত্রীর জরিপকে গুরুত্ব দেয় আওয়ামী লীগ। ওই জরিপে ডিএসসিসিতে শেখ ফজলে নূর তাপস ও ডিএনসিসিতে আতিকুল ইসলাম এগিয়ে ছিলেন।

দলীয় সূত্র বলছে, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে ক্ষমতাসীন দল মর্যাদার লড়াই হিসেবে দেখছে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে দলীয় প্রার্থীদের বিজয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চায় তারা।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয়ের মধ্য দিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো দলের নেতৃত্বে সরকার গঠিত হওয়া এবং সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতাও চান তারা।

প্রার্থীদের জয়ের লক্ষ্যে নানা পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বসহ ঢাকা মহানগরের দুই অংশের নেতারা এবং মূল দল ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। মাঠে সেসবের বাস্তবায়ন শুরুর পর প্রার্থী ও দলের জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের উদ্দেশ্যও আছে জরিপের পেছনে।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ডিএসসিসিতে সাঈদ খোকন মনোনয়ন না পাওয়ায় দলের মেয়র প্রার্থীর প্রচারে কোন্দলের প্রকাশ ঘটে কি-না, এমন শঙ্কা কারো কারো ছিল।

দলীয় প্রধান গত ১২ জানুয়ারি সাঈদ খোকনকে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য করার পর শঙ্কা কেটে যায়। দুই মেয়র প্রার্থীর পক্ষে ঢাকা সিটির দুই অংশের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের শনিবার (১৮ জানুয়ারি) এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এবার ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দল পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির (ক্লিন ইমেজ) দুই মেয়র প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছে। তাদের পক্ষে গণজোয়ার উঠেছে। তাই তারা বিজয়ী হবেন- এমনটাই আশা।

দেশের মানুষ জানে, কোন প্রার্থীকে ভোট দিলে উন্নয়ন হবে। নির্বাচনের আগে বিএনপি দিবাস্বপ্ন দেখে। তারা যে কোনো নির্বাচনের আগে তাদের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে বলে প্রচার করে। এবার সিটি নির্বাচনে তাদের দিবাস্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে।’

দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান বলেন, ‘ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রচারে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীরা এগিয়ে রয়েছেন। ভোটারদের কাছ থেকে সাড়াও পাওয়া যাচ্ছে। কিছু কিছু ইস্যু উঠে আসছে, আমরা তা মোকাবেলাও করছি।’

নীতিনির্ধারক সূত্র জানায়, গত ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান শুরু হলে আওয়ামী লীগের টিকিটে নির্বাচিত দুই সিটি করপোরেশনের বেশ কয়েকজন কাউন্সিলরের চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও দুর্নীতির তথ্য উঠে আসে। তাদের মনোনয়ন দেওয়া হয়নি এবার। নির্বাচনে বিজয় নিশ্চিত করতে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে জনপ্রিয় মুখ ও সামাজিকভাবে পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির প্রার্থীকে প্রাধান্য দেওয়া হয়।
২০২০ সাল শুরুর আগেই দল ও দলের সহযোগী সংগঠনগুলোকে কেন্দ্রীয় সম্মেলন এবং শুদ্ধি অভিযানের মধ্য দিয়ে নতুন করে সাজিয়ে বিতর্কমুক্ত করার কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয়। এসব বিষয়ও ভোটের মাঠে দলীয় প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় পর্যায়ের কয়েকজন নেতা জানান, জাতির পিতা ও সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষের আয়োজন চলতি বছরের মার্চ থেকে শুরু হচ্ছে।

বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে তার জন্মশতবর্ষের আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগে সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে কোনো বিতর্ক সৃষ্টি হোক, এমনটা ক্ষমতাসীনরা চান না।

রাষ্ট্রের স্থপতি ও বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদযাপন হবে সর্বজনীন, সে লক্ষ্যেই প্রস্তুতি নিচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকার। ফলে দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এবার অনেক সতর্কতার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!