• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জাতীয় ইস্যুতে চাপা পড়ছে বরিশালের স্থানীয় সমস্যা


নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল ডিসেম্বর ২৭, ২০১৮, ০১:১৪ পিএম
জাতীয় ইস্যুতে চাপা পড়ছে বরিশালের স্থানীয় সমস্যা

বরিশাল: সমস্যার শেষ নেই বরিশালে। নদী ভাঙন যেমন গিলে খাচ্ছে মানুষের ঘর বাড়ি। তেমনি শিল্পায়নের অভাবে বেকর পড়ে থাকছে যুব সমাজ। স্বাস্থ্যসেবাও বেহাল এ অঞ্চলে। ভোটাররা স্বপ্ন দেখছেন এসব স্থানীয় সমস্যা ফুটে উঠবে বরিশাল-৫(সদর) আসনের বিভিন্ন দলের প্রার্থীদের প্রচারনায়।

অবশ্য জাতীয় ইস্যুর ভীড়ে চাপা পড়েছে বরিশালের স্থানীয় নানা সমস্যা। সদর আসনের ভোটররা মনে করছেন, স্থানীয় সমস্যা সমাধানে যে প্রার্থী গুরুত্ব দিবে সেই প্রার্থীকেই ভোট দিবে সাধারন  মানুষ।

বরিশাল-৫ (সদর-সিটি করপোরেশন) আসনের প্রধান তিন প্রতিদ্বন্দ্বি আওয়ামী লীগের কর্ণেল (অবঃ) জাহিদ ফারুক শামীম, বিএনপির মজিবর রহমান সরোয়ার এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুফতি ফয়জুল করীম। এসব প্রার্থী বিজয় নিশ্চিত করতে জাতীয় ইস্যু নিয়ে প্রচার চালালেও ঘরের সমস্যা সমাধানে ব কোন প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন না। যার ফলে মিশ্রু প্রতিক্রিয়া সৃস্টি হয়েছে ভোটারদের মাঝে।

বিভাগীয় শহর বরিশালের নাগরিক সমস্যাগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ন কয়েকটি হলো- নদীভাঙ্গনরোধে ব্যবস্থা গ্রহন, কর্মসংস্থানের সৃষ্টির জন্য শিল্পায়নের পরিবেশ তৈরী করা, দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান চিকিৎসাকেন্দ্র শেবাচিম  হাসপাতালের সেবার মান বৃদ্ধি, নদীবেষ্টিত বরিশালে উন্নত নৌযোগাযোগ গড়তে নদী খনন করে নাব্যতা ফিরিয়ে আনা এবং খেলাধুলার আয়োজনের অভাবে নিস্প্রান ষ্টেডিয়ামকে প্রান্তবন্ত করে তোলা।

বরিশাল জরস্বার্থ রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব মুনাওয়ারুল ইসলাম অলি বলেন, কীর্তনখোলার ভাঙন থেকে চরকাউয়া এলাকাকে রক্ষায় তিনি দীর্ঘদিন সংগ্রাম করছেন। সদর উপজেলার পূর্ব অংশ নিয়ে চন্দ্রদ্বীপ নামে একটি নতুন উপজেলা গড়ার দাবী এ অঞ্চলের মানুষের।

এসব সমস্যার সমাধানের কথা প্রার্থীদের মুখ থেকে জনগন শুনতে চান। তাহলে হয়তো ভোটাররা আগ্রহ হবেন ভোট দিতে। বরিশাল স্টেডিয়াম সংলগ্ন বাসিন্দা যুবক মনিরুজ্জামান বলেন, বিভাগীয় শহর হলেও বৃহৎ এ স্টেডিয়ামে খেলা গড়াচ্ছে না। যুবসমাজ তাকেই ভুট দিবে যিনি স্টেযিঅমকে সচল করবেন।

নদীভাঙ্গনরোধ বরিশালে দীর্ঘদিন আন্দোলন করছে ‘আমরা বাঁচতে চাই’ নামক একটি সংগঠন। সংগঠটির সদস্য সচিব আাইয়ুব গাজী বলেন, প্রতিবছর কীর্তণখোলার ভাঙ্গনে চরবাড়িয়া, চরকাউয়া, চরমোনাই ইউনিয়ন এবং সিটি করপোরেশণের বেলতলা ও জাগুয়া এলাকার এক একটি জনপদ বিলীন হচ্ছে। এখানকার জনপ্রতিনিধিদের কাজ যেন ভাঙ্গনের পরদিন এসে ক্ষতিগ্রস্থদের শান্তনা দেয়া এবং কিছু ত্রাণ দিয়ে ফটোসেশন করা।

তিনি বলেন, স্থানীয় সমস্যা যিনি করবেন তিনিই ভোট পাবেন নদী ভাঙ্গুলিদের। সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সদস্য সচিব কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু বলেন, স্থানীয় সমস্যাগুলো জাতীয় উন্নয়নের অন্তর্ভূক্ত করার দায়িত্ব হলো সংসদ সদস্যের। প্রার্থীদের উচিত স্থানীয় সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি নিয়ে নিজস্ব একটি ইশতেহার প্রকাশ করা।

শিবলু বলেন, শেবাচিম হাসপাতাল বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে পরিনত করেছেন চিকিৎসক ও ডায়গণষ্টিক-ক্লিনিক ব্যবসায়ীরা। এই সিন্ডিকেটের কবল থেকে শেবাচিম হাসপাতাল উদ্ধারের দায়িত্বও নির্বাচিত সাংসদকে নিতে হবে। বেকার ঘুরে বেড়াচ্ছে হাজার হাজার যুব সমাজ। ভোলার গ্যাস এনে যিনি এ বরিশালে শিল্প গড়তে পারবে তাকেই জনগন ভোট দিবেন।

বরিশাল মহানগর আ’লীগের সদস্য আনোয়ার হোসেন বলেন, আ’লীগ ক্ষমতায় এলে ৩ বছরের মাথায় বরিশালে মেডিকেল ইউনিভার্সিটি হবে। নদী ভাঙন দ্রুত রোধ করা হবে। ভোলার গ্যাস যে কোন মুল্যে ববরিশালে আনা হবে। তিনি স্বীকার করেন প্রার্থীদের স্থানীয় সমস্যার কথা বলতে হবে, কিন্তু জোরালোভাবে বরঅ হচ্ছে না। তিনি বলেন, সদর আসনের নৌকার প্রার্থী জাহিদ ফারুক শামিমকে তিনি পরামর্শ দিয়েছেন যে এলাকায় প্রচারনা হবে সেই এলাকার সমস্যা সমাধানের কথা যেন বলা হয়।

বরিশাল মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি মনিরুজ্জামান ফারুক বলেন, স্থানীয় সমস্যা প্রচারনায় মোটেই তুলে ধরা হচ্ছে না এটা ঠিক নয়। বিএনপি বিগত সময়ে বরিশালে যে উন্নয়ন করেছে তা তার প্রার্থী সরোয়ার তুলে ধরছেন। পূর্বে মত বিজয় হলে বরিশালের উন্নয়নে বিএনপি গুরুত্ব দিবে।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বরিশাল-৫ নির্বাচন পরিচালনা কমিটি মিডিয়া সমন্বয়ক কে. এম. শরীয়াতুল্লাহ বলেন, তার প্রার্থী বিজয় লাভ করলে স্থানীয় সমস্যা সমাধানে অবশ্যই গুরুত্ব দিবেন। তাদের প্রচারনায় স্থানীয় সমস্যাগুলোর কথা একেবারে নেই বললে চলবে না। এসব সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি পুর্বে বিভিন্ন সময় দেয়া হয়েছে। চলমান প্রচারনায় ভোটারদের কাছে এগুলো তুলে ধরা হবে।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!