• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

জাপাকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে আগাম প্রস্তুতি কাদেরের


বিশেষ প্রতিনিধি জুন ২২, ২০১৯, ০৭:৫৯ পিএম
জাপাকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে আগাম প্রস্তুতি কাদেরের

ঢাকা : জীবনসায়াহ্নে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। দিন যতই যাচ্ছে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটছে তার। তাই নিজের গড়া রাজনৈতিক দল জাতীয় পার্টিকে (জাপা) সঁপে দিয়েছেন ছোট ভাই গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদেরের হাতে। তিনিই এখন পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। এই পদ পেতে মরিয়া ছিলেন এরশাদের স্ত্রী রওশনও।

এছাড়া এরশাদের সাবেক স্ত্রী বিদিশা সিদ্দিকীও জাপার সিঁড়ি বেয়ে রাজনীতিতে আশার স্বপ্ন দেখেছিলেন। এখনো হাল ছাড়েননি, কলকাঠি নাড়ছেন নেপথ্যে থেকে। এ ক্ষেত্রে তিনি পুঁজি করছেন তাদের ছেলে এরিককে।

এদিকে রাষ্ট্র পরিচালনার মতো একক সিদ্ধান্তে দলও পরিচালনা করছেন ‘স্বৈরাচার’খ্যাত এইচএম এরশাদ। দলটিতে নতুন নেতৃত্ব নিয়ে ঘরে-বাইরে দ্বন্দ্ব চরমে। পার্টির একাধিক সিনিয়র নেতার আশঙ্কা, এরশাদবিহীন হলে দলটি ফের খণ্ডিত হতে পারে। এরশাদের জীবদ্দশাতেই দলটি চার খণ্ড হয়েছে। ৩৩ বছরের জাপায় অন্তত ডজনখানেক মহাসচিব বদল হয়েছে। রাজনীতির দাবার শেষ চালে দলের লাটাই গেছে জিএম কাদেরের হাতেই।

এদিকে নদীভাঙনের আগাম আভাসে যেমন প্রস্তুতি নেয় তীরবাসীরা, তেমনি দলের সম্ভাব্য ভাঙনরোধে আগাম প্রস্তুতি নিচ্ছেন কর্ণধার জিএম কাদের। তৃণমূল থেকে দলটিকে সুসংগঠিত করার উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। এ লক্ষ্যে আগামী ২৪ থেকে ২৭ জুন চার দিনব্যাপী নেতা সম্মেলনের আয়োজন করেছে জাতীয় পার্টি। এ সম্মেলনে সারা দেশের দুই হাজার ২৮২ জন নেতা উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। প্রধান অতিথি থাকবেন জিএম কাদের। এরশাদের শূন্যতায় ভাঙন ঠেকাতে জাপার এ সম্মেলনকে আগাম প্রস্তুতি বলেও আখ্যা দিয়েছেন অন্য একাধিক নেতা।

তারা জানান, ’৯০-এর গণ-আন্দোলনে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের পতন এবং তিনি কারাবন্দি থাকাকালে তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান চৌধুরী এ ধরনের একটি সমাবেশ করেছিলেন। ইতোমধ্যে কেটে গেছে প্রায় ২৭ বছর। এই সময়ে দল কয়েক টুকরো হয়েছে। নেতারা ঝরে পড়েছেন। নানামুখী কর্মকাণ্ডে দলটির যেমন নেতাকর্মীর সংখ্যা কমেছে তেমনি ক্ষয় ধরেছে জনসমর্থনে। ওই সময় এরশাদ কারাবন্দি ছিলেন। এবার তিনি অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী। দলের নেতৃত্ব পরিবর্তন, নতুন নেতার সন্ধানসহ বিভিন্ন ইস্যু সামনে রেখে জাপা আবারো ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে।

পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির অন্যতম সমন্বয়ক জহিরুল আলম রুবেল বলেন, চার দিনব্যাপী এ সম্মেলন রাজধানীর মতিঝিল এজিবি কলোনি কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত হবে। ২৪ জুন সাংগঠনিক সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

সম্মেলনে নিজ নিজ বিভাগের জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য, সংসদ সদস্য, উপদেষ্টা, ভাইস চেয়ারম্যান, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক, সম্পাদকমণ্ডলী, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক, যুগ্ম সম্পাদকমণ্ডলী, কেন্দ্রীয় সদস্য, জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, মহানগরের থানাগুলোর সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবদের উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রথম দিন থাকবেন ঢাকা-ময়মনসিংহ বিভাগের ঢাকা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ, ঢাকা মহানগর উত্তর, গাজীপুর, গাজীপুর মহানগর, নারায়ণগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ মহানগর, মুন্সীগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, ময়মনসিংহ, ময়মনসিংহ মহানগর, নেত্রকোনা, শেরপুর, জামালপুর, টাঙ্গাইল ও নরসিংদী এলাকার জাপা নেতারা।

দ্বিতীয় দিন ২৫ জুন রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের রাজশাহী জেলা, রাজশাহী মহানগর, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বগুড়া, জয়পুরহাট, নাটোর, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, রংপুর জেলা, রংপুর মহানগর, দিনাজপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও ঠাকুরগাঁও।

তৃতীয় দিন ২৬ জুন চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অন্তর্ভুক্ত জেলা, চট্টগ্রাম উত্তর, চট্টগ্রাম দক্ষিণ, চট্টগ্রাম মহানগর, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, রাঙামাটি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা উত্তর, কুমিল্লা দক্ষিণ, কুমিল্লা মহানগর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, সিলেট, সিলেট মহানগর, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ।

সবশেষে ২৭ জুন চতুর্থ দিনের সম্মেলনে অংশ নেবেন খুলনা-বরিশাল বিভাগের নেতারা। খুলনা, খুলনা মহানগর, নড়াইল, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা, কুষ্টিয়া, বাগেরহাট, মেহেরপুর, সাতক্ষীরা, বরিশাল, বরিশাল মহানগর, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর ও ঝালকাঠি জেলা।

ঢাকা আসা নেতাদের কাছ থেকে অতীতের অভিজ্ঞতা, সামনের দিনের জন্য পরামর্শ চাওয়া হবে। তাদের চাহিদার ভিত্তিতেই পরবর্তী করণীয় ঠিক করবেন বলে জানান রুবেল।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!