• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জাবিতে পাখি প্রেমীদের উপচেপড়া ভীড়


জাবি প্রতিনিধি জানুয়ারি ২৪, ২০২০, ০৭:৩৯ পিএম
জাবিতে পাখি প্রেমীদের উপচেপড়া ভীড়

জাবি : পাখি সংরক্ষণে গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে 'পাখ-পাখালি দেশের রত্ন, আসুন করি সবাই যত্ন' এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘পাখি মেলা-২০২০’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মেলা উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাখিপ্রেমী দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। অধিকাংশই রাজধানী ঢাকা থেকে পরিবারসহ মেলা দেখতে ক্যাম্পাসে এসেছেন। কচি-কাচা বাচ্চা পাখি প্রেমীদের পদচারণায় মেলা প্রাঙ্গণ পেয়েছে নতুন মাত্রা।

শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের আয়োজনে জহির রায়হান মিলনায়তন প্রাঙ্গণে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম বেলুন উড়িয়ে এ মেলার উদ্বোধন করেন।

মেলা উদ্বোধনকালে উপাচার্য বলেন, পাখি জনজীবনের সাথে গভীরভাবে সম্পৃক্ত। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়  কর্তৃপক্ষ পাখির অভয়ারণ্য নিরাপদ রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এজন্য পাখিবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে অনেক জলাশয় লিজমুক্ত রাখা হয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পাখির বসবাস উপযোগী পরিবেশ অক্ষুণ্ন আছে বলেই প্রতি বছর শীত মৌসুমে দূর-দূরান্ত থেকে পরিযায়ী পাখি নিয়মিতভাবে ক্যাম্পাসে ছুটে আসে।

উপাচার্য আরও বলেন, পাখি মেলায় এসে বাচ্চারা আনন্দ পায় এবং নানা প্রজাতির পাখির সঙ্গে পরিচিত হবার সুযোগ পায়। এই পরিচয়ের সূত্র ধরে দর্শকগণ পাখিপ্রেমী হয়ে উঠেন।

ঢাকার বনানী থেকে পরিবার নিয়ে এসেছেন মো. আব্দুল হাই। তিনি বলেন, খুবই ভালো লাগছে এরকম চমকপ্রদ আয়োজন দেখে। জাহাঙ্গীনগরের প্রকৃতি সত্যি অসাধারণ। প্রতিবছর সবুজ শ্যামল ক্যাম্পাসে পাখি দেখতে আসি।

উত্তরা থেকে এসেছে ৪র্থ শ্রেণীর ছোট শিশু তুলি। পাখি আমাকে খুব ভালো। আব্বুর কাছে শুনেছি এ ক্যাম্পাসে বিদেশ থেকে পাখি আসে। তাই দেখতে এসেছি।

সাভার এলাকার ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র আবরার রাইম বলে, পাখি মেলায় কৃত্রিম পাখি দেখে নতুন নতুন পাখি সম্পর্কে ধারণা পাচ্ছি। পাখি দেখতে খুব ভালো লাগে। প্রকৃতিতে পাখি আমাকে কাছে টানে। এসে খুব ভাল লাগছে।

মেলার আহ্বায়ক ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, অনেক প্রজাতির পাখি নানা কারণে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। তাই বিলুপ্তপ্রায় পাখির প্রজাতি রক্ষার্থে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। আগে গ্রাম বা নগরে অনেক জলাশয় ও বন ছিল। সেখানে পাখি আসতো। সেই পাখির ডাকে ঘুম ভাঙত সকলের। বেপরোয়া ও অপরিকল্পিত নগরায়ন এবং বৃক্ষ নিধনের ফলে সবুজ প্রকৃতি ও পাখ-পাখালির বসবাসের পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। সেই বিষয়ে এখনই সকলকে সচেতন হতে হবে।

এবছর পাখিমেলায় বিগ বার্ড ২০১৯ সম্মাননা, পাখি বিষয়ক সেরা প্রতিবেদন পুরস্কার প্রদান করা হয়। দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত পাখিমেলায় ছোটদের পাখি বিষয়ক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, কুইজ, বই-পোস্টার প্রদর্শনী, সংরক্ষিত বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, পাখি দেখা, পাখি চেনার প্রতিযোগিতা, পাখি বিষয়ক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। পাখি দেখা প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দেবপ্রিয় বিশ্বাস, সুলতান আহমেদ, আশিকুর রহমান, তাহসিনা সানিয়াত এবং দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিমূল নাথ, দুর্জয় রাহা অন্তু, আনিতা শাহরিয়ার ও সজীব বিশ্বাস।

পাখিমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের  অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ, অধ্যাপক ড. মো. মফিজুল কবির, বায়োটেকনোলজি এ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সোহায়েল, বিশিষ্ট পাখিবিশারদ ড. ইনাম আল হক, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু, আইসিইউএন বাংলাদেশ প্রতিনিধি রাকিবুল আমিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!