• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

জাবিতে ফের র‌্যাগিং!


জাবি প্রতিনিধি এপ্রিল ১৬, ২০১৯, ০৬:৩১ পিএম
জাবিতে ফের র‌্যাগিং!

জাবি : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের পর এবার সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যায়ন বিভাগে র‌্যাগিংয়ের ঘটেছে। সোমবার (১৫ এপ্রিল) রাত ৮টায় উক্ত বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থী প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠে নিয়ে ম্যানার শেখানোর নামে এই নির্যাতন করে বলে অভিযোগ করেছেন র‌্যাগিংয়ের শিকার কয়েকজন শিক্ষার্থী।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা মৌখিক অভিযোগ করেছেন বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক আ স ম ফিরোজ উল হাসান।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জানা যায়, সোমবার বিভাগের আয়োজনে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট হলে খেলা দেখার জন্য প্রথম বর্ষের সকল শিক্ষার্থীকে মাঠে যেতে বলেন উক্ত বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা। কিন্তু প্রথম বর্ষের মাত্র ১০-১৫ জন শিক্ষার্থী মাঠে যায়। সকলে মাঠে না যাওয়ার কারণে রাত ৮টায় তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ডাকেন দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা।

এ সময় প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের অকথ্য ভাষায় গলিগালাজ ও কান ধরে দাঁড় করিয়ে রাখাসহ ও হাত পা মুড়িয়ে বসিয়ে রাখেন তারা। এ সময় দ্বিতীয় বর্ষের রাইসুল ইসলাম রাজু নামের এক শিক্ষার্থী উত্তেজিত হয়ে প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থীর দিকে জুতা নিক্ষেপ করে। এ ছাড়া অনেক শিক্ষার্থীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয় বলেও অভিযোগ করেন তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘বড় ভাইয়েরা আমাদের সংশোধনের জন্য বিভিন্ন উপদেশ ও পরামর্শ দিবেন এজন্য তাদের ডাকে আমরা কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে গিয়েছিলাম। কিন্তু তাদের এ ধরনের ব্যবহার আমাদের প্রত্যাশিত ছিল না’।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা আরও জানান, শহীদ সালাম বরকত হলের হারুনুর রশিদ, বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের এনামুল হক তামীম, মওলানা ভাসানী হলের রাইসুল ইসলাম রাজু, তাওসিফ আব্দুল্লাহ, স্টিব সলগা রেমা, জাকির হোসেন জীবন, মাহবুবুর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া হলের সারা বিনতে সালাহ, প্রীতিলতা হলের সায়মা লিমা, ফাবিয়া বিনতে হকসহ আরও ৩-৪ জন এ সময় র‌্যাগিং-এর ঘটনায় জড়িত ছিলেন।

এদিকে খবর পেয়ে রাত ১০টায় ঘটনাস্থলে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর। এ সময় প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা প্রক্টরের কাছে ঘটনা বর্ণনা করে মৌখিকভাবে অভিযোগ দেন। জানা যায় প্রক্টরিয়াল টিমের কাছে অভিযোগের রেকর্ডও রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বিভাগ থেকে ভুক্তভোগীদের মঙ্গলবার লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায় মঙ্গলবার সারাদিন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদেরকে অভিযুক্তরা ও বিভাগের আরও বেশ কিছু সিনিয়র অভিযোগপত্র না দেওয়ার জন্য চাপ দেয়। বিভাগে পাঁচ বছর থাকতে হবে। সিনিয়রদের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করে বিভাগে ঠিকে থাকা তাদের জন্য কঠিন হবে বলে ভয় দেখায়।

এ বিষয়ে বিশ্বদ্যিালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, রাত ১০টার দিকে প্রথমবর্ষের এক শিক্ষার্থী ও বিভাগের সভাপতির কাছ থেকে কল পেয়ে আমরা ঘটনা স্থলে যাই। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) তাদের লিখিতভাবে অভিযোগ দেওয়ার কথা। কিন্তু তারা অভিযোগ দিতে ভয় পাচ্ছে। ভয়ের কোনো কারণ নেই। তবে তারা যদি ইচ্ছে করে ঘটনা অস্বীকার করে প্রশাসনকে ভুল তথ্য দেওয়ার অভিযোগে আমাদের তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

এ ব্যাপারে সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যায়ন বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক শেখ আদনান ফাহাদ বলেন, ‘আমরা মৌখিকভাবে জেনেছি। বিভাগ থেকে বিষয়টা খতিয়ে দেখছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় প্রশাসনকে ঘটনা তদন্তে সহযোগিতা করব।’ ভুক্তভোগীদের চাপ দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘চাপে থাকার কিছুই নেই। আমি ব্যক্তিগতভাবে র‌্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে খুবই সোচ্চার। লিখিত অভিযোগ না দিলেও আমরা বিভাগ থেকে ঘটনার সত্যতা জানার জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করব।’

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!