• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জাবিতে শিক্ষকদের নতুন জোট, নেপথ্যে কী?


জাবি প্রতিনিধি জানুয়ারি ২৫, ২০১৯, ০৬:৪৪ পিএম
জাবিতে শিক্ষকদের নতুন জোট, নেপথ্যে কী?

জাবি : আগামী ৩১ জানুয়ারি শিক্ষক সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত বুধবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ’ নামে শিক্ষকদের একটি নতুন জোট আত্মপ্রকাশ করেছে।

এই জোটে আওয়ামী লীগের ভিসিবিরোধী শিক্ষকদের সংগঠন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ, বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের নেতৃবৃন্দ ও বামপন্থী শিক্ষকরা রয়েছেন। জোটের যৌথ মুখপাত্র হিসেবে আওয়ামীপন্থী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের সভাপতি অজিত কুমার মজুমদার ও বিএনপন্থী শিক্ষক অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিমের নাম ঘোষণা করা হয়।

উল্লেখ্য, গতবছর ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের পুনঃনিয়োগ নিয়ে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন। আওয়ামীপন্থীদের সংগঠন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ ভেঙ্গে ভিসিপন্থীরা বঙ্গবন্ধু-আদর্শের শিক্ষক পরিষদ নামে নতুন দল গঠন করেন। বিভক্ত আওয়ামী লীগের ভিসিপন্থী অংশ বিএনপি ও বামপন্থীদের ভোট নিয়ে সেবার শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে সভাপতি সাধারণ সম্পাদকসহ সংখ্যাগরিষ্টতা অর্জন করে। কিন্তু গত ১ বছরে বিএনপিপন্থীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সে সম্পর্কে ফাটল ধরেছে।

অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা অনিয়ম নিয়ে বামপন্থী শিক্ষকরা প্রশাসনের প্রতি অসন্তুষ্ট। তাছাড়া শিক্ষকদের বাসা ভাড়া ভাতা ১৫% কমানো প্রতিবাদে শিক্ষক সমিতি কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বলে অধিকাংশ শিক্ষকদের মতো।

মূলত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই জোট গঠিত হলেও এর নৈপথ্যে কাজ করেছে এরকম বেশ কিছু ইস্যু। তাছাড়া এক বছর আন্দোলন করেও উপাচার্য বিরোধী আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা উপাচার্যকে কোণঠাসা করতে পারেননি। তাই শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে যেকোনো মূল্যে তারা জিতে নতুন উদ্যমে আন্দোলনকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যেতে চান।

তাই বিএনপিপন্থীদের জোটে আনতে আওয়ামীপন্থী এই অংশ সর্বোচ্চ ছাড় দেওয়ার মানসিকতা দেখিয়েছে। তারই অংশ হিসেবে শিক্ষক সমিতির ১৫টি পদের মধ্যে সাধারণ সম্পাদক ও ট্রেজারারসহ ৭টি পদ বিএনপিপন্থীদের ১টি পদ বামপন্থী শিক্ষকদের ছেড়ে দিয়ে ‘সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ’-এর প্যানেল ঘোষণা করা হয়।

জোটে বামপন্থীদের অবস্থান জানতে শিক্ষক মঞ্চের মুখপাত্র অধ্যাপক রায়হান রাইনকে ফোন দেওয়া হলে তিনি ফোন ধরেননি। পরে মোবাইলে ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও তিনি কোন জবাব দেননি।

সম্মিলিত শিক্ষক সমাজের মুখপাত্র বিএনপিপন্থী শিক্ষক অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম বলেন, ‘এটা শুধু নির্বাচনকালীন জোট নয়। প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত ও শিক্ষক স্বার্থ রক্ষার জন্য এই জোট সবসময় বহাল থাকবে।’

এই জোটের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী অধ্যাপক সোহেল রানা বলেন, ‘আমরা নির্বাচিত হলে  বিশ্ববিদ্যালয়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠা, শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিতকরণে কাজ করে যাব এবং পরিশেষে একটি বিশ্ববিদ্যালয় বান্ধব শিক্ষক সমিতি গড়ে তুলব।’

অন্যদিকে শিক্ষক সমিতির বর্তমান সম্পাদক ও ভিসিপন্থী ‘বঙ্গবন্ধু-আদর্শের শিক্ষক পরিষদ’-এর সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক বশির আহমেদ বলেন, ‘আমাদের যে জোট তাহলো আদর্শিক জোট, প্রতিপক্ষ প্যানেল একটি নির্বাচনকালীন জোট। গতবার আমরা বিএনপির সঙ্গে নির্বাচন করিনি তবে তারা হয়ত আমাদের ভোট দিয়েছে। আমরা গত এক বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থ ও শিক্ষকদের স্বার্থ নিয়ে কাজ করেছি। তাই আশা করছি শিক্ষকরা আমাদের ভোট দেবেন।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষকদের মধ্যে হাতাহাতির যে দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে সেখানে আমি গিয়ে থামিয়েছি। শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমি চেয়েছি এই ঘটনার বিচার হউক। কিন্তু একটি পক্ষ তদন্ত কমিটিকে কোনো ধরনের সহযোগিতা করেনি।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!