• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জামায়াত বিতর্ক এড়াতে নতুন মিশনে বিএনপি


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ২৩, ২০১৯, ১০:৪১ এএম
জামায়াত বিতর্ক এড়াতে নতুন মিশনে বিএনপি

ঢাকা: এখন থেকে যৌথভাবে কোনো কর্মসূচি পালন করবে না ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। জামায়াতে ইসলামী নিয়ে বিতর্ক এড়াতেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুই জোটেরই নেতৃত্বে থাকা বিএনপির নেতারা।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বেশ কয়েকটি জেলার জনসভায় জামায়াতে ইসলামী ছাড়া ২০ দলের অন্য শরিকরা অংশ নিয়েছিল। কিন্তু নির্বাচনের পর জামায়াত ইস্যুতে ঐক্যফ্রন্টে থাকা গণফোরাম তাদের আপত্তির কথা স্পষ্ট জানিয়েছে।

তাই ভবিষ্যতে যে কোনো ইস্যুতে আলাদা কর্মসূচি পালনে এ সিদ্ধান্ত দুই জোটের। ঐক্য টিকিয়ে রাখার স্বার্থে এ সিদ্ধান্তে রাজি গণফোরামও।

এদিকে ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারাভোগের এক বছর পূর্ণ হবে। এ উপলক্ষে তার মুক্তির দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করতে যাচ্ছে বিএনপিসহ দুই জোট।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে।

তাকে হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে, প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য আটকে রাখা হয়েছে। ৮ ফেব্রুয়ারি দেশমাতা খালেদা জিয়ার কারাভোগের এক বছর হবে। আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত আছে, আগামী দিনেও থাকবে।

২০ দলীয় জোটের প্রধান সমন্বয়কারী এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমদ বলেন, কর্মসূচির বিষয়ে ২০ দলীয় জোটে এখন পর্যন্ত কোনো আলাপ-আলোচনা হয়নি।

ঐক্যফ্রন্ট পৃথক একটি সত্তা। ২০ দল পৃথক জোট। ঐক্যফ্রন্টের প্রোগ্রামের সঙ্গে আমাদেরটা এক হবে না। জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই সংকটে ছিল বিএনপি।

ড. কামাল হোসেনের দল গণফোরামসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল বিএনপির সঙ্গে জোট গড়তে দেরি করে মূলত জামায়াতের কারণে। পরবর্তী সময়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে নতুন জোট হলেও শুরুর দিকে বিভিন্ন জনসভায় ২০ দলে থাকা অন্য শরিক দলগুলোর (জামায়াত বাদে) শীর্ষ নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হতো না। এ নিয়ে শরিকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

পরে নির্বাচনের এক মাস আগে থেকে রাজশাহীসহ বেশ কয়েকটি জেলার জনসভায় এলডিপির কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, কল্যাণ পার্টির মে. জে. (অব.) সৈয়দ মুহম্মদ ইবরাহিমসহ জোটের শীর্ষ নেতাদের (জামায়াত বাদে) আমন্ত্রণ জানালে তারা যোগও দেন।

কিন্তু জামায়াত নেতাদের ধানের শীষ প্রতীক দিয়ে আসন ছাড় দেয়ায় নির্বাচনের পর অসন্তোষ ব্যক্ত করেন ড. কামাল হোসেন।

এক সংবাদ সম্মেলনে গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেন, নির্বাচনে জামায়াতের ২২ নেতাকে যে ধানের শীষ প্রতীক দেয়া হবে, তা তিনি জানতেন না।

জামায়াতের সঙ্গে একই প্রতীকে ভোট করাকে অনিচ্ছাকৃত ভুল বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, জামায়াত ছাড়তে বিএনপিকে চাপ দেয়া যেতে পারে। এরপর থেকেই বিএনপি ‘কৌশলী’ অবস্থান নিয়েছে।

সূত্র জানায়, ১৫ জানুয়ারি ঐক্যফ্রন্ট নেতারা সিলেট সফরে গেলেও সেখানে ২০ দলীয় জোটের শরিকদের কাউকে নেয়া হয়নি। তারা ভোটের দিন সহিংসতায় নিহত সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদল নেতা সায়েম আহমেদ সোহেলের কবর জিয়ারত ও তার পরিবারকে সহমর্মিতা জানাতে যান।

২১ জানুয়ারি ঐক্যফ্রন্ট নেতারা লালমনিরহাটে যান ভোটের দিন সহিংসতায় নিহত তোজাম্মেল হকের বাড়িতে। দ্বিতীয় দফার সফরেও নেয়া হয়নি ২০ দলীয় জোট শরিকদের কাউকে।

দুই জোটের একাধিক নেতা বলেন, ঐক্যফ্রন্টের কোনো কর্মসূচিতে ২০ দলকে জড়াতে চাইছে না বিএনপি। তারা দুই জোটের ঐক্য ধরে রাখাকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। এটা হয়তো বিএনপির একটি কৌশল।

তবে নির্বাচন-পরবর্তী দুই জেলায় সফর ছিল ঐক্যফ্রন্টের বৈঠকের সিদ্ধান্ত। ২০ দলের কোনো বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত ছিল না।

ওই নেতারা আরও জানান, সামনের যে কোনো কর্মসূচি ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দল পৃথকভাবে পালন করবে। আর এটি বিএনপি দুই জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করেই করবে।

এদিকে খালেদা জিয়াকে কারাগারে নেয়ার পর থেকে দলটি তার মুক্তির জন্য মানববন্ধন, কালো পতাকা প্রদর্শন, অবস্থান, অনশন, স্মারকলিপি দেয়াসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছিল। তথ্যসূত্র- যুগান্তর।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!