• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জিকে শামীম আরেকটু হলেই পালাতেন


সোনালীনিউজ ডেস্ক সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৯, ১১:৪২ এএম
জিকে শামীম আরেকটু হলেই পালাতেন

ঢাকা : বিপুল অর্থ, এফডিআর, নথি ও অস্ত্রসহ গ্রেফতার জি কে শামীম দেশ ছেড়ে পালাতে চেয়েছিলেন। ক্যাসিনো ডন খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার গ্রেফতারের পর দিনই ঘনিষ্টজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে দেশ ছাড়ার সহযোগিতা চান শামীম।

গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, বিদেশ পাড়ি দিতে শামীম বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ করেন। কিন্তু আগে থেকেই তথ্য থাকায় তার ওপর নজরদারি ছিল র‌্যাবের। তিনি কোথায় যাচ্ছেন, কী করছেন তা নজরে রাখছিল র‌্যাবের গোয়েন্দা টিম।

র‌্যাব সূত্র জানায়, বিদেশ যাওয়ার সুযোগ খুঁজতে শুক্রবারও তার কার্যালয় খোলা রেখেছিলেন। বিষয়টি টের পেয়ে ওই দিনই অভিযান চালানো হয়।

র‌্যাব সূত্র জানায়, শামীম যাতে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে না পারে সেজন্য বিমানবন্দরে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে বিশেষ বার্তা দেয়া ছিল। শামীম ছাড়াও তালিকায় থাকা আরো বেশ কয়েকজন নেতার নামও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে দেয়া হয়েছে। তাদের দেশত্যাগের বিষয়েও নজরদারি রয়েছে।

এর আগে গ্রেফতার ক্যাসিনো ডন খালেদ মাহমুদও সিঙ্গাপুরে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলে। কিন্তু আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় তিনি দেশ ছাড়তে পারেননি।

এরআগে শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর নিকেতনের ব্যবসায়িক কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে জি কে শামীমকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। তার কার্যালয় থেকে বিপুল অর্থ, এফডিআর নথি, মাদক এবং অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। ঢাকায় সরকারি কাজের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করে শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন শামীম। গ্রেফতারের পর তাকে নিয়ে নানা চমকপ্রদ তথ্য বের হয়ে আসছে।

এরও আগে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) মতিঝিলের ইয়ংমেন্স ক্লাবে অভিযান চালায় র‌্যাব। এর নিয়ন্ত্রণকারী যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গুলশানের বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। ওই ক্লাব থেকে বিপুল ক্যাসিনো সামগ্রি, নগদ অর্থ ও মাদক উদ্ধার করা হয়। এটিসহ অন্তত ১৭ টি ক্যাসিনো ক্লাবের সঙ্গে খালেদ জড়িত। এসব ক্লাব থেকে মাসে কোটি টাকা আয় করতেন তিনি। এছাড়া চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের নানা অভিযোগ রয়েছে খালেদের বিরুদ্ধে। খালেদের বিরুদ্ধে অভিযানের পর থেকে মূলত আন্ডার ওয়ার্ল্ডের সন্ত্রাসী, চিহ্নিত চাঁদাবাজ ও টেন্ডারবাজরা সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। তাদের কেউ কেউ দেশ ছেড়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। কেউ ইতোমধ্যে দেশ ছেড়েছে।

এদিকে শামীমকে আটকের ঘোষণা দেয়ার পরপরই তাঁর অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তা জি কে বি অ্যান্ড কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেডের নামে পাওয়া টেন্ডারের তথ্য সাংবাদিকদের সরবরাহ করেন। তাদের একজন দিদার। তিনি নিজেকে জি কে শামীমের পিএস বলে দাবি করেন।

দিদারের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, জি কে শামীম জি কে বি অ্যান্ড কোম্পানি (প্রাইভেট) লিমিটেডের নামে বড় বড় ১৭টি প্রকল্পের কাজ পেয়েছেন। এর মধ্যে ৪০০ কোটি টাকার কাজ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের। ৩০০-৩৫০ কোটি টাকার কাজ পঙ্গু হাসপাতালের।

এ ছাড়া বড় প্রকল্পের মধ্যে ৫০০ কোটি টাকার র‌্যাব হেডকোয়ার্টার, সচিবালয়ে ১৫০ কোটি টাকার অর্থ মন্ত্রণালয়ের নতুন ভবন, ১৫০ কোটি টাকার কেবিনেট ভবন, ৪০০ কোটি টাকার এনবিআর, ২০০ কোটি টাকার মহাখালী ডাইজেস্টিভ এবং বেইলি রোডে ৩০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প রয়েছে।

এর পাশাপাশি ২০-২৫ কোটি টাকার অ্যাজমা, ২০-২৫ কোটি টাকার ক্যাসার, ২০-২৫ কোটি টাকার সেবা মহাবিদ্যালয়, ৮০ কোটি টাকার নিউরোসায়েন্স, ৮০ কোটি টাকার বিজ্ঞান জাদুঘর, ১২ কোটি টাকার পিএসসি, ৩০-৬০ কোটি টাকার র‌্যাব ফোর্স, ৬৫ কোটি টাকার এনজিও ফাউন্ডেশন এবং মিরপুর-৬ তে ৩০ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ রয়েছে জি কে শামীমের হাতে।

এসব প্রকল্পের তথ্য দিয়ে দিদার বলেন, ‘জি কে শামীম স্যার সম্মানী ব্যক্তি। সরকারের বড় বড় প্রায় সব প্রকল্পের কাজ তিনি পেয়েছেন। সুতরাং স্যারের কাছে কোটি টাকা থাকা কোনো ব্যাপার না।

সোনালীনিউজ/এএস

Wordbridge School
Link copied!