• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জিপিএ ৫ পাওয়া অর্ধেকের বেশি শিক্ষার্থীর জন্য দুঃসংবাদ


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ২, ২০২০, ০৮:৩৪ এএম
জিপিএ ৫ পাওয়া অর্ধেকের বেশি শিক্ষার্থীর জন্য দুঃসংবাদ

ঢাকা: পর্যাপ্ত আসন না থাকায় এবার মেধার বিচারে এগিয়ে থাকা জিপিএ ৫ পাওয়া অর্ধেকের বেশি শিক্ষার্থী তাদের চাহিদা মতো ভালো কলেজে ভর্তির সুযোগই পাবে না। এ বছর জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা এক লাখ ৩৫ হাজার ৮৯৮ জন। কিন্তু ভালো কলেজে আসন রয়েছে ৫০ হাজারের মতো। অর্থাৎ সাধারণ হিসাবেই ৮৬ হাজার মেধাবী শিক্ষার্থী ভালো কলেজে ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে।

রোববার এসএসসির ফলাফল হাতে পেয়ে শিক্ষার্থীরা আনন্দ আর উচ্ছ্বাসে মাতোয়ারা হলেও মাত্র একদিন পরেই ভর্তি নিয়ে তারা রীতিমতো উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় পড়েছে। অভিভাবকদের মধ্যেও সন্তানের কলেজে ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে। তারা অনেকে জানিয়েছেন, সারা দেশে ভালো মানের কলেজে আসনসংখ্যা সীমিত। এ জন্য ভালো ফল করেও সেরা কলেজে ভর্তি হওয়া নিয়ে অনেকের মধ্যে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

এ দিকে বিগত বছরগুলোর অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে ভালো এবং মানসম্পন্ন কলেজগুলোতেই আবেদন জমা পড়ে বেশি। অনেক কলেজে আসনের দশগুণের বেশি আবেদন জমা পড়ে।

গত কয়েক বছরে অনলাইনে যেসব প্রতিষ্ঠানে ভর্তির আবেদন বেশি পড়েছে সে হিসাবে মানসম্মত প্রতিষ্ঠান রয়েছে ঢাকা বিভাগে ৭৫টি, রংপুর বিভাগে ৩২টি, বরিশাল বিভাগে ১৪টি, রাজশাহী বিভাগে ৭টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৯টি, খুলনা বিভাগে ১৩টি এবং সিলেট বিভাগে ২৩টি।

এসব কলেজের নিজস্ব জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীরা ভিড় করলে সবার সংস্থান হবে না। এর বাইরে সংশ্লিষ্ট এলাকার সাধারণ ৯টি শিক্ষা বোর্ডের বাইরে অন্য দুই শিক্ষা বোর্ড থেকে শিক্ষার্থীরা ভর্তির আবেদন করবে। ফলে দেখা দিবে ভর্তিসঙ্কট। এ অবস্থায় জেলা ও জেলার বাইরের প্রতিষ্ঠানগুলোর মানোন্নয়নে গুরুত্ব দিয়েছেন শিক্ষাবিদরা।

এ বিষয়ে শিক্ষানীতি-২০১০ প্রণয়ন কমিটির সদস্য অধ্যাপক একরামুল কবির জানান, গত বছরের তুলনায় এবার জিপিএ ৫ এবং পাসের হার দু’টিই বেড়েছে। এতে করে শিক্ষার্থীরা ভর্তি নিয়ে একটা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়তে পারে। কেননা বেশির ভাগ ভালো রেজাল্টধারী শিক্ষার্থীরা ভালো প্রতিষ্ঠান পছন্দ দিয়ে থাকে। কয়েক ধাপে আবেদন করেও অনেকে শিক্ষার্থী নিজেদের পছন্দের প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পায় না। এ ক্ষেত্রে ভালো প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সুবিধা মতো বদলির সুযোগ রাখা প্রয়োজন। এতে সেসব প্রতিষ্ঠানের মান বাড়বে এবং শিক্ষার্থীরা সেখানে যেতে আগ্রহী হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো: আখতারুজ্জামান মনে করেন, বর্তমানে অনেক কলেজ রয়েছে যেগুলো ভালো সুনাম কুড়িয়েছে। শিক্ষার্থীদের সেগুলোর প্রতি আগ্রহ বেশি থাকে। তারা সেখানে আবেদন করে। এ ক্ষেত্রে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আনতে হবে।

এ দিকে আগামী ৭ জুন থেকে একাদশ শ্রেণীর ভর্তিকার্যক্রম শুরুর কথা থাকলেও শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত কলেজে ভর্তির কার্যক্রম শুরু করা যাবে না। প্রয়োজনে আমরা আরো সময় নিয়ে পরিস্থিতির উন্নতির জন্য অপেক্ষা করব। যদিও এসএসসির ফল প্রকাশের এক সপ্তাহ পর থেকেই একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির কার্যক্রম শুরু করার জন্য গত ১৭ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছে আন্তঃশিক্ষা সমন্বয়ক বোর্ড। এক মাস ২০ দিন জুড়ে তিনটি ধাপে অনলাইনে ভর্তিকার্যক্রম পরিচালনা করা হবে বলে জানায় তারা। তবে এখন শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন পাওয়ার পরেই একাদশ শ্রেণীতে ভর্তিকার্যক্রম শুরু করা হবে।

উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তি সংক্রান্ত কমিটির তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে সাড়ে ৮ হাজার কলেজে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তিযোগ্য আসন রয়েছে প্রায় ২০ লাখ, যার মধ্যে মানসম্মত কলেজের সংখ্যা মাত্র পৌনে দুই শ’।

সোনালীনিউজ/এইচএন

Wordbridge School
Link copied!