• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ


ক্রীড়া ডেস্ক সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৯, ১০:১১ পিএম
জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ

ঢাকা: চলতি ত্রিদেশীয় সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে মুখোমুখি হয় স্বাগতিক বাংলাদেশ এবং জিম্বাবুয়ে। টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান জিম্বাবুয়ের দলপতি হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ তুলেছে ১৭৫ রান। ফিফটির দেখা পান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বাংলাদেশের ছুঁড়ে দেওয়া ১৭৬ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে জিম্বাবুয়ে ২০ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে তোলে ১৩৬ রান। ফিফটির দেখা পান রিচমন্ড মুতুম্বামি।

ফলে হ্যামিল্টন মাসাকাদজার জিম্বাবুয়েকে ৩৯ রানে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করলো সাকিবের দল। আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে ফাইনালে নামবে টাইগাররা। তিন দলের এখনও একটি করে ম্যাচ বাকি আছে। এরই মধ্যে বিদায় নিতে হলো জিম্বাবুয়েকে। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় ম্যাচটি শুরু হয়। ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করে গাজী টিভি।

বাংলাদেশের একাদশে আসে তিন পরিবর্তন। বাদ পড়েছেন সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমান এবং তাইজুল ইসলাম। একাদশে এসেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত, আমিনুল ইসলাম এবং শফিউল ইসলাম। এরমধ্যে নাজমুল এবং আমিনুলের অভিষেক হচ্ছে। আর জিম্বাবুয়ের একাদশ থেকে ছিঠকে গেছেন তেন্দাই চাতারা এবং ক্রেইগ আরভিন। দলে ঢুকেছেন ক্রিস এমপফু এবং রিচমন্ড মুতুম্বামি। ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের পঞ্চম ওভারে বিদায় নেন অভিষিক্ত ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত। দলীয় ৪৯ রানের মাথায় বিদায় নেন এই বাঁহাতি ওপেনার। তার আগে ৯ বলে একটি বাউন্ডারিতে করেন ১১ রান। 

স্কোরবোর্ডে আর ৬ রান যোগ হতেই বিদায় নেন আরেক ওপেনার লিটন দাস। তার আগে স্বাগতিকদের ভালো সূচনা এনে দেন লিটন। এমপফুর বলে মাদজিভার দুর্দান্ত ক্যাচে ফেরার আগে লিটন ২২ বলে ৩৮ রান করেন। দুটি ছক্কার পাশাপাশি চারটি চারের মার ছিল লিটনের ব্যাটে। উইকেটে থিতু হওয়ার আগেই ফেরেন দলপতি সাকিব আল হাসান। রায়ান বার্লের বলে উইলিয়ামসের হাতে ধরা পড়ার আগে সাকিব ৯ বলে এক বাউন্ডারিতে করেন ১০ রান। প্রথম ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১ রান আর দ্বিতীয় ম্যাচে আফগানদের বিপক্ষে সাকিব করেছিলেন ১৫ রান। এরপর জুটি গড়েন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং মুশফিকুর রহিম। তারা যোগ করেন আরও ৭৮ রান। 

ইনিংসের ১৭তম ওভারে উইকেটের পেছনে ধরা পড়ার আগে মুশফিক করেন ২৬ বলে তিন চার আর এক ছক্কায় ৩২ রান। দলীয় ১৪৩ রানের মাথায় বাংলাদেশ চতুর্থ উইকেট হারায়। ১৯তম ওভারে ছক্কা হাঁকিয়ে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে চতুর্থ ফিফটির দেখা পান রিয়াদ। একই ওভারে আফিফ হোসেন (৮ বলে ৭) উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। রিয়াদ শেষ ওভারে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বাউন্ডারি সীমানায় ধরা পড়েন। তার আগে ৪১ বলে করেন ৬২ রান। তার ইনিংসে ছিল একটি চার আর পাঁচটি ছক্কার মার। পরের বলেই কাইল জারভিস বিদায় করেন ২ রান করা মোসাদ্দেক হোসেনকে। 

সাইফউদ্দিন ৬ এবং অভিষিক্ত আমিনুল ইসলাম ০ রানে অপরাজিত থাকেন। ৪ ওভারে ৪২ রান খরচায় এমপফু দুটি উইকেট তুলে নেন। কাইল জারভিস ৪ ওভারে ৩২ রান দিয়ে পান তিনটি উইকেট। একটি করে উইকেট পান মুতুমবোদজি আর রায়ান বার্ল। ১৭৬ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। সাইফউদ্দিন ফিরিয়ে দেন ব্রেন্ডন টেইলরকে। পরের ওভারে সাকিব বোল্ড করেন রেগিস চাকাভাকে। চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে আক্রমণে এসেই শফিউল ইসলাম ফিরিয়ে দেন শন উইলিয়ামসকে। 

দলীয় ৩ রানেই তিন উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। ইনিংসের সপ্তম ওভারে সাকিব আক্রমণে আনেন অভিষিক্ত লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলামকে। নিজের তৃতীয় বলেই এই লেগি ফিরিয়ে দেন মুতুমবোদজিকে। আরেক অভিষিক্ত নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে ধড়া পড়ার আগে মুতুমবোদজি করেন ১১ রান। দলীয় ৩৫ রানের মাথায় চতুর্থ উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। ইনিংসের অষ্টম ওভারে আবারো উইকেট তুলে নেন শফিউল ইসলাম। নিজের দ্বিতীয় শিকারে বোল্ড করেন ১ রান করা রায়ান বার্লকে। এক প্রান্ত ধরে খেলতে থাকেন জিম্বাবুয়ের দলপতি এবং ওপেনার হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। ইনিংসের নবম আর নিজের দ্বিতীয় ওভারে এসে আবারো আঘাত হানেন আমিনুল। এবার এলবির ফাঁদে ফেলেন মাসাকাদজাকে। বিদায়ের আগে তিনি ২৫ বলে তিন বাউন্ডারিতে তিনি করেন ২৫ রান।

দলীয় ৪৪ রানের মাথায় জিম্বাবুয়ে ষষ্ঠ উইকেট হারায়। দলীয় ৬৬ রানের মাথায় রানআউট হয়ে ফেরেন নেভিল মাদজিভা (১৫ বলে ৯ রান)। এরপর কাইল জারভিসকে নিয়ে টি-টোয়েন্টির প্রথম ফিফটি তুলে নেন রিচমন্ড মুতুম্বামি। ইনিংসের ১৯তম ওভারে ৫৮ রানের জুটি ভাঙেন শফিউল। নিজের তৃতীয় শিকার তুলে নিতে ফেরার ফিফটি হাঁকানো মুতুম্বামিকে। বিদায়ের আগে তিনি করেন ৩২ বলে চারটি চার আর তিনটি ছক্কায় ৫৪ রান। 

শেষ ওভারে মোস্তাফিজের শিকারে ফেরেন ২০ বলে দুই ছক্কা আর একটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ২৭ রান করা কাইল জারভিস। আর এই উইকেট নেওয়ার মধ্যদিয়ে মোস্তাফিজ টি-টোয়েন্টিতে ৫০ উইকেটের মালিক হন। ইনিংসে শেষ বলে ফিজ বোল্ড করেন আনিসলে এনভুকে। অভিষিক্ত লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম ৪ ওভারে ১৮ রান দিয়ে তুলে নেন দুটি উইকেট। সাকিব ৪ ওভারে ২৮ রান দিয়ে নেন একটি উইকেট। নিজের শেষ ওভারে দুটি ছক্কা আর একটি চার হজম করেন সাকিব। ৪ ওভারে মাত্র ১৪ রান দিয়ে একটি উইকেট তুলে নেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। শফিউল ৪ ওভারে ৩৬ রান দিয়ে নেন তিনটি উইকেট। মোস্তাফিজ ৪ ওভারে ৩০ রান দিয়ে দুটি উইকেট পান।

বাংলাদেশ একাদশ: নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন দাস, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোসাদ্দেক হোসেন, আফিফ হোসেন, আমিনুল ইসলাম, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, শফিউল ইসলাম এবং মোস্তাফিজুর রহমান।

জিম্বাবুয়ে একাদশ: ব্রেন্ডন টেইলর, হ্যামিল্টন মাসাকাদজা, রিচমন্ড মুতুম্বামি, শন উইলিয়ামস, টিনোটেন্ডা মুতুমবোদজি, রায়ান বার্ল, রেগিস চাকাভা, নেভিল মাদজিভা, কাইল জারভিস, আনিসলে এনভু এবং ক্রিস এমপফু।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!