• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

জীবন কাটল লন্ডনে, এখন ঢাকার বৃদ্ধাশ্রমে


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ১৯, ২০১৯, ০৪:২৩ পিএম
জীবন কাটল লন্ডনে, এখন ঢাকার বৃদ্ধাশ্রমে

ঢাকা: বৃদ্ধাশ্রমে থাকা মায়েদের কত গল্পই তো শুনেছেন, পড়েছেন। এবার এই মায়ের গল্পটা শুনে বিশ্বাস করতেই কঠিন হয়ে পড়বে।ষাটোর্ধ্ব সালেমা আমজাদ। তাঁর জন্ম যুক্তরাজ্যের লন্ডনে। শৈশব, কৈশোর থেকে শুরু করে পড়ালেখা বেড়ে উঠা সবটাই ওই শহরে। 

পরে বিয়ে, চার সন্তানের জননী হওয়া; সেও ওই লন্ডনে। জীবনের দীর্ঘ সময় স্বামী আর চার ছেলে-মেয়ে নিয়ে সুখ-স্বাচ্ছ্যন্দময় জীবন কাটিয়েছেন সালেমা। কিন্তু জীবন চিরকাল একই রকম থাকেনি সালেমার জন্য। সন্তানরা ক্রমে বড় হয়ে উচ্চ শিক্ষা নিয়ে একপর্যায়ে খুব ভালো ভালো কাজের সুযোগ পান। 

চাকরিবাকরি, সংসার, সন্তানসহ নিজেদের মতো গুছিয়ে ফেলেন যার যার জীবন। শুধু তাদের কারো পরিবারেই জায়গা হয়নি বয়স্ক মা সালেমার। ছেলেমেয়ে সবার কাছেই তিনি থেকে গেছেন উপেক্ষিত।

একপর্যায়ে ক্ষোভে, দুঃখে, অভিমানে লন্ডনের উন্নত জীবন ছেড়ে শূন্যহাতে চলে আসেন বাংলাদেশে বাবার জন্মভিটা খুলনায়। সেখানেও খুঁজে পাননি কোনো স্বজন। শেষমেশ ফরিদপুরের এক সাংবাদিকের সহায়তায় ঠাঁই হয় রাজধানীর কল্যাণপুরের চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড কেয়ার সেন্টারে। আড়াই বছর ধরে সেখানেই কাটছে তাঁর দিন।

চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড কেয়ার সেন্টারে গিয়ে এ রকম অর্ধশতাধিক বৃদ্ধ মা-বাবার খোঁজ মেলে। তাঁদের অনেকেই বিভিন্ন সময় রাষ্ট্র ও সমাজের নানান গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। দেখা মিলল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরও। সাবেক পুলিশ কর্মকর্তার এক স্ত্রীকে দেখা গেল বিছানায় শুয়ে কাঁদছেন আর চোখের পানি মুছছেন। জীবনের সবকিছু উজাড় করে তারা একদিন নিজেদের সন্তানদের পড়ালেখা শিখিয়ে দেশ-বিদেশে প্রতিষ্ঠিত করেছেন, আর আজ ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে উপেক্ষিত তাদের আশ্রয় হয়েছে এই বৃদ্ধাশ্রমে।

কল্যাণপুরের খান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের সামনে বৃদ্ধাশ্রমটির গেট গলে ভেতরে ঢুকে দেখা গেল, টেবিলে বসে আনমনে কাজ করছেন মাঝ বয়সী এক লোক। তিনি মিল্টন সমাদ্দার, এ বৃদ্ধাশ্রমের চেয়ারম্যান। নিজের উদ্যোগেই গড়ে তুলেছেন প্রতিষ্ঠানটি। তাঁর সঙ্গে কথা শুরু করার কিছুক্ষণ পরই সেখানে হাজির হন সালেমা আমজাদ।

সোনালীনিউজ/এইচএন

Wordbridge School
Link copied!