• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০
করোনার ভুয়া রিপোর্ট দিতো জেকেজি

জেকেজির সিইও আরিফুলের ক্ষমতার উৎস চতুর্থ স্ত্রী


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ২৮, ২০২০, ০৫:৩৮ পিএম
জেকেজির সিইও আরিফুলের ক্ষমতার উৎস চতুর্থ স্ত্রী

ঢাকা : অনুমোদন ছাড়াই বাসায় গিয়ে নমুনা সংগ্রহ ও ভুয়া নমুনা রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগে আটক জেকেজি হেলথ কেয়ারের সিইও আরিফুল হক চৌধুরীর সব দাপটের উৎস ছিলেন চতুর্থ স্ত্রী ডা. সাবরিনা চৌধুরী।

অবৈধ কর্মকাণ্ড চালাতে বাঁধা পেলে কথায় কথায় তিনি দিতেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের হুমকি আর উচ্চপদস্থদের রেফারেন্স। তার সব অপকর্মের স্বাক্ষী চতুর্থ স্ত্রী ডা. সাবরিনা। সরকারি চাকরিজীবী হয়েও নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা করেননি তিনিও। যদিও স্বার্থের সংঘাতে জড়িয়ে ডা. সাবরিনা এখন স্বামীর বিরুদ্ধে কথা বলছেন।

ওভাল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও জেকেজির সিইও আরিফুল হক চৌধুরীর স্ত্রী ডা. সাবরিনা চৌধুরী দাবি করেছেন, আদর্শের সঙ্গে না মেলায় এক মাসে আগে তিনি জেকেজি ছেড়ে চলে এসেছেন। বিষয়টি তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককেও জানিয়েছেন। এরপর আরিফুল হক চৌধুরী একদিন তার হাসপাতালে (জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট) এসে ঝামেলা করলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং তিনি নিজে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। এখন তিনি তাঁর বাবার বাসায় অবস্থান করছেন।

আরিফুলের বিরুদ্ধে পরীক্ষা ছাড়াই করোনা শনাক্তের ফল দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই। যে দুটি প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বাসা থেকে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করা হতো, সে দুটি প্ল্যাটফর্মের বিষয়েও তিনি কিছু জানেন না বলে দাবি করেন।

দুই দিনের রিমান্ড শেষে জেকেজির সিইও আরিফুল হক চৌধুরী, সাঈদ চৌধুরী, বিপ্লব দাস ও মামুনুর রশীদকে আদালতে হাজির করা হলে শনিবার ঢাকা মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু সাঈদ তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগে এ মামলার অন্য দুই আসামি হুমায়ুন কবির ও তার স্ত্রী তানজীনা পাটোয়ারী আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। এরপর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

গত ২৩ জুন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত তেঁজগাও এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৬ জনকে আটক করা হয়। তারা হলেন হুমায়ুন কবির ও তার স্ত্রী তানজীনা পাটোয়ারী, জেকেজির সিইও আরিফুল হক চৌধুরী, সাঈদ চৌধুরী, বিপ্লব দাস ও মামুনুর রশীদ। এই ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে তেঁজগাও থানায় মামলা দায়ের করা হয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়, হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে নেতৃত্বে চক্রটি রাজধানীর বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে করোনার পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে ভুয়া রিপোর্ট দিতেন।

প্রতারণার অভিযোগ গ্রেফতার আরিফুল চৌধুরীকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের সময় পুলিশের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছেন বলে জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (তেজগাঁও থানার এসআই) দেওয়ান মো. সবুর। পুলিশের কাছে মাদকদ্রব্য ইয়াবাও চেয়েছেন গ্রেফতার হওয়া জেকেজি হেলথকেয়ার নামে পরিচিত প্রতিষ্ঠানের এই সিইও। হাজতখানায় থাকা অন্য আসামিদের সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করেন তিনি। হাজতখানার লাইট ভেঙে ফেলেন। ছিড়ে ফেলেন সিসি ক্যামেরার তার।

দেশে করোনার প্রকোপ শুরুহওয়ার পর পরই এলাকা ভিত্তিক ফ্রি করোনার নমুনা সংগ্রহের দায়িত্ব পায় জেকেজি হেলথ কেয়ার। কর্মীদের প্রশিক্ষণ ও তার কর্মকাণ্ডের জন্য বেছে নেয় সরকারী তিতুমির কলেজ। প্রশিক্ষণের নামে কলেজ ক্যাম্পাসে সারারাত পার্টি করা নিয়ে কলেজের স্টাফদের পিটিয়ে রক্তাক্ত করার ঘটনাও ঘটায় জেকেজি গ্রুপের কর্মচারীরা।

অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ১৩ জুন অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানার কাছে ১৩ হাজার পিস পিপিইর চাহিদা নিয়ে যান জেকেজির সিইও আরিফুল চৌধুরী। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত হয় ৭ টি বুথের বিপরীতে ১৪টি পিপিই বরাদ্দ দেওয়া হবে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নাসিমা সুলতানাকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেন আরিফ। নাসিমা সুলতানা এ বিষয়ে কিছু না বললেও অস্বীকার করেননি ঘটনাটা।

আরিফুলের এসব হুমকি ধামকির পেছনে ছিল চতুর্থ স্ত্রী’ ডা. সাবরিনা চৌধুরী। হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের রেজিস্টার্ড চিকিৎসক হয়ে তিনি ছিলেন জেকেজি হেলথ কেয়ারের কথিত চেয়ারম্যান। স্বামীর প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দিতে নানা অনৈতিক উপায় অবলম্বনের অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে। এতে নাম এসেছে বিএমএর আরেক বড় নেতারও।

সরকারের অনেক উচ্চপদস্থদের সঙ্গে উঠাবসার সুবিধা নিতো এই দম্পতি। তাদের সঙ্গে তোলা ছবিকেও অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতেন তারা। তবে জুনের শুরু থেকে আরিফুলের সঙ্গে মনোমালিন্যর পর দুরত্ব শুরু হয় দুজনের।

পুলিশ জানিয়েছে, আরো বিস্তৃতি পরিসরে এই চক্রের প্রতারণ ও দুর্নীতি ধরার জন্য মাঠে নামবে তারা। তারা বের করার চেষ্টা করছে এদের সঙ্গে আর কে কে জড়িত। পুলিশ বলেছে, গ্রেপ্তারের পর আরো অন্তত ৩ জন নারী আরিফুলের স্ত্রী দাবি করে নানা অভিযোগ করেছেন।

ভয়ংকর করোনা প্রতারক আরিফ চৌধুরী পুলিশের কাছে চায় ইয়াবা : রোনা টেস্টের নামে মানুষের কাছ থেকে নমুনা নিতেন। তা পরীক্ষা না করেই দিতেন ভুয়া রিপোর্ট। বিষয়টি ধরা পড়লে গ্রেপ্তার হন জেকেজি হেলথ কেয়ারের সিইও আরিফুল চৌধুরী।

এরপর থেকে বেরিয়ে আসছে তার নানা কাহিনী। গ্রেপ্তারের পর লোক ডেকে, থানায় হামলা চালান তিনি। ভেঙেছেন থানার সিসিক্যামেরা। নেশার জন্য পুলিশ সদস্যদের কাছে চান ইয়াবা। করোনার ভুয়া রিপোর্টের বিষয়ে কয়েকজন স্বীকারও করেছেন বলে দাবি, পুলিশের।

অনুমতি না থাকার পরও মানুষের বাসায় গিয়ে টাকার বিনিময়ে করোনার স্যাম্পল নিতো তারা। পরে রাস্তায় নমুনা ফেলে দিয়ে বানোয়াট রিপোর্ট দিতো মানুষকে। এ ঘটনায় গত ২৩ জুন ওভাল গ্রুপের প্রতিষ্ঠান জেকেজি হেলথ কেয়ারের প্রধান নির্বাহী আরিফুল চৌধুরীসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ওই দিন সন্ধ্যায় তেজগাঁও থানায় হামলা চালায় আরিফুল চৌধুরীর সহযোগীরা। লাঞ্ছিত করে দায়িত্বরত পুলিশকে, ভাংচুর করে সরকারি সম্পত্তি। সেই আরিফুল চৌধুরী, আবু সাঈদ ও হুমায়ূন কবীররা উস্কানি দেয় সে হামলায়। থানার সিসি ক্যামেরার ফুটেজে মিলেছে এসব দৃশ্য।

তবে আরো ভয়ংকর তথ্য হচ্ছে, নেশাগ্রস্ত আরিফ পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় ভাংচুর করেছেন থানার ভেতর। ভেঙ্গেছেন সিসি ক্যামেরা, ফ্যানসহ প্রায় ৩০ হাজার টাকার সরকারি সম্পদ। এমনকি নেশা করতে ইয়াবাও চান পুলিশ সদস্যদের কাছে।

ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ৪৪টি নমুনা সংগ্রহ বুথ ছিলো জেকেজি হেলথ কেয়ারের। মঙ্গলবার জালিয়াতি সামনে আসার পর থেকেই বুথ ফেলে রেখে পালিয়ে যায় তারা। রাজধানীল মহাখালির তিতুমীর কলেজে গিয়ে দেখা মেলে পরিত্যক্ষ এসব বুথের। অশ্লীলতা, মাদকসহ বিভিন্ন অনিয়মের প্রতিবাদ করায়, এ মাসের শুরুতে তিতুমীর কলেজের স্টাফদের ওপর হামলা করেছিলো জেকেজির লোকজন। তারা বলছেন, করোনা পরীক্ষার কারণেই সুবিধা পেতো আরিফুলরা।

রাজধানীর সবুজবাগের বুথেও হাতে লেখা নোটিশ দিয়ে বন্ধ হয়েছে জেকেজির নমুনা সংগ্রহ। প্রশ্ন হলো, যারা এরই মধ্যে নমুনা দিয়েছেন, তাদের কি হবে?

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কেউ আরিফুলদের সহযোগিতা করতো কিনা সে ব্যাপারেও খোঁজ খবর নিচ্ছে পুলিশ।

সব ফেলে গা ঢাকা দিয়েছে তারা : ফোন করলেই বাসায় গিয়ে সংগ্রহ করা হতো করোনার নমুনা। এর বিনিময়ে দিতে হতো ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। কিন্তু নমুনার কোনও পরীক্ষা ছাড়াই একদিন পরই মনগড়া ফল দিয়ে দিতো। করোনা উপসর্গে ভোগা মানুষদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলে এভাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে জোবেদা খাতুন সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা (জেকেজি হেলথ কেয়ার)।

বিনামূল্যে নমুনা সংগ্রহের জন্য ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের পৃথক ছয়টি স্থানে ৪৪টি বুথ স্থাপন করে প্রতিষ্ঠানটি। এসব এলাকা থেকে প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হতো। শর্ত ছিল-সরকার নির্ধারিত ল্যাবরেটরিতে নমুনা পাঠাতে হবে; কিন্তু হেলথ কেয়ার ওভাল গ্রুপের অঙ্গসংগঠন জেকেজি সব শর্ত ভেঙে পরীক্ষা ছাড়াই করোনার ভুয়া টেস্ট রিপোর্ট সরবরাহের ফাঁদ পাতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। নিজস্ব কর্মীবাহিনী ছাড়াও সিন্ডিকেটে যোগ করে দালালচক্র।

এদিকে জেকেজির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আরিফুল হক চৌধুরীর গ্রেপ্তারের খবরে প্রতিষ্ঠানটির কর্মীবাহিনী গা ঢাকা দিয়েছে।

করোনাঘিরে প্রতারণার সিন্ডিকেট গড়ে জেকেজি। একে আগলে রাখতে তৈরি করেছিল শক্তিশালী ক্যাডার বাহিনী। যেখানে যেখানে বুথ স্থাপন করে, সেখানেই তারা এই ক্যাডার বাহিনী দিয়ে কায়েম করে ত্রাসের রাজত্ব। এমনকি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের হুমকি দিয়ে নিজেদের অনৈতিক কাজ করিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল জেকেজি হেলথ কেয়ার। তাদের অনৈতিক কর্মকাণ্ডে সাড়া না দেওয়ায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুর্বব্যহারও করতেন প্রতিষ্ঠানটির সিইও আরিফ চৌধুরী। অবশেষে শেষরক্ষা হয়নি।

ভুয়া রিপোর্ট সরবরাহসহ বেশ কিছু অভিযোগে গত মঙ্গলবার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন আরিফুলসহ পাঁচজন। গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন- হুমায়ুন কবীর, তার স্ত্রী তানজীনা পাটোয়ারী এবং সাইদ চৌধুরী ও আলমান। তাদের মধ্যে হুমায়ুন ও তানজীনা কিছুদিন আগে জেকেজি থেকে বেরিয়ে এসে নিজেরাই নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা ছাড়াই ফল দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছিলেন বেশুমার টাকা। বাকি দু’জন গ্রেপ্তারের আগ পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন জেকেজিতেই।

এদিকে করোনা পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ ও টাকার বিনিময়ে পরীক্ষার রিপোর্ট প্রদানসহ একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে জেকেজি হেলথ কেয়ারকে দেওয়া কোভিড-১৯ সন্দেহভাজন রোগীর নমুনা সংগ্রহ, কেন্দ্র স্থাপন ও প্রশিক্ষণের সব অনুমতি বাতিল করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

গত বুধবার অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ নির্দেশ দেওয়া হয়। এর আগে নারায়ণগঞ্জে জেকেজির যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. ইমতিয়াজ আহমেদ।

বুধবার থেকে শহরের নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুল ও এমডব্লিউ স্কুলে জেকেজির নমুনা সংগ্রহের কার্যক্রম বন্ধের এই নির্দেশ দেওয়া হয়। জেকেজির সিইও গ্রেপ্তারের পরই গ্রাহকদের অভিযোগ আমলে নিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানান সিভিল সার্জন ডা. ইমতিয়াজ আহমেদ।

জানা গেছে, এপ্রিল মাসে কোভিড-১৯ নমুনা পরীক্ষার জন্য অনুমতি পায় জেকেজি হেলথ কেয়ার। নমুনা পরীক্ষায় টেকনোলজিস্ট ও স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণের জন্য তাদের রাজধানীর তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে প্রশিক্ষণকেন্দ্র স্থাপনের জায়গা করে দেওয়া হয়। এর পর কলেজ ক্যাম্পাসে করোনা বুথ স্থাপন ও ক্যাম্প করে নমুনা সংগ্রহের কাজ শুরু করে জেকেজি হেলথ কেয়ারের প্রায় ২০০ কর্মী।

গত মঙ্গলবার প্রতিষ্ঠানটির সিইও গ্রেপ্তারের পর তিতুমীর কলেজে বুথসহ সব কিছু ফেলে গোপনে গাঢাকা দিয়েছেন তারা। কলেজটিতে মাস্ক, গ্লাভস, পিপিই, ব্যবহৃত জামা-কাপড়সহ করোনা পরীক্ষাসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন উপকরণ ফেলে প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা পালিয়ে গেছেন বলে কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাষ্য।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বনানী থানাপুলিশসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিতভাবে জানিয়েছেন তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ আশরাফ হোসেন।

তিনি বলেন, কলেজ ক্যাম্পাসে জেকেজি হেলথ কেয়ারের প্রায় দুইশ কর্মী অবস্থান করেছিলেন। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা গ্রেপ্তারের রাতে কলেজের কাউকে কিছু না জানিয়েই তারা পালিয়ে যায়। গত মঙ্গলবার রাত থেকে প্রতিষ্ঠানটির এক কর্মীরও দেখা মেলেনি। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে অবহিত করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সরকারি তিতুমীর কলেজ শাখার সহসভাপতি এসএম জাকির হোসেন (রাষ্ট্রবিজ্ঞানের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী) জানান, করোনা পরীক্ষার নামে জেকেজি হেলথকেয়ারের কর্মীরা ছাড়াও তাদের পালিত সন্ত্রাসীরা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল কলেজ ক্যাম্পাসে। রাতে ক্যাম্পাসের মধ্যেই মদ ও নারী নিয়ে আসর জমাত তারা। প্রতিবাদ করলে তাদের হামলার শিকার হয়েছেন নিরীহ নিরাপত্তাকর্মীরাসহ অনেকেই।

গত সপ্তাহে জাকির হোসেন তার মার্কশিট নিতে নিজ কলেজে গেলেও তাকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। পড়তে হয় নানা জেরার মুখে। প্রতিবাদ করলে মারমুখী ভূমিকায় অবতীর্ণ হন জেকেজির সদস্যরা।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!