ঢাকা : ঈদুল আজহা উপলক্ষে আদালত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জামিন না পেয়ে কারাগারেই ঈদ কাটান গ্রেফতার আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি।
এদিকে বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় গ্রেফতার মিন্নির জামিন চেয়ে আবারও হাইকোর্টে আবেদন জানানো হয়েছে।
রোববার (১৮ আগস্ট) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদনটি জানান জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না।
আবেদনটির ওপর সোমবার (১৯ আগস্ট) শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
চাঞ্চল্যকর রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় নিহতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে গত ১৬ জুলাই সকাল পৌনে ১০টার দিকে তার বাবার বাড়ি বরগুনা পৌর শহরের নয়াকাটা-মাইঠা থেকে পুলিশ লাইনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে আনা হয়। এরপর দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাত ৯টায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
পর দিন মিন্নিকে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এরপর বরগুনার আদালতে মিন্নির জামিন আবেদন জানালেও তার জামিন মেলেনি। নিম্ন আদালতে ব্যর্থ হয়ে হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন মিন্নির আইনজীবীরা। এবার হাইকোর্টেও মিন্নির জামিন করাতে পারলেন না তার আইনজীবীরা।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মিন্নির জামিন মেলেনি। হাইকোর্ট বলেছেন, বরগুনার আদালতে মিন্নি যে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন সেটি না দেখে, পর্যালোচনা না করে জামিন দিতে পারছি না। তবে আমরা জামিন বিষয়ে রুল দিতে পারি। রুল নিতে না চাইলে আপনারা (মিন্নির আইনজীবীদের উদ্দেশে) আবেদন ফেরত নিতে পারেন।
তখন মিন্নির জামিন আবেদন ফেরত নিতে আইনজীবী আদালতের কাছে আবেদন করেন। আদালত তখন রুল না দিয়ে জামিন আবেদনটি ফেরত দেন।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এর আগে মিন্নির জামিন আবেদনের ওপর ১ ঘণ্টা শুনানি হয়।
আদালতে মিন্নির পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না ও ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোমতাজ উদ্দিন ফকির।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে ওইদিন অফিস সময়ের পর শুরু হয় সরকারি ছুটি। সে হিসেবে ঈদের আগে ওইদিনই ছিল আদালতের শেষ কর্মদিবস। ওইদিন জামিন না পাওয়ায় তাই কারাগারেই ঈদ কাটাতে হয়েছে মিন্নিকে।
বরগুনা সরকারি কলেজের মূল ফটকের সামনের রাস্তায় ২৬ জুন সকাল ১০টার দিকে স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির সামনে কুপিয়ে জখম করা হয় রিফাত শরীফকে। বিকাল ৪টায় বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
এ হত্যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়। পরে দ্বিতীয় একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে হত্যায় মিন্নির সম্পৃক্ততা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
২৭ জুন রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বরগুনা থানায় ১২ জনের নামে এবং চার-পাঁচজনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেন। প্রধান আসামি নয়ন বন্ড ২ জুলাই ভোরে পুলিশের সঙ্গে কথিত 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত হয়।
সোনালীনিউজ/এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :