• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

জোট ও ঐক্যফ্রন্টের চূড়ান্ত মনোনয়ন পেলেন যারা


নিজস্ব প্রতিবেদক ডিসেম্বর ৯, ২০১৮, ০৩:১৯ পিএম
জোট ও ঐক্যফ্রন্টের চূড়ান্ত মনোনয়ন পেলেন যারা

ঢাকা: আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিকদের ৫৭টি আসনে ছাড় দিয়েছে বিএনপি। এর মধ্যে ২০ দলীয় জোটের শরিকদের ৩৮টি এবং ঐক্যফ্রন্টকে ১৯টি আসন দেয়া হয়েছে।

শনিবার রাতে এ সংক্রান্ত চিঠি শরিক ও ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের হাতে তুলে দেয়া হয়।

বিএনপিকে নিয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের প্রার্থীরা ‘ধানের শীষ’ প্রতীকে এবারের নির্বাচনে লড়বেন। শুধু এলডিপির চেয়ারম্যান অলি আহমদ নিজ দলের ‘ছাতা’ প্রতীকে ভোট করবেন।

জানা গেছে, ২০ দলীয় শরিকদের মধ্যে জামায়াতে ইসলামীকে ২২টি, এলডিপিকে ৫, জাতীয় পার্টি (জাফর) ২, বিজেপি ১, এনপিপি ১, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি ১, খেলাফত মজলিস ২, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম ৩, পিপলস পার্টি অব বাংলাদেশ ১টিসহ মোট ৩৮টি আসন দেয়া হয়েছে।

পাশাপাশি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে ১৯টি আসন ছাড় দেয়া হয়। এর মধ্যে গণফোরাম ৬, জেএসডি ৫, নাগরিক ঐক্য ৫ ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগকে ৩টি আসন ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তবে এখনও গণফোরামের সঙ্গে কয়েকটি আসন নিয়ে দরকাষাকষি চলছে।

শনিবার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের নেতাদের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি নিয়ে দিনভর বৈঠক করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সিনিয়র নেতারা।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শরিক গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু রাতে গুলশানের কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের বলেন, আসন বণ্টন নিয়ে আমাদের মধ্যে কোনো সমস্যা নেই।

আমরা বলেছি, যারা জনপ্রিয় ও যোগ্য তাদেরই আসন দেয়া হোক। এর আগে শুক্রবার বিএনপি ২০৬ জনের দলীয় মনোনয়ন তালিকা প্রকাশ করে। শনিবার বিকালে বাকি আসনগুলোর প্রার্থীর নাম ঘোষণা শুরু করে দলটি।

কিন্তু মনোনয়নবঞ্চিতরা একপর্যায়ে দলের কার্যালয়ে ইটপাটকেলে নিক্ষেপ করে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করে। এমন পরিস্থিতিতে রাত ৮টার দিকে চূড়ান্ত প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দের চিঠি দেয়ার কার্যক্রম স্থগিত করে দেয়া হয়।

এদিকে রাতেই খালেদা জিয়ার বগুড়া-৬ আসনে বিকল্প প্রার্থী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বগুড়া-৭ আসনে মোরশেদ মিল্টন, ফেনী-১ আসনে রফিকুল আলম মজনু প্রতীক বরাদ্দের চিঠি নিয়েছেন।

২০ দল-
বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিকরা যেসব আসন পেয়েছে সেগুলো হল- এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ (চট্টগ্রাম-১৪), দলের মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ (কুমিল্লা-৭), সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম (লক্ষ্মীপুর-১), চট্টগ্রাম-৭ নুরুল আলম, ময়মনসিংহ-১০ আসনে সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ। বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ (ঢাকা-১৭), কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিমের (চট্টগ্রাম-৫), মশিউর রহমান যাদু মিয়ার মেয়ে পিপলস পার্টি অব বাংলাদেশের রিটা রহমান (রংপুর-৩), জমিয়তে ওলামায়ের মুফতি মোহাম্মদ ওয়াক্কাস (যশোর-৫), এনপিপির সভাপতি ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ (নড়াইল-২)।

জাপা (জাফর) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ড. টিআই ফজলে রাব্বী (গাইবান্ধা-৩), সদস্য আহসান হাবীব লিঙ্কন (কুষ্টিয়া-২)। খেলাফত মজলিশ : হবিগঞ্জ-৪ আসনে আহমেদ আবদুল কাদের ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে মুফতি মুনির হোসেন।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম :
সুনামগঞ্জ-৩ আসনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামীর শাহিনুর পাশা, হবিগঞ্জ-২ আসনে আবদুল বাসিদ আজাদ, যশোর-৫ আসনে মুফতি মোহাম্মদ ওয়াক্কাস।

জামায়াত :
নিবন্ধন হারানো এ দলটিকে ২৫টি আসন ছেড়েছিল বিএনপি। কিন্তু শনিবার রাতে ২২ আসনে প্রতীক বরাদ্দের চিঠি দেয়। এতে ক্ষুব্ধ জামায়াত নেতারা হুমকি দেন, প্রতিশ্রুত আসন না দিলে তারা ‘ভিন্ন চিন্তা’ করতে বাধ্য হবেন। চিঠি পেয়েছেন দিনাজপুর-১ মোহাম্মদ হানিফ, দিনাজপুর-৬ মোহাম্মদ আনোয়ারুল ইসলাম, নীলফামারী-২ মনিরুজ্জামান মন্টু, নীলফামারী-৩ মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম, গাইবান্ধা-১ মাজেদুর রহমান সরকার, সিরাজগঞ্জ-৪ মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, পাবনা-৫ মাওলানা ইকবাল হুসাইন, ঝিনাইদহ-৩ অধ্যাপক মতিয়ার রহমান, যশোর-২ আবু সাঈদ মুহাম্মদ শাহাদাত হোসাইন, বাগেরহাট-৩ অ্যাডভোকেট আবদুল ওয়াদুদ, বাগেরহাট-৪ অধ্যাপক আবদুল আলীম, খুলনা-৫ অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, খুলনা-৬ মাওলানা আবুল কালাম আযাদ, সাতক্ষীরা-২ মুহাদ্দিস আবদুল খালেক, সাতক্ষীরা-৩ মুফতি রবিউল বাশার, সাতক্ষীরা-৪ গাজী নজরুল ইসলাম, পিরোজপুর-১ শামীম সাঈদী, ঢাকা-১৫ ডা. শফিকুর রহমান, সিলেট-৬ মাওলানা হাবিবুর রহমান, কুমিল্লা-১১ ডা. আবদুল্লাহ মো. তাহের, চট্টগ্রাম ১৫ আ ন ম শামসুল ইসলাম ও কক্সবাজার-২ হামিদুর রহমান আযাদ।

ঐক্যফ্রন্ট :
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিকদের ১৯ আসনে ছাড় দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে গণফোরামকে ৬টি আসন দেয়া হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- ঢাকা-৭ আসনে মোস্তফা মহসিন মন্টু, ময়মনসিংহ-৮ আসনে এএইচএম খালিকুজ্জামান, হবিগঞ্জ-২ আসনে রেজা কিবরিয়া, পাবনা-১ আসনে অধ্যাপক আবু সাইদ, কুড়িগ্রাম-৫ আসনে আমছা আমিন, মৌলভীবাজার-২ সুলতান মোহাম্মদ মনসুর।

জেএসডির আসনগুলো হচ্ছে:
দলটির সভাপতি আ স ম আবদুর রব (লক্ষ্মীপুর-৪), শরিফউদ্দিন মাহমুদ স্বপন (ঢাকা-১৮), আবদুল মালেক রতন (কুমিল্লা-৪)। সাইফুল ইসলাম (কিশোরগঞ্জ-৩), নুরুল ইসলাম মাল (শরীয়তপুর-১), নাগরিক ঐক্যকে ৪টি আসন দেয়া হয়েছে, এগুলো হলো মাহমুদুর রহমান মান্না (বগুড়া-২), এসএম আকরাম (নারায়ণগঞ্জ-৫), মোফাখরুল ইসলাম (রংপুর-৫), শাহ রহমতউল্লাহ (রংপুর-১), নুরুর রহমান জাহাঙ্গীর (বরিশাল-৪)। কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রেসিডেন্ট বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর মেয়ে কুঁড়ি সিদ্দিকী (টাঙ্গাইল-৮), টাঙ্গাইল-৪ আসনে রফিকুল ইসলাম ও গাজীপুর-৩ আসনে ইকবাল সিদ্দিকী।

বিএনপির আরও যারা ধানের শীষ পেলেন :
শনিবার বিএনপির বাকি আসনগুলোতে ধানের শীষের প্রতীক বরাদ্দের চিঠি হস্তান্তর শুরু হয়। কয়েকটি ঘোষণার পর তা স্থগিত করা হয়।

যারা ‘ধানের শীষ’ প্রতীকে চিঠি পেয়েছেন তারা হলেন :
গাইবান্ধা-২ আবদুর রশীদ সরকার, পটুয়াখালী-২ শহীদুল আলম তালুকদার, নারায়ণগঞ্জ-১ কাজী মুনীর, ময়মনসিংহ-১ আলী আজগর, কুমিল্লা-৬ হাজী আমিন-উর রশীদ ইয়াসিন, জামালপুর-১ রশীদুজ্জামান মিল্লাত, সিলেট-১ খন্দকার আবদুল মুক্তাদির, নেত্রকোনা-৫ আবু তাহের তালুকদার, চাঁদপুর-৩ শেখ ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, বরগুনা-২ খন্দকার মাহবুব হোসেন, ফয়সাল আহমেদ চৌধুরী (সিলেট-৬)।

শুক্রবার ঘোষিত তালিকায় একজনের প্রার্থিতা পরিবর্তন করা হয়েছে। ময়মনসিংহ-৩ আসনে ইঞ্জিনিয়ার এম ইকবাল হোসেনকে মনোনয়ন দেয়া হয়।


সোনালীনিউজ/আকন

Wordbridge School
Link copied!