• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঝিনাইগাতির সেই ভিক্ষুককে সুসংবাদ দিলেন প্রধানমন্ত্রী


শেরপুর প্রতিনিধি এপ্রিল ২২, ২০২০, ১২:৪২ পিএম
ঝিনাইগাতির সেই ভিক্ষুককে সুসংবাদ দিলেন প্রধানমন্ত্রী

শেরপুর : নিজের বাড়ি মেরামতের জন্য দুই বছরে ভিক্ষা করে জমিয়েছিলেন ১০ হাজার টাকা। কিন্তু সেই টাকা বাড়ি মেরামতের কাজে লাগাননি ভিক্ষুক নজিমুদ্দিন (৮০)। বরং প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে ঘরবন্দী হওয়া কর্মহীনদের খাদ্য সহায়তায় দান করেছেন সেই অর্থ। 

মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এ ঘটনায় তাকে নিয়ে প্রচারিত সংবাদটি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসে। এরপরই ওই ভিক্ষুককে ঘর তুলে দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সব নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা।

এবিষয়ে শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল মাহমুদকে ফোন দেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিব। সেই নির্দেশ অনুযায়ী, রাতেই ভিক্ষুক নজিমুদ্দিনের বাড়ি যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। ভিক্ষুকের ঘরের বর্ণনা দিয়ে রুবেল মাহমুদ বলেন, জীর্ণ ভাঙ্গা ঘর তার। এখনো কুপি বাতি দিয়ে চলে।

রাতের মধ্যেই ঘর তৈরির বিষয়ে সম্ভাব্য সব তথ্য তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তিনি বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় সরকার প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেবে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ঘরবন্দী হওয়া কর্মহীন মানুষদের সরকারি ও বেসরকারিভাবে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। গত রোববার ইউএনও রুবেল মামুদের নির্দেশে খাদ্য সহায়তার জন্য স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘দি প্যাসিফিক’ ক্লাবের সদস্য ও স্থানীয় ইউপি সদস্যরা কর্মহীন অসহায় দরিদ্রদের তালিকা প্রণয়নে গান্ধীগাঁও গ্রামে যান।

এ সময় ভিক্ষুক নজিমুদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে তাকে ইউএনর’র পক্ষ থেকে খাদ্যসামগ্রী দেওয়ার কথা বলে তার জাতীয় পরিচয়পত্র দেখতে চান তারা। পরে ভিক্ষুক ওই তালিকায় তার নাম না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। একই সঙ্গে তিনি জানান, নিজের বাড়ি মেরামতের জন্য দুই বছরে ভিক্ষা করে জমিয়েছেন ১০ হাজার টাকা। এ টাকা স্বেচ্ছায় বর্তমান পরিস্থিতিতে অসহায়দের খাদ্য দেওয়ার জন্য দান করবেন তিনি।

পরে মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে মালিঝিকান্দা ইউনিয়নের বাতিয়াগাঁও এলাকায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল মাহমুদের হাতে এ টাকা তুলে দেন ওই ভিক্ষুক।

এসময় ভিক্ষুক নজিমুদ্দিন গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে বলেন, ‘আমি ভিক্ষা করে খাইয়ে-খুইয়ে দুই বছরে এ টেহা জড়ো করছি। আমার ঘরডা ভাঙে গেছে গ্যা। এহন আর ঘর-দরজা দিলাম না। দশে এহন (মানুষ) কষ্ট করতাছে, আমি এ টেহ্যা ইউএনও সাহেবের হাতে দিলাম। দশেরে দিয়ে দেখ, খাইয়ে বাঁচুক।’

বিষয়টি হতবাক করে তোলে ইউএনও, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ উপস্থিত সবাইকে। পরে এ নিয়ে দেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম খবর প্রচার করলে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসে।

সোনালীনিউজ/এএস

Wordbridge School
Link copied!