• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

টাঙ্গাইল হানাদার মুক্ত দিবস আজ


ফরমান শেখ, টাঙ্গাইল ডিসেম্বর ১১, ২০১৮, ১২:০২ পিএম
টাঙ্গাইল হানাদার মুক্ত দিবস আজ

টাঙ্গাইল: আজ মঙ্গলবার। ঐতিহাসিক ১১ ডিসেম্বর। টাঙ্গাইল হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনে বাংলার দামাল সন্তানরা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কবল থেকে টাঙ্গাইল বাসীকে কে মুক্ত করে। উত্তোলন করা হয় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। জয় বাংলা স্লোগানে মুখোরিত হয় পুরো জেলা। মানুষ পায় মুক্তির স্বাদ। যুদ্ধকালীন সময়ে টাঙ্গাইলের অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসিকতাপূর্ণ যুদ্ধের কাহিনী দেশের সীমানা পার হয়ে বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছিল।

১৯৭১ সালের ৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণের পরপরই দেশ শত্রু মুক্ত করতে টাঙ্গাইলে গঠন করা হয় স্বাধীন বাংলা গণমুক্তি পরিষদ। এছাড়া কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে চলতে থাকে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ।

২৬ মার্চ গণ মুক্তি পরিষদের উদ্যোগে টাঙ্গাইল সদর থানায় স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করা হয়। ২৭ মার্চ বিন্দুবাসিনী সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত সভায় টাঙ্গাইলের স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়। ঐদিন রাতেই সার্কিট হাউজ আক্রমণ করে মুক্তিযোদ্ধারা। অতর্কিত এ আক্রমণে ২ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয় ও ১৫০ জন আত্মসমর্পন করে।

প্রথম আক্রমণে ব্যাপক সাফল্য পাওয়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস জন্মে। এরপর থেকেই গ্রামে গ্রামে যুবকরা সংগঠিত হতে থাকে। পাক বাহিনী ৩ এপ্রিল টাঙ্গাইল প্রবেশকালে মির্জাপুর উপজেলার গোড়ান-সাটিয়চড়া নামক স্থানে মুক্তি বাহিনী পাকিস্তানি বাহিনীকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে আক্রমণ করে। সেদিনের প্রতিরোধ যুদ্ধে ২৩ জন পাকসেনা নিহত হয়। এরপর স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় পাকবাহিনী পাল্টা আক্রমণ চালায় ঐ গ্রামে। এতে মুক্তিযোদ্ধা সহ ১০৭ জন বাঙ্গালী গণহত্যার শিকার হয়।

পাকবাহিনী টাঙ্গাইল শহরে প্রবেশ করলে মুক্তিযোদ্ধারা নিরাপদ স্থানে চলে আসে। তারা নতুন করে অস্ত্র সংগ্রহ ও সংগঠিত হতে থাকে। অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই মুক্তিযোদ্ধারা সংগঠিত হয়। শুরু হয় বিভিন্ন স্থানে হানাদার বাহিনীর সাথে একের পর এক যুদ্ধ। চারদিক থেকে আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী।

১০ ডিসেম্বর বিকেলে টাঙ্গাইল শহরের উত্তরে পৌলিতে ভারতীয় মিত্রবাহিনীর প্রায় ২ হাজার সেনা অবতরন করায় হানাদারদের মনোবল একেবারে ভেঙ্গে পড়ে। তারা ছুটতে থাকে ঢাকার দিকে। সেই রাতেই মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বর্তমানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রাজ্জাক এমপি টাঙ্গাইল থানা দখল করে সেখানে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন।

১১ ডিসেম্বর ভোর থেকেই মুক্তিযোদ্ধারা শহরে প্রবেশ করতে থাকেন এবং সারা শহর নিজেদের দখলে নিয়ে হানাদারদের ধরতে থাকেন। এভাবেই টাঙ্গাইল শহর সম্পূর্ণ হানাদার মুক্ত হয়। মুক্তির স্বাদ পেয়ে উল্লসিত মানুষ নেমে আসেন রাস্তায়। “জয় বাংলা” শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে টাঙ্গাইল শহর।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!